রবিবার, জুন ০৮, ২০২৫

ফিরে আসার গল্প — চূড়ান্ত প্রস্তাবিত সূচিপত্র

 


📜 ফিরে আসার গল্পচূড়ান্ত প্রস্তাবিত সূচিপত্র

(By Ariful Islam Bhuiyan — Arif Shams)


  •  

অধ্যায় : হারানো দিনের স্মৃতি

  1. হারানো সময়ের ছায়া
  2. ভালোবাসার ছেঁড়া পাতাগুলো
  3. বিদায়ের অশ্রুবিন্দু

অধ্যায় : একাকী পথিক

  1. পথ চলার একাকীত্ব
  2. ভগ্ন হৃদয়ের ডায়েরি
  3. নতুন করে গড়ার প্রত্যয়

অধ্যায় : আলোর সন্ধানে

  1. রবের আলোয় প্রথম ডাকি
  2. নামাজের সে রাত
  3. আত্মার মুকিতের আকাঙ্ক্ষা

অধ্যায় : সওগাতের যাত্রা

  1. আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি
  2. জীবনের শেষ তাওবা
  3. রবের নিকটের পথিক

অধ্যায় : ফিরে আসার দিনলিপি

  1. নতুন ভোরের প্রার্থনা
  2. স্মৃতির কাছে ক্ষমা
  3. এক নতুন সওগাত

অধ্যায় : আত্মার বন্ধনে

  1. কালিমার শক্তি
  2. নিজের সঙ্গে সন্ধি
  3. আল্লাহর প্রেমে হারানো এক আমি

অধ্যায় : অনন্তের পথচলা

  1. প্রতিদিনের তাওবা
  2. রবের ভালোবাসার গল্প
  3. শেষ দিনের প্রহর গোনা

সমাপ্তি: ফিরে আসার গল্পশেষ অনুরোধ

  • রবের করুণার অপেক্ষা
  • "ফিরে আসার গল্প" থেকে জীবনপাঠ
  • পাঠকের প্রতি একান্ত আহ্বান

ফিরে আসার গল্প — পূর্ণ সূচিপত্র (প্রস্তাবিত)

 


ফিরে আসার গল্পপূর্ণ সূচিপত্র (প্রস্তাবিত)

অধ্যায় : প্রস্থানের দৃষ্টান্ত

  • শুরু: হারানো সময়ের স্মৃতি
  • বিয়োগান্ত প্রেম
  • দূরত্বের শুরু

অধ্যায় : পথের বাধা

  • একাকিত্বের সঙ্গী
  • হারানোর যন্ত্রণার আয়না
  • নিজের সঙ্গে দ্বন্দ্ব

অধ্যায় : অভ্যুত্থান

  • আত্মার আহ্বান
  • প্রত্যয়ের আলো
  • প্রথম ধাপ ফিরে আসার পথে

অধ্যায় : বিচ্ছেদের দোলাচলে

  • স্মৃতির ছায়া
  • বিচ্ছেদের মধুর ব্যথা
  • শেষ বার্তা

অধ্যায় : প্রত্যাবর্তনের অঙ্কুর

  • নতুন দিনের সুর
  • অবহেলিত ভালোবাসা
  • ছোট ছোট খুশির খোঁজ

অধ্যায় : সওগাতের আগমন

  • আলোর ফেরাটা
  • নিঃসঙ্গতায় বন্ধুত্ব
  • জীবনের নতুন অর্থ

অধ্যায় : নিখাদ ভালোবাসা

  • আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি
  • হৃদয় ভাঙার গভীরতা
  • আল্লাহর প্রতি প্রেমের ঘোষণা

অধ্যায় : অন্তিম তাওবা

  • জীবনের শেষ তাওবা
  • শেষ আকুল প্রার্থনা
  • ত্যাগ আত্মসমর্পণ

অধ্যায় : পথিকের যাত্রা

  • রবের নিকটের পথিক
  • আত্মার আলোয় পথ চলা
  • ধারাবাহিক দৃশ্য

অধ্যায় ১০: ফিরে আসার পর্ব

  • আত্মার পুনর্জন্ম
  • জীবনের নতুন গল্প
  • চিরন্তন আশার কথা

পরিচয়: আরিফ ইবনে শামছ্

 নাম: আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া লেখালেখি: আরিফ ইবনে শামছ্ পিতা: বিশিষ্ট সমাজ ও সাহিত্যসেবক, কবি ক্বারী আলহাজ্ব শামছুল ইসলাম ভূঁইয়া (রাহঃ)।সহকারি প্রকৌশলী, বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন (বি.টি এন্ড টি- বি.টি.সি. এল)। মাতা: মোয়াল্লিমা হালীমা সাদীয়া ভূঁইয়া। ঠিকানা: ফখরে বাঙ্গাল নিবাস, ভূঁইয়া পাড়া, বাড়ী# ১২৩৪, ওয়ার্ড# ১২, গ্রাম: ভাদুঘর, পোষ্ট: ভাদুঘর-৩৪০০। থানা:সদর, জিলা: বি.বাড়ীয়া। পড়াশোনা: নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়, (৬ ষ্ঠ শ্রেনী) সদর, বি.বাড়ীয়া। ভাদুঘর মাহবুবুল হুদা পৌর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (৭ম-১০ম)।হাবলা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (রেজিষ্ট্রেশন) হতে ১৯৯৫ ঈসায়ী সালে কৃতিত্বের সাথে ১ম বিভাগে পাশ করেন।প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বরাবরই ফার্ষ্ট বয় ছিলেন।১৯৯৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন।২০০১ সালে, বি.এস.এস (সন্মান-অর্থনীতি), ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সরকারি কলেজ, ২০০৩ সালে, এম.এস.এস (অর্থনীতি), সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা, বি.এড. বাংলাদেশ টিচার্স ট্রেইনিং কলেজ, ঢাকা (জাতীঃবিঃ), এম.এড (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), এম বিএ -এম এই এস (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-অধ্যয়নরত) পূর্বপুরুষদের পূর্বকথাঃ বৃহত্তর বিভাগ ময়মনসিংহের অন্তর্গত বেলগাঁও থানার দিলালপুরে বসবাস করতেন পাঁচ ভাই।দুই ভাই দ্বীনের কাজে বা ভ্রমনের উদ্দ্যেশ্যে দিলালপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া (ত্রিপুরা) জেলার সদর থানার অন্তর্গত ভাদুঘর গ্রামে আসেন।প্রাকৃতিক পরিবেশের অপূর্ব লীলানিকেতনের মোহে মোহাবিষ্ট হয়ে ভ্রাতাদ্বয় স্থায়ী বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন ভাদুঘরে।"বংশ পরম্পরায় দ্বীন ধর্মের প্রচার প্রসার, অলি-আল্লাহদের খেদমত ও ইহসানের সুবাদে ধারণা মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় যে, ভ্রমণে নয়, দ্বীন ধর্ম প্রচার বা ইসলামের দাওয়াত নিয়েই দুই ভাই এসেছিলেন"। কবিতা সাহিত্য সংস্কৃতির আসর (একটি গতিশীল সাহিত্যভান্ডার)। প্রাক্তন বিভাগীয় সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, মাসিক "বলিতে ব্যাকুল" পরবর্তীতে "তিতাস বার্তা"। মোবাইল: ০১৬১০০০৭৯৭০। বয়স: ৩৮ বছর। পেশা: চাকুরী। প্রকাশিত লেখা: দৈনিকভাবে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, দৈনিক প্রজাবন্ধু, মাসিক বলিতে ব্যাকুল, তিতাস বার্তা, হক্ব পয়গাম। মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শেখ সম্পাদিত "ঝরা ফুলের গন্ধ" যৌথ কাব্য গ্রন্থে প্রকাশিত (১) "শ্বাশ্বত আহ্বাণ" এবং (২) "ছন্দ নাবিক"। মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শেখ সম্পাদিত "বিজয়ের উল্লাসে" যৌথ কাব্য গ্রন্থে প্রকাশিত (১) সত্য সন্ধানী (২) বাঙালির স্বাধীনতা (৩) বিজয়ের উল্লাসে (৪) অনুশোচনা (৫) বিদ্রোহী তুমি, বিপ্লবী (৬) আজকের এই বাংলাদেশ (৭) ভাঙ্গা গড়া সংকলন ও সম্পাদনা: তাসকিন আব্দুল্লাহ "বাংলার ১০০ কবি ও কবিতা" যৌথ কাব্য গ্রন্থে প্রকাশিত আগুন জ্বালা অন্তরে | সন্মাননা পত্র প্রাপ্তি : পাক্ষিক সেরা কবি, আধুনিক বাংলা কবিতার আসর (কবিতাঃ কারবালার শিক্ষা),পাক্ষিক সেরা কবি, আধুনিক বাংলা কবিতাপাক্ষিক সেরা কবি, আধুনিক বাংলা কবিতা ছড়া ও গানের আসর (কবিতাঃতোরা থামবি কিনা বল।) সাহিত্য জাগরণ বাংলাদেশ (কবিতাঃহৃদয় কন্দরে। কবিতাঃ কবিতা তোমার।)শখের কবিতা সাহিত্য আড্ডা (কবিতাঃ টেকসই মানবতা।কবিতাঃ বিদ্রোহী তুমি বিপ্লবী।)। বাংলাদেশ কবি সংসদ, (সিলেট বিভাগ)।বাংলাদেশ কবি সংসদ, (চট্রগ্রাম বিভাগ) হতে সাহিত্য অঙ্গনে বিশেষ অবদানকৃত স্বরুপ বিশেসন্মাননা পত্র প্রাপ্তি।বিশেষ সন্মাননাপত্র, এসো কবিতা লিখি (কবিতাঃ জাগাও তুমি জেগে ওঠো!),দিনের (২০-১১-২০১৭) সেরা কবি, বাংলাদেশ কবি পরিষদ (কবিতাঃ বাঙ্গালীর স্বাধীনতা)।আন্তর্জাতিক কবি পরিষদ (আজকের- ০৬-১২-২০১৭- সেরা কবি, কবিতাঃ "জীবন তরী"); ছায়াবীথি (সেরা পোষ্ট- কবিতা ইভেন্টে বিজয়ী- কবিতাঃ "অনাগত সন্তানের আহ্বান"।সমাজ কল্যাণ সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক সপ্তাহের (১৪-১২-২০১৭) সেরা বিজয়ী কবি, ১ম স্থান অধিকারী, (কবিতাঃ আসলে পতন, খবরদার !)বাংলা সাহিত্য (কবিতা ও গল্পের রস _১৪-১২-২০১৭_সাপ্তাহিক সেরা ২৫ এ ৫ম স্থান ( কবিতাঃ আসলে পতন, খবরদার !);বাংলা সাহিত্য (কবিতা ও গল্পের রস _২২-১২-২০১৭_সাপ্তাহিক সেরা ২৫ এ ১১ তম স্থান ( কবিতাঃ পরোয়ানা !)প্রজন্ম সাহিত্য সভা (প্রসাস-০৬-০২-২০১৮_সপ্তাহের সেরা ০৫ এ ০৪- কবিতাঃ স্বান্তনা) নকলা উপজেলা সমাজকল্যাণ সাহিত্য পরিষদ, সাপ্তাহিক সম্মাননা ১৬-০২-২০১৮, ( কবিতা: ফাগুনের গান); কাব্য প্রেমীদের প্রচার মাধ্যম_ গল্প কবিতা ও সাহিত্যের আসর_বিশেষ সম্মাননা _২২-০২-২০১৮ (কবিতা: প্রিয় বাংলাভাষা); কাব্য কথার মেলা সাহিত্যাঙ্গন, সাপ্তাহিক সেরা ০৫ (কবিতা: এই পৃথিবীর আর্তনাদ); সাহিত্যজগৎ (সকল সাহিত্য প্রেমিদের ঠিকানা), সাপ্তাহিক সেরা ০৫ (কবিতা: বিপ্লবী );শেরপুর সাহিত্য পরিষদ, সাপ্তাহিক সম্মাননা, ২৩-০৩-২০১৮ (কবিতা: বিপ্লবী) ; সাহিত্য সন্ধ্যা, আজকের (২৭-০৩-২০১৮) সেরা কবি, (কবিতা: বিপ্লবী) বাংলা সাহিত্য কবিতা ও গল্পের রস_৩০-০৩-২০১৮_সাপ্তাহিক সেরা ২৫ এ ৪র্থ স্থান ( কবিতাঃবিপ্লবী )। সাপ্তাহিক সেরা ০৭ কবি ও কবিতায় ১ম স্থান, (কবিতা: বিপ্লবী ); সাহিত্যের জাগরণ, আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংগঠন, সাপ্তাহিক সম্মাননা, ০১-০৪-২০১৮ (কবিতা: বিপ্লবী)। https://www.facebook.com/ariful.bhuiyan.bd/ https://www.linkedin.com/in/arifulislambhuiyan/ https://www.twitter.com/arifulbhuiyan12 https://www.youtube.com/c/arifbhuiyan01711 ## ফখরে বাঙ্গাল নিবাস, বাড়ি#১২৩৪, ওয়ার্ড#১২ ,ভুঁইয়া পাড়া, ভাদুঘর দক্ষিণ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর , ব্রাহ্মণবাড়ীয়া। All copyright by ARIFUL ISLAM BHUIYAN | আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া | ফখরে বাঙ্গাল নিবাস। ভাদুঘর।বি.বাড়ীয়া। ওয়ারিদ টেলিকম, এয়ারটেল লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড এবং নগদ লিমিটেড কোম্পানিগুলোতে কন্ট্রাকচুয়াল এবং পারমানেন্ট এমপ্লয়ি হিসেবে ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলাম।

বুধবার, জুন ০৪, ২০২৫

আল্লাহ্‌র দয়ার কোনো সীমানা নেই

📜 কবিতা ১৩: 

✍️ কবি: আরিফ শামছ্
📅 তারিখ: ৩১ মে ২০২৫
📍 স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব
(অধ্যায় ৬: কেয়ামত ও অনন্ত জীবন)

আমি যখন সব দরজা বন্ধ পেলাম,
তুমি একমাত্র খুলে রাখলে তোমার করুণা।
আমি যখন নিজের চোখে নিজেকে হারালাম,
তুমি তখন বললে— "ফিরে এসো, আমি ক্ষমাশীল!"

আমার পাপ যত বড়ই হোক,
তোমার দয়া তার চেয়েও বিশাল।
আমি যখন বললাম—
"তুমি কি আমাকে এখনো ভালোবাসো?"
তুমি পাঠালে উত্তর—
এক আয়াত, এক কান্না, এক অনন্ত প্রশ্রয়।

তুমি রাগ করো,
তবু বারবার ডাকো,
তুমি শাস্তি দাও,
তবু আগে বলো— "আমার রহমত আমার গজবকে ছাড়িয়ে যায়।"

হে রব,
তোমার মতো আর কেউ নেই,
মানুষ ভুল করলে ঠেলে দেয়,
তুমি ভুল করলেও—
জায়নামাজে ডাকো, কোরআনে আলতো করে আলিঙ্গন করো।

তুমি আছো বলেই আজও আমি বেঁচে আছি,
তুমি আছো বলেই আমার পাপ আর শূন্যতা
তোমার করুণায় প্রতিদিন গলে যায়।
কারণ, আল্লাহ্‌র দয়ার কোনো সীমানা নেই—
তুমি চাও শুধু ফিরে আসতে।

তুমি আমার রাতের চাঁদ, দিনের আলো

📜 কবিতা ১২: 

✍️ কবি: আরিফ শামছ্
📅 তারিখ: ৩১ মে ২০২৫
📍 স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব
(অধ্যায় ৬: কেয়ামত ও অনন্ত জীবন)

তুমি আমার রাতের চাঁদ,
অন্ধকারে যখন পথ হারা,
তোমার আলোয় দেখি —
কোনটা হারাম, কোনটা হালাল।

তুমি আমার দিনের আলো,
যখন চোখ খুলেই দেখি দুনিয়া,
তুমি শেখাও কিভাবে
এই আলোকিত পথে — সোজা থাকা যায়।

ঘুমের মধ্যে,
জেগে থাকা স্বপ্নে,
তুমি আছো —
যেন বাতাসে ভেসে থাকা দোয়ার মতো।

আমি কাঁদি যখন,
তুমি চোখে অদৃশ্য হাত রাখো,
বলো — “আমি শুনছি”,
যেন এক গভীর প্রশান্তির স্পর্শ।

তুমি ছাড়া আমি যে পথের ছায়া,
যে নদীর পাথর,
যে কণ্ঠের নিঃশব্দতা।
আর তুমি —
আলো, দয়া, অস্তিত্বের প্রতিটি অর্থ।

তুমি আমার রাতের চাঁদ,
তুমি আমার দিনের আলো,
তুমি আছো বলেই—
আমি হারিয়ে গিয়েও বারবার খুঁজে পাই নিজেকে।


---

মঙ্গলবার, জুন ০৩, ২০২৫

কেয়ামতের দিন আমি কোথায়?


📜 কবিতা ১১: 

✍️ কবি: আরিফ শামছ্
📅 তারিখ: ৩১ মে ২০২৫
📍 স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব
(অধ্যায় ৬: কেয়ামত ও অনন্ত জীবন)

কেয়ামতের সেই দিন,
যখন আকাশ ফেটে যাবে,
পাহাড় হবে তুলোর মতো,
আর মানুষ দৌড়াবে নিজের ছায়া থেকেও দূরে—
সেদিন আমি কোথায় থাকব?

যখন কোনো মিথ্যা চলবে না,
অজুহাত থেমে যাবে,
জিহ্বা বন্ধ থাকবে,
কিন্তু হাত-পা বলবে আমার কাহিনি—
তোমার সামনে, হে রব।

আমার আমলনামা,
কি ভরে রেখেছি এতদিন?
ভুলে যাওয়া নামাজ,
চোখের গোপন পাপ,
রিয়ায় ভরা দান,
ভাঙা অঙ্গীকার—
সবই কি আসবে আমার সামনে?

আমি কাঁপে,
এই চিন্তায় নয় যে তুমি অবিচার করবে,
বরং এই ভয়ে—
আমি নিজের ওপরই কতটা অন্যায় করেছি!

তবু তোমার রহমতের আশায় বুক বেঁধে বলি—
হে আল্লাহ্‌,
যদি আমার আমল না বাঁচাতে পারে,
তবে তুমি আমাকে বাঁচাও।
---

আত্মা যখন তাফাক্কুরে ডুবে

📜 কবিতা ১০: 

✍️ কবি: আরিফ শামছ্
📅 তারিখ: ৩১ মে ২০২৫
📍 স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব
(অধ্যায় ৫: আল্লাহ্‌র আলোয় জীবনযাপন)

একদিন থেমে গিয়েছিল সব—
বাইরের শব্দ, মানুষের মুখোশ,
তখন,
আমি ডুবে গিয়েছিলাম নিঃশব্দ এক সাগরে—
তাফাক্কুরে।

জীবনের অর্থ খুঁজে বেড়ানো
এই ক্লান্ত আত্মা,
জানতে চায়—
আমি কে? কেন এসেছি?
কোন পথে হাঁটছি, আর কার দিকে যাচ্ছি?

পৃথিবী বলল— "ভোগ করো",
মিডিয়া বলল— "তুমি সব পারো",
কিন্তু আমার হৃদয় বলল—
"তুমি একা নও, তোমার এক রব আছেন!"

আমি দেখেছি—
ছোট্ট এক সেজদা কীভাবে ভেঙে দিতে পারে
বছরের পর বছর জমা বিষণ্নতা।
আমি জেনেছি—
আল্লাহ্‌র নীরব উপস্থিতি
সবচেয়ে উচ্চ শব্দ।

তাফাক্কুর আমাকে শেখালো—
প্রকৃত শান্তি কেবল আত্মিক সংযোগে,
কেবল তখনই মানুষ মুক্ত,
যখন সে স্বেচ্ছায় আল্লাহ্‌র গোলাম হয়।
---

রোজার দিনে রব

📜 কবিতা ৯: 

✍️ কবি: আরিফ শামছ্
📅 তারিখ: ৩১ মে ২০২৫
📍 স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব
(অধ্যায় ৫: আল্লাহ্‌র আলোয় জীবনযাপন)

রোজার দিনে সবকিছু বদলে যায়,
পেট খালি, তবু আত্মা ভরে যায়।
ঘুম কম, তবু হৃদয় জেগে থাকে,
কারণ— এই দিনগুলো শুধু আমার নয়,
এই দিনগুলো শুধু তোমারই, হে রব।

তোমার জন্যই না খেয়ে থাকি,
তোমার জন্যই চোখ নিচু রাখি,
তোমার ভয়েই
আলতোভাবে কথা বলি,
অন্যদিন যেটুকু ভুল হতো,
এই মাসে ঠিক করতে চাই—
কারণ রোজা শুধু উপবাস নয়,
রোজা হলো— তোমার ভালোবাসায় নিজেকে সঁপে দেওয়া।

তারাবি শেষে যখন নিঃশব্দে হাঁটি,
আকাশের তারা যেন বলে—
“তুমি একা নও, তোমার রব তো আছেন!”
সেহরির নিঃশব্দ আহ্বান,
ইফতারের দোয়ার সেই চোখ ভেজা মুহূর্ত—
তোমার কাছেই তো ফিরে যাই, প্রতিদিন, বারবার।

এই রোজা যেন শেষ না হয়,
এই অনুভব, এই ভক্তি, এই শুদ্ধতা—
সারা বছর জেগে থাকুক মনে।
কারণ রোজার দিনে রব থাকেন খুব কাছেই,
আর আমি শুধু সেই সান্নিধ্যেই শান্ত।
---

হিসাবের আগে হিসাব

📜 কবিতা ৮:

✍️ কবি: আরিফ শামছ্
📅 তারিখ: ৩১ মে ২০২৫
📍 স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব
(অধ্যায় ৫: আল্লাহ্‌র আলোয় জীবনযাপন)

দিন কেটে যায়, রাত ঘুমিয়ে যায়,
জীবনের পৃষ্ঠা বদলায়—
কিন্তু আমি কি ভাবি
হিসাবের আগে হিসাব নেওয়ার কথা?

যে চোখে আমি আজ তাকালাম,
তা কি হক দেখেছে?
যে মুখে আমি কথা বলেছি,
তা কি সত্য বলেছে?
এই অন্তর, এই দেহ —
কে দিয়েছে, কাদের জন্য ব্যয় হলো?

আল্লাহ্‌, তুমি বলেছো—
"প্রত্যেক কর্মের হিসাব হবে"
তাহলে আমি কেন গাফিল?
কেন ভাবি না,
আজ যা করলাম
তা কালকে দাঁড়াবে আমার বিরুদ্ধে?

হিসাবের দিন আসবে,
তোমার কিতাবে লেখা থাকবে
আমার প্রতিটি লুকানো কাজ।
তবু কেন আমি ভাবি না
এই মুহূর্তে— নিজেকে নিজেই জিজ্ঞেস করি না?

তুমি দয়া করো হে রব,
আমাকে শেখাও
হিসাবের আগে হিসাব নিতে,
নিজেকে বদলাতে,
এই দুনিয়ার মাঝেই
তোমার সামনে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিতে।
---

তুমি আমার রব, আমি তোমার প্রেমিক

📜 কবিতা ৭: 

✍️ কবি: আরিফ শামছ্
📅 তারিখ: ৩১ মে ২০২৫
📍 স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব
(অধ্যায় ৪: প্রেম ও পূর্ণতা)

তুমি আমার রব —
চিরন্তন, নির্ভরতার একমাত্র নাম।
আর আমি?
আমি একজন প্রেমিক,
যে ভুল করেও
বারবার তোমার প্রেমেই ডুবে যায়।

এই প্রেমে নেই কোনো দুনিয়াবি দাবি,
নেই ফুরোবার ভয়,
কারণ তুমি যখন প্রেম দাও,
তা হয় —
রহমতের মতো ধীর,
তাওবার মতো নিঃশর্ত।

তোমার নামেই আমার হৃদয়ের সব আবেগ,
"ইয়া আল্লাহ্", "ইয়া ওয়াদূদ" —
এই ডাকগুলো
রাত্রির নিঃস্তব্ধতায়
আমার প্রেমপত্র হয়ে উঠে।

তুমি জানো,
আমি কীভাবে ভালোবাসি —
সেজদার গভীরে,
তাকওয়ার তৃষ্ণায়,
তোমার কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে।

তুমি আমার রব,
আমি তোমার প্রেমিক,
এই সম্পর্কের মাঝে
নেই কোনো শর্ত,
নেই কোনো ভাঙন —
শুধু চিরন্তন এক আত্মিক বন্ধন।
---

তাওবার রাত

📜 কবিতা ৬: 
📅 তারিখ: ৩১ মে ২০২৫
📍 স্থান: রিয়াদ, সৌদি আরব

(অধ্যায় ৩: কান্না ও ক্ষমা)

রাত গভীর, চারদিক নিস্তব্ধ,
তবু আমার ভিতরে চলেছে ঝড়।
চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে বালিশ,
আর হৃদয় বলছে—
"হে প্রভু, তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই।"

আজ আমি ফিরতে চাই,
সব পাপের গ্লানি নিয়ে,
সব ভাঙা অঙ্গীকার,
ভুলে যাওয়া ফরজ,
অমার্জিত বেপরোয়া দিন—
সব নিয়ে ফিরে এসেছি তোমারই দিকে।

এই তাওবার রাত,
তোমার কাছে আমার প্রথম কান্না নয়,
তবে হতে পারে
নতুন করে শুরু করার সত্যিকারের রাত।

আমি জানি না তুমি ক্ষমা করবে কিনা,
কিন্তু আমি জানি —
তুমি “আল-গফুর”,
আর আমি সেই অপরাধী
যে বারবার ভুলেও
তোমার দয়ার দিকেই ফিরে যায়।

তোমার রহমতের দরজা খোলা থাকুক আমার জন্য,
এই রাত, এই কান্না, এই ডাকা —
ফিরিয়ে দিও না,
হে আমার রব, এই তাওবার রাতেই
আমার জীবন ফিরে পাক।
---

যখন আমি ভেঙে পড়ি

📜 কবিতা ৫: 
(অধ্যায় ৩: কান্না ও ক্ষমা)

যখন আমি ভেঙে পড়ি —
ভিতরে ভিতরে, শব্দহীনভাবে,
তখন কেউ টের পায় না,
কিন্তু তুমি জানো,
হে আল্লাহ্‌, তুমি জানো।

লোকজন ভাবে— আমি ঠিক আছি,
মেসেজে হাসি, ছবিতে আলো,
কিন্তু তুমি দেখো
ছায়ার ভিতরে ভাঙা ছায়া,
আত্মা যখন নিঃশব্দে কাঁদে।

আমি যখন ক্লান্ত —
পরিচিত মুখগুলোর মুখোশ দেখে,
তুমি তখন আমায় জড়িয়ে নাও,
একটি নীরব দোয়ার ভিতর,
একটি নিঃস্ব শব্দে — "ইয়া রব!"

আমি মানুষ, আমি ভুল করি,
আমি লজ্জিত, আমি অপরাধী,
তবু ফিরে যাই তোমার দিকেই,
কারণ আমি জানি —
তোমার দরজা কখনো বন্ধ হয় না।

তুমি ছাড়া কে আছে আমার?
এই অন্তহীন ক্লান্তির ভিড়ে
তোমার রহমতই একমাত্র আশ্রয়।
তুমি আছো বলেই আমি টিকে আছি,
ভেঙে পড়েও উঠে দাঁড়াই — শুধুই তোমার নামে।

---

সেজদার ভাষা

(আল্লাহ্‌ ও আমি: কবিতা ৪)

আমি যখন কিছুই বলতে পারি না,
তখন সেজদা-ই হয় আমার ভাষা।
নীরব ঠোঁট, বিক্ষিপ্ত বুক,
তবুও তুমি শুনে ফেলো
অশ্রুর প্রতিটি উচ্চারণ।

তুমি জানো,
আমি কেন ভেঙে পড়েছি আজ,
ফরজ নামাজের ভেতর
একেকটি দীর্ঘ নিঃশ্বাসের মানে —
তুমি জানো, আমি না বললেও।

হাত তোলে সবাই,
চাওয়ার তালিকা বড় লম্বা,
কিন্তু আমি শুধু চেয়েছি
তোমার কাছে নিজের ভাঙা অস্তিত্ব জমা দিতে।

তুমি যখন বলো:
"আমি আছি, ভয় কোরো না",
তখন হঠাৎ সব চিন্তা স্তব্ধ হয়ে যায়,
সেজদার ভেতরেই পাই
সারা জীবনের উত্তর।

চোখে অশ্রু, মনে তুমি,
এটাই তো আসল সংযোগ,
তুমি আছো বলেই সেজদা জীবন্ত,
আর আমি,
একজন ক্ষুদ্র মানুষ,
তোমার দয়ার ছায়ায় অমর।

আমি, প্রযুক্তি আর তুমি

(আল্লাহ্‌ ও আমি: আধুনিক আত্মা ও চিরন্তন রবের কথোপকথন — কবিতা ৩)

ওই যে ক্লাউডে সব মেমোরি জমা,
তবু মনের কিছু ফোল্ডার খালি।
হার্ডডিস্কে ছবি, শব্দ, গান,
কিন্তু আত্মা চায় —
তোমার করুণা, একটুখানি!

চার্জার খুঁজে ফিরি প্রতিদিন,
ফোনে ব্যাটারি না থাকলে অস্থিরতা,
কিন্তু অন্তরের চার্জ শেষ হয়ে গেলে?
কে রিচার্জ করে —
তুমিই তো, ইয়া হাইয়্যু, ইয়া কাইয়্যুম!

ফেক প্রোফাইল, সাজানো ছবি,
জীবন যেন একটা ফিল্টার-চিহ্নিত বাস্তবতা।
কিন্তু সেজদায় কাঁদলে,
তোমার সামনে কোনো ফিল্টার চলে না,
তুমি জানো— আমি কে, আমার অন্তর কেমন।

হ্যাশট্যাগে বদলায় ট্রেন্ড,
জীবনেও বদলায় উদ্দেশ্য।
কিন্তু তোমার দয়া —
চিরন্তন, অচঞ্চল,
যা বদলায় না, ভুলে যায় না কখনো।

তোমার সাথে সংযোগের জন্য
Wi-Fi লাগে না, MB ফুরায় না,
শুধু চাই —
একটি খাঁটি মন,
একটি সরল আহ্বান:
"ইয়া আল্লাহ্‌, আমাকে ক্ষমা করো!"

আলোর উৎস

(আভূতপূর্ব একটি ঈমানি কবিতা)

সকালে ঘুম ভাঙে,
মোবাইল হাতে — স্ক্রিনে আলো,
নটিফিকেশনে ভেসে আসে দুনিয়া,
কিন্তু হৃদয়ে তখনো আঁধার জমে…
আল্লাহর নাম না নিলে শুরুই তো অসম্পূর্ণ!

চলছি ব্যস্ত ট্রাফিকে,
হর্নের চাপে চাপা পড়ে মন,
কালারফুল বিলবোর্ডে চোখ যায়,
তবু মনে পড়ে,
সবচেয়ে উজ্জ্বল রঙ তো
জান্নাতের — যে দেয় শুধুই আল্লাহ।

চা হাতে, একা বারান্দায়,
মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলি,
“হে আমার রব,
এমন শান্তি আর কোথায় পাব?”
তুমি না থাকলে, আমি কে?

ফেইসবুক পোস্টে দুঃখ ঢাকি,
ইনস্টাগ্রামে হাসি সাজাই,
কিন্তু রাতের নির্জনে —
তাকওয়ার কান্না আর তওবার অশ্রু
তুমি ছাড়া কে দেখেন, প্রভু?

ডিজিটাল শব্দে জীবন জমজমাট,
তবু নিঃশব্দে —
একটুখানি সেজদা,
পুরো পৃথিবীর চেয়ে বেশি শান্তি দেয়!

তুমি আছো বলেই বেঁচে আছি,
তুমি আছো বলেই ভালোবাসা এখনো পবিত্র,
তুমি আছো বলেই
ভবিষ্যতের প্রতি আশা রেখেছি—
কারণ তুমি আল-রহমান, আল-নূর, আল-ওয়াদূদ।

রবিবার, জুন ০১, ২০২৫

নির্ভরতার নাম – আল্লাহ্‌

আল্লাহ্‌কে নিয়ে একটি অনুভূতিময় ও অভিনব (অভূতপূর্ব) আধুনিক ঢঙের কবিতা দিলাম। কবিতাটিতে ঈমান, প্রেম, প্রযুক্তি ও বর্তমান বাস্তবতার ছোঁয়া রাখা হয়েছে:

---

নির্ভরতার নাম – আল্লাহ্‌
(অভূতপূর্ব একটি ঈমানি কবিতা)

দূর মহাকাশ চষে ফিরে আসি,
নিউরনের মতো জাল বুনে যাই,
ডেটার পাহাড় ভেদ করেও
শান্তি পাই না — যতক্ষণ না বলি,
"ইয়া আল্লাহ্‌, তুমিই আমার!"

ডিজিটাল দুনিয়ার দ্বিধা-সংকট,
এলগরিদমে মন হারিয়ে যায়,
কিন্তু যে নাম নিই ঠোঁট টিপে,
হৃদয় টানে —
আল্লাহ্‌ — অনন্ত নির্ভরতায়।

তিনিই তো মায়ের চেয়ে মমতায় বড়,
চোখের অশ্রু পড়ার আগেই জানেন —
কে কতটা ব্যথিত, কে হারিয়ে গিয়েছে
মানুষের মুখোশে মুখোশের দেশে।

ব্যাংক ব্যালান্স শুন্য, ডাটা অফ,
বন্ধ দরজা, বন্ধ আলো,
তবু তিনি খোলা থাকেন —
দোয়া’র নেটওয়ার্কে strongest signal!

সেলফিতে হাসি, ভিতরে বিষাদ —
তিনিই জানেন আসল রূপ,
মাটির শরীর, আত্মার আলো
আল্লাহ ছাড়া কে রাখবে হিসেব?

যে নাম নিলে,
রাতে ঘুম আসে;
যে নাম রাখলে,
মৃত্যুও লাগে নরম—
সেই তো আল্লাহ্‌, পরম প্রেমময়।

---

শনিবার, মে ১৭, ২০২৫

বাবাকে লেখা নূরে জান্নাত ফাতিমার সর্বপ্রথম চিঠি


চ্যাটজিপিটি: আপনার মেয়ের (নূরে জান্নাত ফাতিমা) লেখা চিঠিগুলো এবং তার ছবিটি দেখে খুবই মধুর লাগলো। যদিও সে এখনো সঠিকভাবে লিখতে শিখেনি, তার এই লেখাগুলো নিঃসন্দেহে বাবার প্রতি গভীর ভালোবাসা আর আবেগের প্রতিফলন।

অবশ্যই! আপনার মেয়ের ভালোবাসা ও নিষ্পাপ অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, নিচে একটি ছোট গল্পমতো কবিতা রইলো — “বাবার কাছে প্রথম চিঠি”:

---

বাবার কাছে প্রথম চিঠি
(লেখা: আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া, কল্পনায় মেয়ের কণ্ঠে)

বাবা, আমি লিখেছি চিঠি,
বর্ণ নয়, শব্দ নয়, তবু বুঝো মিষ্টি।
কলম ধরি কাঁপা হাতে,
মনের কথা আঁকি তাতে।

তোমার ছবি চোখে ভাসে,
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন হাসে।
তোমার কোলে দোল না পাই,
তবু মেঘে পাখি হয়ে যাই।

আমার হাতে আঁকাবাঁকা লাইন,
সেগুলোই তো ভালোবাসার সাইন।
তুমি কি তা বুঝতে পারো?
তুমি ছাড়া লাগে সারা জীবন ভারো।

জানি না কীভাবে লিখতে হয়,
তোমার নামই যত লেখা হয়।
এই চিঠিটা বুকের কাছে রাখো,
আমার যত ভালোবাসা, তাতে ঢাকো।

---
 
  "বাবার কাছে প্রথম চিঠি" নিয়ে 
    একটি হৃদয়স্পর্শী ছোটগল্প  

---

বাবার কাছে প্রথম চিঠি

লেখক: আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (কল্পনায় মেয়ের কণ্ঠে)

১.
আমি এখনো বর্ণ শিখিনি,
তবু খাতা-কলম হাতে নিই।
মা বলে, “তোমার বাবা দূরে,
ওর জন্য কিছু লেখো।”

আমি জানি না “লেখা” কাকে বলে।
তবে জানি, মনের কথা কাগজে ফেললেই সেটা চিঠি হয়।
তাই আমার ছোট ছোট আঙুল দিয়ে আঁকিঝুঁকি দিই,
তুমি বুঝে নিও না বুঝেও — এই আমার অনুরোধ।

২.
বাবা, তুমি জানো?
তোমার ছবি আমি চুপিচুপি দেখি —
মায়ের ফোনে, আয়নার কোণে,
কখনো কখনো স্বপ্নেও।

তুমি যখন ফোনে বলো,
“বাবু কেমন আছে?”
আমি শুধু “ভাল” বলি,
কিন্তু বলতে পারি না —
তোমার কোলে উঠতে ইচ্ছে করে খুব!

৩.
একদিন বিকেলে আমি ঠিক করলাম,
তোমার জন্য একটা চিঠি লিখব।
লিখতে জানি না, তাই আঁকলাম ভালোবাসা।
তুমি পড়লে বুঝবে —
তাতে কেবল দাগ না,
তাতে আছে আমার আদর, অভিমান,
আর কিছু না বলা কথা।

৪.
চিঠির শেষে আমি সিগনেচার করিনি,
শুধু একটুখানি তোমার নাম বলেছি —
কারণ তুমি আছো আমার হৃদয়ের ঠিকানায়।
তুমি আসবে তো?
আমার আঁকা চিঠি আর আমি —
দুজনেই তোমার অপেক্ষায়।

---

শেষ কথাঃ
মেয়েটির লেখা, তার নিষ্পাপ আঁকিবুকি আসলে ভাষার বাইরেও এক ধরনের মমতার প্রকাশ। তার জন্য আপনার ভালোবাসা, এবং তার বাবাকে ডাকার ইচ্ছাই এই গল্পের প্রাণ।

---

মা বাবুর চিঠির উত্তর

বাবার পক্ষ থেকে

প্রিয় মা বাবু,

তোমার লেখা প্রথম চিঠিটা আমি বারবার পড়েছি। যদিও তুমি এখনো ঠিক করে লিখতে শিখোনি, তবু তাতে ছিল সবচেয়ে মিষ্টি লেখা — আমার মেয়ের ভালোবাসা।

তোমার আঁকিবুকি, ছোট ছোট হাতের রেখাগুলো আমার চোখে জল এনে দিয়েছে — আনন্দের, গর্বের, আর তোমাকে ছুঁয়ে দেখার ব্যাকুলতার। তোমার কল্পনার দুনিয়ায়, আমি যেন তোমার পাশে ছিলাম — খাতার পাতায়, রং-পেন্সিলে, আর তোমার নরম হাতের ছোঁয়ায়।

বাবা এখন অনেক দূরে, কিন্তু প্রতিদিন তোমার ছবির দিকে তাকিয়ে দিন শুরু করি। তোমার হাসি যেন আমার শক্তি। তুমি যেদিন লিখলে — "তোমার কোলে উঠতে ইচ্ছে করে খুব", জানো মা? আমারও ইচ্ছে করে তোমাকে জড়িয়ে ধরি, কপালে চুমু দিই, আর বলি — “বাবু, আমি তোকে অনেক ভালোবাসি।”

তুমি চিঠি লিখে, শুধু কাগজ পাঠাওনি — পাঠিয়েছো তোমার মন, তোমার কোমল হৃদয়। আমি সেই ভালোবাসা বুকের ভেতরে আগলে রাখব, যতদিন বেঁচে আছি।

তুমি পড়াশোনা শেখো, বড় হও, মায়ের কথা শুনো, আর বাবাকে চিঠি লিখে যেতে থাকো — কারণ এই চিঠিগুলোই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।

তোমার বাবা
(যে তোমাকে খুব ভালোবাসে)

------

বাবার পক্ষ থেকে মেয়ের চিঠির উত্তর

শিরোনাম: আমার আদরের মেয়ের চিঠির জবাব
(লেখক: বাবা, কল্পনায় আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া)

আমার ছোট্ট রাজকন্যা,

তোমার পাঠানো চিঠিখানি পেলাম।
না, সেখানে ঠিকঠাক শব্দ ছিল না,
ছিল না বর্ণের ব্যাকরণ,
তবু সেই চিঠিটাই আমার জীবনের
সবচেয়ে মর্মস্পর্শী, সবচেয়ে আপন চিঠি।

তোমার কাঁচা হাতে আঁকা সেই দাগগুলো—
আমার বুকের ভিতরে এমনভাবে আঁচড় কেটেছে,
যার ব্যথাও মিষ্টি,
আর যার ভাষা শুধু বাবা বোঝে।

তুমি বলেছিলে, “লিখতে জানি না।”
কিন্তু বাবা জানে,
ভালোবাসা লিখতে শেখার দরকার হয় না—
ভালোবাসা অনুভব করতে হয়।

তুমি যখন বলো,
“তোমার কোলে উঠতে ইচ্ছে করে,”
তখন আমার দুই হাত অজান্তেই তোমার দিকে বাড়িয়ে দিই—
যদিও কিলোমিটারের ফাঁকে ছুটে যাওয়া যায় না।

তুমি আমার শ্বাস, আমার আশা,
এই প্রবাসে ক্লান্ত দিনগুলোতে
তোমার আঁকা একটুখানি দাগই
আমাকে বাঁচিয়ে রাখে।

বাবা প্রতিদিন ভাবে,
তোমাকে আবার জড়িয়ে ধরব কবে,
তোমার চুলে আঙ্গুল বুলিয়ে বলব,
“বাবু, আমি তোকে অনেক ভালোবাসি!”

তুমি অপেক্ষা করো, রাজকন্যা—
বাবা আসবেই।
তোমার চিঠির প্রতিটি দাগ আমি বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখব,
আর বলব নিজের মনকে,
"এই মেয়েটিই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন।"

ভালোবাসায়,
তোমার বাবা

---
#highlights2025 #highlightseveryonefollowers2025 #hilightseveryonefollowers #highlightseveryonefollowers #highlighteveryone #highlight #love #post #story #share Shams Arifeen Ariful Islam Bhuiyan ভালোবাসি দিবানিশি কবি কবিতার Ariful Islam Bhuiyan Khaleda Akter Bhuiyan Shamsul Arifeen Bhuiyan

তুমি যে সবার

 আপনার রচিত কবিতা “তুমি যে সবার” – আরিফ শামছ্ একটি অনন্য প্রেরণামূলক ও আত্মসচেতনতা জাগানো কাব্যনির্ঝর। নিচে এর কাব্যিক, ছান্দসিক, সাহিত্যিক, রসাস্বাদন ও সমগ্র বিশ্লেষণসহ সারাংশ ও সারমর্ম তুলে ধরা হলো:
---
১. কাব্যিক বিশ্লেষণ:

এই কবিতাটি একজন আত্মভোলা, দুঃখভরা বা নিজের আত্মমূল্য ভুলে যাওয়া মানুষকে উৎসর্গ করে লেখা হয়েছে। এতে কবি প্রথমেই স্মরণ করিয়ে দেন যে—

> “তুমি তো নও তোমার ওগো,
তুমি যে সবার!”

এই লাইনটিতে রয়েছে আত্ম-উত্তরণ ও বিশ্বজনীন মানবিকতাবোধ। কবি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেন, তার সৃষ্টির পেছনে রয়েছে মহান স্রষ্টার উদ্দেশ্য ও ভালোবাসা।

---

২. ছান্দসিক ও মাত্রাগত গঠন:

কবিতাটি মুক্তছন্দে রচিত হলেও কিছু অংশে মিল রাখা হয়েছে (“খোদার–ভালোবাসার”, “রথে–বেশে”)।

পঙ্‌ক্তি গুলোতে গড়পড়তা ৭-৯ মাত্রা রয়েছে।

সহজ-সরল বাক্য গঠন ও স্বাভাবিক ভাষার ব্যবহার কবিতাটিকে গণমানুষের বোধগম্য করে তোলে।
---

৩. সাহিত্যিক বিশ্লেষণ:

এই কবিতার সাহিত্যিক গুণাবলি নিম্নরূপ:

আত্মনির্ভরতা ও আত্মউন্নয়ন: কবি ব্যক্তি ও স্রষ্টার সম্পর্ককে কেন্দ্র করে আশার বাতিঘর নির্মাণ করেছেন।

রূপক ও প্রতীক:

“জীবন চাকা বিজয় রথে” – এখানে জীবনকে রথ এবং জয়ের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।

“ক্ষমার ঢালি”, “আশার বাণী” – এগুলো সাহিত্যিক প্রতীক।
---

৪. রসাস্বাদন (রসতত্ত্ব):

এই কবিতায় মূলত শান্ত রস ও বীর রস মিশ্রভাবে উপস্থিত:

শান্ত রস – আত্মসমর্পণ, আত্ম-অনুধ্যান, পরম করুণাময়ের প্রতি নির্ভরতা।

বীর রস – হতাশা জয় করে নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান।

> “সব হতাশা, অলস আবেগ,
নিরাশ মনের গুচ্ছ ক্লেশ,
ঝেঁড়ে ফেলে; নূতন আশে,
চলো বীরের বেশে।”
---

৫. আলোচনা ও সমালোচনা:

শক্তি:

আশাবাদী বার্তা।
ঈশ্বরভক্তি ও আত্মশুদ্ধির প্রেরণা।
সাধারণ মানুষের বোধগম্য ও হৃদয়গ্রাহী ভাষা।

৬. প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ:

এই কবিতাটি লেখা হয় ১১-১১-২০২০-এ, তিব্বত রোড, ঢাকা থেকে। সেই সময়ের সামাজিক বা ব্যক্তিগত কোনো ধাক্কা বা আত্মবিশ্লেষণের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কবি একটি আত্মজাগরণের বার্তা দিতে চেয়েছেন।
---

৭. মানব জীবনে তাৎপর্য ও গুরুত্ব:

আত্মবিশ্বাস জাগানো ও আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা প্রকাশ এই কবিতার মর্মমূলে রয়েছে।

হতাশা, অপরাধবোধ, সমাজের অবজ্ঞা – এই সবকিছু থেকে পুনরুত্থানের জন্য কবি আহ্বান জানিয়েছেন স্রষ্টার প্রতি আস্থা রেখে এগিয়ে যাওয়ার।

আধুনিক জীবনের ক্লান্তিময়তা, মানসিক অবসাদে কবিতাটি আধ্যাত্মিক আশার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেজঝ
---

৮. সারাংশ ও সারমর্ম:

সারাংশ:

এই কবিতায় কবি বলতে চান যে, মানুষ কেবল তার নিজের নয়, বরং সকলের প্রিয়, কারণ সে মহান আল্লাহর সৃষ্টি। কখনো নিজেকে ভালোবাসতে না পারলেও আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন। সমাজের কটু কথা ও কষ্টের মধ্যেও আল্লাহর কাছে করুণা ও ক্ষমা রয়েছে। অতএব, হতাশা দূরে সরিয়ে দিয়ে নব উদ্যমে জীবন রথে বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়াই জীবনের মূল লক্ষ্য।

সারমর্ম:

“তুমি যে সবার” কবিতাটি আত্ম-উদ্ধার, আত্মোপলব্ধি এবং পরম স্রষ্টার করুণায় দৃঢ় ভরসা রেখে এগিয়ে চলার এক অনবদ্য অনুপ্রেরণা। এটি জীবনের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আশার আলো খোঁজার এক শক্তিশালী বার্তা।

তুমি যে সবার
          আরিফ শামছ্ 
           
তুমি তো নও তোমার ওগো,
তুমি যে সবার!
সৃষ্টি তুমি প্রিয় খোদার, 
অনেক ভালোবাসার।
ব্যর্থ কভু ভালোবাসতে,
তোমার  নিজেকে,
স্রষ্টা সদা ভালোবাসে,
নিখাঁদ তোমাকে।
ভুল করে যাও, 
ভুলের ভুলে,
কতকিছু হারিয়ে কভু
নিঃস্ব ধরাতলে।
মুখ ফিরিয়ে নিবে সবে,
কটু কথা মন্দ বলে, 
অসহনীয় কষ্ট দিবে,
রহম রয়না দিলে!
সবার চেয়ে আপন হয়ে,
সদা তোমার পাশে পাবে,
দুঃখ-সুখে সব সময়ে, 
আল্লাহ মহান রবে।
ভুলের তরে ক্ষমার ঢালি,
জীবন পথে আশার বাণী,
নূতন করে চলতে পথে,
জীবন চাকা বিজয় রথে।
সব হতাশা,  অলস আবেগ,
নিরাশ মনের গুচ্ছ ক্লেশ,
ঝেঁড়ে ফেলে; নূতন আশে,
চলো বীরের বেশে।

১১-১১-২০২০
তিব্বত, ঢাকা।
#Post #poem 

চিরকুটে লেখা আর্তনাদ: আত্মহননের বাস্তবতা ও মানবিক দায়বদ্ধতা __ আরিফ শামছ্


একটি ছোট্ট চিরকুট, মাত্র কয়েকটি লাইন। তবু তাতে রয়েছে এক গভীর বিষাদ, বেদনাবোধ ও মানবিক ব্যর্থতার ইতিহাস।
"আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বৌ কেউ দায়ী না... আমি নিজেই দায়ী... কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না..." — এই কথাগুলো কোনো কবিতার পংক্তি নয়, বরং এক প্রাজ্ঞ সরকারি চাকরিজীবীর শেষ চিহ্ন, যা রেখে গেছেন নিজ অস্তিত্ব মুছে ফেলার আগে।

এই চিরকুট আমাদের সামনে তুলে ধরে এক অমোঘ প্রশ্ন— মানবিক ভালোবাসা ও সামাজিক দায়িত্ব কি আজ এতটাই ভঙ্গুর যে একজন মানুষ, যিনি পরিবার-সমাজে প্রতিষ্ঠিত, তাকেও জীবন থেকে পালাতে হয়?

ব্যক্তিগত সংকটের পরিপ্রেক্ষিত

প্রথমত, এই চিরকুটে আত্মঘাতী ব্যক্তি নিজের দায় স্বীকার করেছেন। কিন্তু প্রকৃত দায় কি শুধুই তাঁর? ব্যক্তিগত মানসিক অবসাদ, আত্মপর্যবেক্ষণ, পারিবারিক টানাপোড়েন, ভালোবাসার অপূর্ণতা—এসবই তাঁকে জীবন থেকে সরিয়ে দেয়। চিরকুটে তিনি তাঁর মাকে দুই ভাইয়ের দায়িত্বে দিয়েছেন, স্বর্ণালঙ্কার দিয়েছেন স্ত্রীর নামে, আর জীবনের বাকিটুকু যেন দিদি দেখেন বলে অনুরোধ করেছেন।

এই বিন্যাসে স্পষ্ট—তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের পরিবারকে ভালোবাসতেন, কিন্তু নিজেকে ভালোবাসতে পারেননি।

পারিবারিক ও সামাজিক নির্জনতা

এই চিরকুট আমাদের সচেতন করে দেয়—আমরা আমাদের কাছের মানুষদের কতটা বোঝার চেষ্টা করি? পরিবার শুধু দায়িত্ব নয়, এটি একজন মানুষের আশ্রয়। অথচ এই মানুষটি নিজের 'ব্যর্থতা' নিজেই বহন করেছেন—একটি কথাও বলেননি, অভিযোগ করেননি। হয়ত বহুদিন ধরে এই নীরব ক্লান্তির ভার বইছিলেন।

আজকের সমাজে ব্যস্ততা, অর্থের পিছনে ছোটা, সামাজিক সম্মান আর প্রতিযোগিতা মানুষের হৃদয়ের ভাষা বোঝার সময়ই যেন কেড়ে নিয়েছে।

মানসিক স্বাস্থ্য: উপেক্ষিত বাস্তবতা

এই আত্মহননের ঘটনায় এক ভয়ানক বাস্তবতা উঠে আসে—মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের সমাজ এখনো ভয়ঙ্কর রকম অসচেতন। মানুষ যতই চাকরি, টাকা, গৃহ-সম্পদ অর্জন করুক—একটি অব্যক্ত কান্না, একফোঁটা নির্ভরতার অভাব যদি থেকে যায়, তাহলে সে কেবলই একা। আর সেই একাকিত্বই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সমাজে ‘মানসিক চাপ’ বা ‘বিষণ্ণতা’কে এখনো ‘দুর্বলতা’ বলে মনে করা হয়। অথচ এটি একটি প্রকৃত চিকিৎসাযোগ্য অসুখ।

ধর্মীয় ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ

প্রতিটি প্রধান ধর্ম আত্মহত্যাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে—“আল্লাহ তাঁর বান্দার ধৈর্য পরীক্ষা নেন, কিন্তু সে ধৈর্য ভেঙে জীবন বিসর্জন দেওয়া কবীরা গুনাহ।” খ্রিস্টধর্ম, হিন্দুধর্ম ও বৌদ্ধধর্মেও আত্মহননকে আত্মার কষ্টকর পুনর্জন্মের কারণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

কিন্তু এ-ও সত্য, ধর্ম কেবল নিষেধ দেয় না, সে আশ্রয়ও দেয়। হয়ত সমাজ ও পরিবার সে আশ্রয়টুকু দিতে পারেনি বলে ধর্মের পরম ক্ষমার আশায় তিনি নিজের বিচার নিজেই করে ফেললেন।

সমাজের ভূমিকা ও দায়

এই আত্মহননের দায় ব্যক্তির নয়, এটি সমাজের সম্মিলিত ব্যর্থতা।
যে সমাজ ভালোবাসা দিতে জানে না, মনের কথা শুনতে জানে না, কেবল অর্জন আর প্রতিযোগিতায় মানুষকে মাপে—সেই সমাজে এমন করুণ মৃত্যু অনিবার্য হয়ে ওঠে।

আমরা যদি এমন মৃত্যুর ঘটনা শুনেও কাঁধ ঝাঁকি দিয়ে চলে যাই—তাহলে পরবর্তী চিরকুট আর কার হবে সেটি জানার অপেক্ষা মাত্র।

উপসংহার

এই চিরকুট আমাদের কাঁদায়, ভাবায়, কাঁপায়। এটি কেবল একটি মৃত্যুর দলিল নয়—এটি এক সমাজের আত্মজিজ্ঞাসা। আমাদের ভালোবাসা, বোঝাপড়া, সহমর্মিতা আর মনোযোগ না বাড়ালে, এই মৃত্যু থামবে না। বরং নিঃশব্দে ছড়িয়ে যাবে আরও অনেক হৃদয়ে।

এখনো সময় আছে—ভালোবাসুন, শুনুন, বোঝার চেষ্টা করুন। একটি জীবন বাঁচানোই মানবতার শ্রেষ্ঠ ধর্ম।

---

এই চিরকুটটি আত্মহননের আগমুহূর্তে এক সরকারি চাকরিজীবীর অন্তরের গভীর বেদনাবোধ, আত্মবিশ্লেষণ, দায়গ্রহণ এবং পারিবারিক দায়িত্ববোধের এক অনবদ্য ও হৃদয়বিদারক দলিল। এর গুরুত্ব শুধু ব্যক্তিগত বা পারিবারিক নয়—এটি এক সার্বজনীন মানবিক ও ঐতিহাসিক দলিল, যা সমগ্র মানবজাতির বিবেককে প্রশ্ন করে, নাড়িয়ে দেয়। নিচে এটির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক মূল্যায়ন দেওয়া হলো।

---

১. চিরকুটের মূল পাঠ ও বার্তা:

> "আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ি না। আমিই দায়ি। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না।
বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে।
মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের উপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে।
স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য।
দিদি যেন কো-অর্ডিনেট করে।"

---

২. ব্যক্তিগত মূল্যায়ন:

এই চিরকুটে একজন আত্মহননকারী ব্যক্তি—

নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন—“আমি কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না”।

নিজের দায় স্বীকারে দ্বিধাহীন—“আমিই দায়ি”।

মৃত্যুর আগে সবচেয়ে মানবিক বোধ প্রকাশ করেছেন—ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য স্ত্রীকে “ভালো থাকার” উপদেশ দিয়েছেন, মায়ের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন।

এই আত্ম-দায় গ্রহণ এক গভীর মানসিক যন্ত্রণার দলিল।

---

৩. পারিবারিক মূল্যায়ন:

চিরকুটে আছে—

স্ত্রী ও মায়ের প্রতি দায়িত্ববোধ, কোনো তিরস্কার নয়।

উত্তরাধিকার সুনির্দিষ্টভাবে বণ্টন: “স্বর্ণ স্ত্রীর, বাকি মায়ের”।

ভ্রাতৃ-সম্পর্কে আস্থা এবং বোনকে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব।

এখানে বোঝা যায়—তিনি একজন পরিপূর্ণ পারিবারিক মানুষ ছিলেন, যিনি শেষ মুহূর্তেও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন।

---

৪. সামাজিক মূল্যায়ন:

এই চিঠি তুলে ধরে:

একজন চাকরিজীবী সমাজে কী ভয়াবহ এক চাপের মধ্যে থাকেন।

সামাজিক অপেক্ষা, তিরস্কার, ব্যর্থতা একজন মানুষের মনোজগৎ কীভাবে ধ্বংস করে।

পরিবারের মধ্যেও মানসিক একাকিত্ব থাকতে পারে—যার উপশম সমাজ দিতে ব্যর্থ।

এখানে সমাজের দায় এড়ানো যায় না।

প্রশ্ন উঠবেই—একজন মানুষ এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই আমরা কোথায় ছিলাম?

---

৫. ধর্মীয় মূল্যায়ন (সকল ধর্মের আলোকে):

প্রায় সব ধর্মেই আত্মহত্যা অবৈধ, অনুচিত ও গর্হিত কর্ম হিসেবে বিবেচিত। কারণ—

ইসলাম: জীবন আল্লাহর আমানত, নিজের জীবন নেওয়া মহাপাপ।

হিন্দুধর্ম: আত্মহত্যা করলে আত্মা অশান্ত থাকে, পুণর্জন্মে দুঃখ বহন করে।

খ্রিস্টধর্ম: আত্মহত্যা পাপ, ঈশ্বর প্রদত্ত জীবন ধ্বংসের নামান্তর।

বৌদ্ধধর্ম: আত্মহনন অজ্ঞানতা ও কামনার পরিণাম, চক্রবৃদ্ধি দুঃখের কারণ।

তবে ধর্মসমূহ আবার ক্ষমা, দয়া ও সহমর্মিতার কথাও বলে। এই চিরকুটে আছে বোধোদয়ের বীজ—অর্থাৎ মৃত্যুর মুহূর্তেও তিনি সবকিছুর দায়িত্ব নিতে চেয়েছেন।

---

৬. ঐতিহাসিক মূল্যায়ন:

এই চিরকুট এক নিছক ব্যক্তিগত দলিল নয়—এটি একটি ঐতিহাসিক প্রমাণপত্র, যা ভবিষ্যৎ সমাজকে বলে যায়:

একজন মানবিক মানুষের ভেঙে পড়ার ইতিহাস।

দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসার প্রকাশ এমনকি মৃত্যুপ্রাক্কালেও কীভাবে সম্ভব।

আত্মহত্যার পেছনে সমাজ ও মানসিক স্বাস্থ্যের বহুমাত্রিক অনুপস্থিতি।

এটি রাখা উচিত অবসাদ, মানসিক স্বাস্থ্য, আত্মহত্যা প্রতিরোধ গবেষণার সংরক্ষণাগারে।

---

৭. করণীয় ও আহ্বান (মানবজাতির প্রতি বার্তা):

কেন এই চিরকুট আমাদের প্রত্যেকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?

একটি হৃদয় ভেঙে চিৎকার করেছে—কেউ শুনল না।

পরিবারে, সমাজে, কর্মক্ষেত্রে শুনবার লোক দরকার—বিশ্লেষণ নয়, সহানুভূতি।

মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত স্কুল স্তর থেকেই।

---

৮. উপসংহার:

এই চিরকুট একাধারে আত্মজীবনীর সারাংশ, সমাজের ব্যর্থতার দলিল, ধর্মের মূল্যবোধে সঙ্গতিপূর্ণ আহ্বান এবং ভবিষ্যতের মানবজাতির জন্য এক বিপন্ন প্রজাতির আর্তনাদ।

এটি আমাদের শিখিয়ে দেয়:

> ভালোবাসা, সহানুভূতি, মনোযোগ, শ্রবণ—এসবই হতে পারে জীবন রক্ষার হাতিয়ার।
---

শুক্রবার, মে ১৬, ২০২৫

গল্প : ভালোবাসি দিবানিশি

 ভূমিকা: প্রেম, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব—এই তিনটি শব্দ মানব জীবনের সবচেয়ে আবেগঘন, কোমল ও সংবেদনশীল অনুভূতির প্রতিনিধিত্ব করে। কিছু সম্পর্ক শুরু হয় নিঃশব্দে, গড়ে ওঠে হৃদয়ের গভীরে, এবং শেষ হয় নিঃশেষে, কিন্তু রেখে যায় অম্লান স্মৃতির ছাপ। এই প্রবন্ধে এমনই এক বাস্তব প্রেমকাহিনীর বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে—আরিফ ও কবিতার গল্প।

 

অনুচ্ছেদ ১: প্রেমের বীজ রোপণ ঘটনা শুরু ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি অনার্স কলেজে, অর্থনীতিতে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার দিন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আরিফের চাহনির গন্তব্য ছিল কবিতার কাজল কালো নয়ন। সেখানে জন্ম নেয় মুগ্ধতা, স্পন্দন, আর অনুভবের এক নতুন জগৎ। প্রথম ক্লাসেই দেখা হওয়া, অবাক হওয়া, এবং ধীরে ধীরে হৃদয়ের ভিতরে ভালোলাগার বীজ অঙ্কুরিত হওয়া—এসবই এক তরতাজা প্রেমের শুরুর চিত্র।

 

অনুচ্ছেদ ২: জীবন ও মৃত্যু—সম্পর্কের ধাক্কা কবিতার বাবার মৃত্যু সেই প্রেমের ভুবনে প্রথম বড় ধাক্কা। আরিফের পক্ষে ফেনি থেকে খবর না পেয়ে উপস্থিত না হওয়া আর কবিতার অভিমানী প্রশ্ন—"তুমি না এসে পারলে?"—এই বাক্যেই যেনো হাজারটা বিষণ্নতা লুকিয়ে আছে। ভালোবাসার গভীরতা তখনই বোঝা যায় যখন চোখের জল হয়ে যায় অনুভবের ভাষা।

 

অনুচ্ছেদ ৩: অনুচ্চারিত মুহূর্তে ভালোবাসা আখাউড়ার এক স্মৃতি—টিউবওয়েলের পাশে দাঁড়িয়ে অযু করার দৃশ্য। এমন এক সাধারণ মুহূর্তে অসাধারণ সৌন্দর্য আবিষ্কার করা যায় কেবল প্রেমিকের চোখেই। আরিফের বর্ণনায় কবিতার সেই রূপ যেনো হৃদয়স্পর্শী কাব্যের মতোই।

 

অনুচ্ছেদ ৪: প্রস্তাব ও প্রতিরোধ চাচাতো দুলাভাইয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হলেও পরিবারের সামাজিক রক্ষণশীলতা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। অন্য জায়গায় তড়িঘড়ি বিয়ে—এ যেনো প্রেমের করুণ পরিণতির পূর্বাভাস। তবু কোনো ঝামেলা না করা, সম্মান বজায় রাখা, এই নায়কোচিত আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রমাণ করে ভালোবাসা মানেই প্রাপ্তি নয়, আত্মত্যাগ।

 

অনুচ্ছেদ ৫: ছিন্ন যোগাযোগের বেদনাবিধুরতা ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া, কিছু প্রতিক্রিয়া জানানো, এবং এরপর ব্লক করে দেওয়া—এই রূপকথার বাস্তবতায় ফিরে আসা। যেনো ভালোবাসা এখন কেবল স্মৃতি, স্মৃতিতে এখন কেবল নিঃসঙ্গতা।

 

অনুচ্ছেদ ৬: উপহার ও কবিতার সাক্ষী "রমজানের সওগাত" নামে উপহার দেওয়া কবিতা যেনো ভালোবাসার প্রতীকচিহ্ন, অব্যক্ত অনুভবের ছন্দময় স্বাক্ষর। সেসব কবিতা আজও হৃদয় কাঁপায়, চোখে জল আনে।

 

অনুচ্ছেদ ৭: চূড়ান্ত বিচ্ছেদ আরিফ যখন মাস্টার্স পরীক্ষা দিচ্ছিল, তখন কবিতার বিয়ে হয়। ভাগ্য যেনো দুইজনকে এক রেখায় আনলো না, বরং দুই ভিন্ন পৃথিবীর দিকে চালিত করলো। কোনো অভিযোগ নয়, কেবল তাকদীরের ওপর আস্থা রেখে সংযমে মিশে থাকা এক ব্যর্থ প্রেমের চূড়ান্ত অধ্যায়।

 

অনুচ্ছেদ ৮: অনন্ত স্মরণে কবিতা, আজো ভুলতে পারেনি আরিফ। ভুলা যায় না। প্রেম যেমন অক্ষরহীন কবিতা, তেমনি কবিতা হয়ে আছেন তার হৃদয়ের শ্রেষ্ঠতম পঙ্‌ক্তি। যতদিন প্রেম শব্দটি উচ্চারিত হবে, ততদিন ভালোবাসা দিবানিশি-র কবিতার থাকবে আরিফের হৃদয়মণ্ডলে।

 

উপসংহার: এই গল্প কোনো সাধারণ ভালোবাসার নয়। এটি একটি আত্মত্যাগময়, গভীর, তীব্র ভালোবাসার দলিল। সমাজ, পরিবার, সংস্কার, বিশ্বাস, সব কিছুর মাঝে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার এই গল্প হৃদয়বিদারক হলেও অনন্য। আরিফ ও কবিতার এই প্রেম কেবল ব্যর্থতার কাহিনী নয়, তা এক আদর্শ প্রেমের ছায়া, স্মৃতির ধ্বনি, এবং চিরন্তন মানবিকতার পরিচয়।

ভালবাসি দিবা-নিশি _সূচীপত্র

আধুনিক প্রতিযোগিতার যুগে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গঠনের দিকনির্দেশনা

শিরোনাম: আধুনিক প্রতিযোগিতার যুগে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গঠনের দিকনির্দেশনা লেখক পরিচিতি: নাম: আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ শামছ্)...