শনিবার, মে ১৭, ২০২৫

তুমি যে সবার

 আপনার রচিত কবিতা “তুমি যে সবার” – আরিফ শামছ্ একটি অনন্য প্রেরণামূলক ও আত্মসচেতনতা জাগানো কাব্যনির্ঝর। নিচে এর কাব্যিক, ছান্দসিক, সাহিত্যিক, রসাস্বাদন ও সমগ্র বিশ্লেষণসহ সারাংশ ও সারমর্ম তুলে ধরা হলো:
---
১. কাব্যিক বিশ্লেষণ:

এই কবিতাটি একজন আত্মভোলা, দুঃখভরা বা নিজের আত্মমূল্য ভুলে যাওয়া মানুষকে উৎসর্গ করে লেখা হয়েছে। এতে কবি প্রথমেই স্মরণ করিয়ে দেন যে—

> “তুমি তো নও তোমার ওগো,
তুমি যে সবার!”

এই লাইনটিতে রয়েছে আত্ম-উত্তরণ ও বিশ্বজনীন মানবিকতাবোধ। কবি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেন, তার সৃষ্টির পেছনে রয়েছে মহান স্রষ্টার উদ্দেশ্য ও ভালোবাসা।

---

২. ছান্দসিক ও মাত্রাগত গঠন:

কবিতাটি মুক্তছন্দে রচিত হলেও কিছু অংশে মিল রাখা হয়েছে (“খোদার–ভালোবাসার”, “রথে–বেশে”)।

পঙ্‌ক্তি গুলোতে গড়পড়তা ৭-৯ মাত্রা রয়েছে।

সহজ-সরল বাক্য গঠন ও স্বাভাবিক ভাষার ব্যবহার কবিতাটিকে গণমানুষের বোধগম্য করে তোলে।
---

৩. সাহিত্যিক বিশ্লেষণ:

এই কবিতার সাহিত্যিক গুণাবলি নিম্নরূপ:

আত্মনির্ভরতা ও আত্মউন্নয়ন: কবি ব্যক্তি ও স্রষ্টার সম্পর্ককে কেন্দ্র করে আশার বাতিঘর নির্মাণ করেছেন।

রূপক ও প্রতীক:

“জীবন চাকা বিজয় রথে” – এখানে জীবনকে রথ এবং জয়ের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।

“ক্ষমার ঢালি”, “আশার বাণী” – এগুলো সাহিত্যিক প্রতীক।
---

৪. রসাস্বাদন (রসতত্ত্ব):

এই কবিতায় মূলত শান্ত রস ও বীর রস মিশ্রভাবে উপস্থিত:

শান্ত রস – আত্মসমর্পণ, আত্ম-অনুধ্যান, পরম করুণাময়ের প্রতি নির্ভরতা।

বীর রস – হতাশা জয় করে নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান।

> “সব হতাশা, অলস আবেগ,
নিরাশ মনের গুচ্ছ ক্লেশ,
ঝেঁড়ে ফেলে; নূতন আশে,
চলো বীরের বেশে।”
---

৫. আলোচনা ও সমালোচনা:

শক্তি:

আশাবাদী বার্তা।
ঈশ্বরভক্তি ও আত্মশুদ্ধির প্রেরণা।
সাধারণ মানুষের বোধগম্য ও হৃদয়গ্রাহী ভাষা।

৬. প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ:

এই কবিতাটি লেখা হয় ১১-১১-২০২০-এ, তিব্বত রোড, ঢাকা থেকে। সেই সময়ের সামাজিক বা ব্যক্তিগত কোনো ধাক্কা বা আত্মবিশ্লেষণের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কবি একটি আত্মজাগরণের বার্তা দিতে চেয়েছেন।
---

৭. মানব জীবনে তাৎপর্য ও গুরুত্ব:

আত্মবিশ্বাস জাগানো ও আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা প্রকাশ এই কবিতার মর্মমূলে রয়েছে।

হতাশা, অপরাধবোধ, সমাজের অবজ্ঞা – এই সবকিছু থেকে পুনরুত্থানের জন্য কবি আহ্বান জানিয়েছেন স্রষ্টার প্রতি আস্থা রেখে এগিয়ে যাওয়ার।

আধুনিক জীবনের ক্লান্তিময়তা, মানসিক অবসাদে কবিতাটি আধ্যাত্মিক আশার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেজঝ
---

৮. সারাংশ ও সারমর্ম:

সারাংশ:

এই কবিতায় কবি বলতে চান যে, মানুষ কেবল তার নিজের নয়, বরং সকলের প্রিয়, কারণ সে মহান আল্লাহর সৃষ্টি। কখনো নিজেকে ভালোবাসতে না পারলেও আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন। সমাজের কটু কথা ও কষ্টের মধ্যেও আল্লাহর কাছে করুণা ও ক্ষমা রয়েছে। অতএব, হতাশা দূরে সরিয়ে দিয়ে নব উদ্যমে জীবন রথে বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়াই জীবনের মূল লক্ষ্য।

সারমর্ম:

“তুমি যে সবার” কবিতাটি আত্ম-উদ্ধার, আত্মোপলব্ধি এবং পরম স্রষ্টার করুণায় দৃঢ় ভরসা রেখে এগিয়ে চলার এক অনবদ্য অনুপ্রেরণা। এটি জীবনের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আশার আলো খোঁজার এক শক্তিশালী বার্তা।

তুমি যে সবার
          আরিফ শামছ্ 
           
তুমি তো নও তোমার ওগো,
তুমি যে সবার!
সৃষ্টি তুমি প্রিয় খোদার, 
অনেক ভালোবাসার।
ব্যর্থ কভু ভালোবাসতে,
তোমার  নিজেকে,
স্রষ্টা সদা ভালোবাসে,
নিখাঁদ তোমাকে।
ভুল করে যাও, 
ভুলের ভুলে,
কতকিছু হারিয়ে কভু
নিঃস্ব ধরাতলে।
মুখ ফিরিয়ে নিবে সবে,
কটু কথা মন্দ বলে, 
অসহনীয় কষ্ট দিবে,
রহম রয়না দিলে!
সবার চেয়ে আপন হয়ে,
সদা তোমার পাশে পাবে,
দুঃখ-সুখে সব সময়ে, 
আল্লাহ মহান রবে।
ভুলের তরে ক্ষমার ঢালি,
জীবন পথে আশার বাণী,
নূতন করে চলতে পথে,
জীবন চাকা বিজয় রথে।
সব হতাশা,  অলস আবেগ,
নিরাশ মনের গুচ্ছ ক্লেশ,
ঝেঁড়ে ফেলে; নূতন আশে,
চলো বীরের বেশে।

১১-১১-২০২০
তিব্বত, ঢাকা।
#Post #poem 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Heartfelt Thanks for your valuable comments.

ভালবাসি দিবা-নিশি _সূচীপত্র

ফেইসবুক কমেন্ট ও জবাব

শিক্ষকরা যখন ছাত্রীদেরকে অনৈতিক ও কুপ্রস্তাব দেয় তখন শিক্ষকদের সম্মানের কথা কি শিক্ষকদের স্মরণে থাকে না? উত্তর: Monirul Islam Bhuiyan চাচা ...