সুন্দর শিরোনাম ও কবিতার কাব্যিক,ছান্দসিক, মাত্রা, সাহিত্যিক, রসাস্বাদন ও আলোচনা, সমালোচনা, পর্যালোচনা, প্রেক্ষাপট,মানব জীবনে তাৎপর্য ও গুরুত্বের বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা দাও একটি প্রবন্ধ সহকারে।
পূর্বে তোমার ঈমান- অস্ত্র সবি ছিল চোখ ধাঁধানো;
আজ কি হলো ভাইরে তোমার, সব কিছুতেই হেয় হারালো !
হালাল ছেড়ে হারাম খেয়ে, নাই ঈমানের দৃঢ়তা,
প্রতিবাদী কণ্ঠে কেনো দ্রোহের আগুন জ্বলেনা !
সাহস খনি হারিয়ে গেলো, নাকি কাউকে সঁপে দিলি !!!
ভীরু ভীরু ত্রস্তপদে বাঁচবে নিজে? না কা'রে বাঁচাবি?
দুর্বলতার সুযোগ পেয়ে, চামচিকারা কী করে !!!
শের এ খোদার ঘুম ভাঙ্গানো; উচিত হবে কবে???
নাও তব সে পূর্ণ ঈমান, বর্ম পড় আমলের,
নাও তুলে সেই তলোয়ার, রাঙ্গানো ঐ বিশ্বাসের।
মুক্ত তোমায় করবেনা কেউ, মারবে বেঁধে বেঁধে,
বিশ্বাস যদি নাইবা হবে, তাকাও বিশ্ব মাঝে।
জাগাও তুমি, জেগে ওঠো সিংহ শার্দূল সব,
ঝাঁপিয়ে পড়ো, বিদায় করো পাষাণ পাপী যত।
যালিমদের আজ দাও পাঠিয়ে, অগ্নি- ভরা খাঁদে,
ন্যায়ের খড়গ কত নিঠুর দেখুক বিশ্ব-সবে।
--------আরিফ শামছ্
২২.১১.১৬ ঈসায়ী সাল।
বিকাল ৫:১৫।
ফখরে বাঙ্গাল নিবাস,
বাড়ী# ১২৩৪, ওয়ার্ড# ১২,
ভাদুঘর, সদর, বি.বাড়ীয়া-৩৪০০।
ChatgptAI2025:
প্রবন্ধ শিরোনাম:
“ঈমানের তলোয়ার: প্রতিবাদের কাব্যিক আহ্বান”
কবিতার কাব্যিক আলোচনা ও প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ
আরিফ শামছ্-র লেখা এই কবিতাটি এক গাঢ় আত্মবিশ্লেষণী ও প্রতিবাদী উচ্চারণ, যেখানে একজন বিশ্বাসী হৃদয়ের ঈমান-ক্ষয় এবং তার প্রতিকার নিয়ে তীব্র সাহিত্যিক ও ভাবপূর্ণ চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে। কবিতাটি সময়ের প্রেক্ষাপটে বিশ্বাসহীনতা, আত্মসমর্পণ, ভীরুতা ও নৈতিক পতনের বিরুদ্ধে এক সাহসী জাগরণ-স্বর।
এই কবিতাটি লেখা হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর, বিকাল ৫:১৫-এ, যা সময় ও স্থাননির্ভর এক দার্শনিক ও সমাজ-রাজনৈতিক আবহে রচিত। লেখকের নিজস্ব আবাসভূমি “ফখরে বাঙ্গাল নিবাস”-এর ঠিকানায় লেখা এই কবিতাটি যেন সমাজ-চেতন জাগানোর এক ব্যক্তিগত অথচ সর্বজনীন প্রয়াস।
ছন্দ, মাত্রা ও শব্দরীতির সৌন্দর্য
ছন্দময়তায় কবিতাটি সনাতন গীতিকবিতার ঢঙে লেখা, তবে কোথাও কোথাও সপ্রতিভ বিরাম ও ছেদ এনে আবেগকে জোরালো করা হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ:
"হালাল ছেড়ে হারাম খেয়ে, নাই ঈমানের দৃঢ়তা,"
"প্রতিবাদী কণ্ঠে কেনো দ্রোহের আগুন জ্বলেনা!"
এই চরণগুলোতে চার, পাঁচ ও ছয় মাত্রার মিলন ঘটে, যা পাঠকের হৃদয়ে একধরনের গীতল কিন্তু বেদনাময় ধ্বনি তৈরি করে। ধ্বনিতত্ত্ব অনুযায়ী এখানে ‘স্বর-সংঘাত’ ব্যবহার করে সৃষ্ট হয়েছে উত্তেজনা ও মননশীলতা।
সাহিত্যিক রস ও রসাস্বাদন
এখানে ‘বীর রস’ ও ‘করুণা রস’ পাশাপাশি কাজ করে।
-
বীর রসে কবি আহ্বান করেছেন:
"নাও তব সে পূর্ণ ঈমান, বর্ম পড় আমলের,"
"ঝাঁপিয়ে পড়ো, বিদায় করো পাষাণ পাপী যত।" -
করুণা রস দেখা যায় যখন কবি হাহাকার করছেন একজন ঈমানদার মুসলমানের পতন দেখে:
"আজ কি হলো ভাইরে তোমার, সব কিছুতেই হেয় হারালো !"
এই দুই রসের যুগলবন্দী পাঠকের মনে এক গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম।
সমালোচনামূলক পর্যালোচনা
এই কবিতার সবচেয়ে বড় শক্তি এর বক্তব্যের নির্ভীকতা। এক সাহসী আত্মসমালোচনার মধ্য দিয়ে লেখক কেবল নিজেকে নয়, পুরো মুসলিম সমাজের আত্মিক অবনতির চিত্র তুলে ধরেছেন। তবে কিছু শব্দচয়ন (যেমন "চামচিকারা") সাহিত্যিক সৌন্দর্যকে কিছুটা খর্ব করতে পারে বলেই মত দেয়া যায়। এটিকে আরও প্রতীকী শব্দ দিয়ে উপস্থাপন করলে শিল্পরূপ আরো পরিণত হতো।
মানব জীবনে তাৎপর্য ও গুরুত্ব
এই কবিতা একটি সামাজিক বিপ্লবের আহ্বান। বর্তমান সময়ে যখন সত্যকে চাপা দিয়ে মিথ্যার বাজার গরম, তখন এই কবিতাটি যেন এক তলোয়ার-সম আহ্বান:
- নিজের বিশ্বাসকে দৃঢ় করো,
- অন্যায়-জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও,
- কণ্ঠে প্রতিবাদের আগুন জ্বালাও।
বিশেষত তরুণ সমাজের মাঝে ধর্মীয় আত্মপরিচয়, নৈতিকতা এবং সাহসিকতার প্রশ্নে এই কবিতাটি শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী।
উপসংহার
‘ঈমানের তলোয়ার’ কবিতাটি কেবল একটি কবিতা নয়, এটি একটি মর্মস্পর্শী আত্মজিজ্ঞাসা ও প্রতিবাদের ঘন্টার ধ্বনি। এটি একাধারে সাহিত্য, সমাজচেতনা ও আধ্যাত্মিক ভাবনার সংমিশ্রণে অনন্য। এই কবিতার অন্তর্নিহিত বার্তা আজকের বিশ্বে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক—বিশ্বাস, সাহস এবং প্রতিবাদের মাধ্যমে এক নতুন আলোর পথ খুঁজে পাওয়ার জন্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Heartfelt Thanks for your valuable comments.