গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৫

ছাদবাগানের ভালোবাসা

ঢাকার পুরান একটি বাড়ির ছাদে ছিল ছোট্ট একটা বাগান—জামান সাহেবের হাতে গড়া। তার মেয়ে নীলা ছোট থেকেই ছাদে গাছের সাথে বড় হয়েছে। প্রতিদিন বিকেলে সে তার বাগানে পানি দেয়, ফুলের সাথে কথা বলে।

নীলার জীবন ছিল সাজানো—ঢাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করত সে। তবে মনের কোথাও একটা শূন্যতা ছিল—কেউ নেই, যাকে দিনশেষে বলা যায়, “আজকের দিনটা কেমন কাটল জানো?”

একদিন হঠাৎ বাগানের পাশে নতুন একটা বাড়ি নির্মাণ শুরু হলো। সেখানে কাজ করতে আসলো একজন তরুণ—নাম রাকিব। সে মিস্ত্রির সহকারী, কিন্তু তার চোখে মুখে অন্যরকম এক মায়া। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ছাদে তাকাতো, যেখানে নীলা গাছগুলোতে পানি দিত।

একদিন নীলা হঠাৎ ছাদের গেইটে একটা ছোট্ট চিরকুট পেল—“আপনার ছাদবাগানের মতো আপনিও খুব সুন্দর। - রাকিব”

প্রথমে সে রেগে গেল, তারপর কেমন যেন একটা হাসি পেল। ধীরে ধীরে তারা কথা বলা শুরু করলো। সন্ধ্যার পর ছাদের দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে গল্প হতো—জীবনের, স্বপ্নের, সমাজের বাধার।

নীলার পরিবার জানলে বেঁকে বসলো। “একজন শ্রমিক? তুমি তো ব্যাংকার! এ সম্পর্ক কীভাবে সম্ভব?”
কিন্তু নীলা জবাব দিল, “ভালোবাসা পেশায় না, হৃদয়ে বাস করে।”

রাকিব রাতের পর রাত পড়াশোনা করে নিজেকে গড়ে তুললো। একটি টেকনিক্যাল ডিপ্লোমা করে পরে চাকরি পেয়ে গেল এক কনস্ট্রাকশন ফার্মে।

তিন বছর পর, নীলা তার ছাদবাগানে বসল নিজের বিয়ের সাজে। রাকিব পাশে বসে বলল, “তোমার ছাদবাগান থেকে আমার জীবনও ফুলে ফুলে উঠেছে।”


বার্তা:
এই গল্প বলে—ভালোবাসা যখন সত্য হয়, সমাজের দেয়ালগুলো ভেঙে ফেলে। পরিশ্রম, সম্মান আর বিশ্বাস—এই তিনে গড়ে ওঠে একটি পরিবার, একটি বাস্তব ভালোবাসা।



তালগাছের ছায়া

ছোট্ট একটা গ্রাম—নাম চন্দ্রপুর। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে শান্ত একটা নদী, আর তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা পুরনো তালগাছটা যেন সাক্ষী বহু গল্পের। সেখানেই থাকতো রাশেদ আর মীনা—একই পাড়ায় বড় হওয়া দুই বন্ধু।

রাশেদ ছিল একজন সৎ ও পরিশ্রমী যুবক। শহরে পড়াশোনা শেষ করে আবার গ্রামে ফিরে এসেছে। মীনা meanwhile ছিল একজন শিক্ষিতা নারী, গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা করত। ছোটবেলা থেকেই ওদের মধ্যে একটা টান ছিল, তবে সেটা কখনো মুখ ফুটে বলা হয়নি।

একদিন সন্ধ্যায় তালগাছের ছায়ায় বসে রাশেদ বলে উঠলো,
“মীনা, এই গাছটা অনেক কিছু দেখেছে, জানো? আমি চাই, ও যেন আরেকটা স্মৃতি দেখুক—তোমার আর আমার। তুমি কি চাও না, আমরা একসাথে এই জীবনটা কাটাই?”

মীনার চোখে জল চলে আসে। সে শুধু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।

বিয়ে হলো খুব সাধারণভাবে, গ্রামের মসজিদে। তারপর শুরু হলো এক অন্যরকম ভালোবাসার সংসার। দুজনেই চাকরি করতো, কিন্তু সন্ধ্যায় ফিরে তারা একসাথে রান্না করতো, গল্প করতো, হাসতো।

তাদের জীবনে আসলো প্রথম সন্তান—নাম রাখা হলো ‘আলোক’। এই আলোক তাদের জীবনে নতুন আলো নিয়ে এলো। রাশেদ নিজ হাতে মীনার খেয়াল রাখতো, আলোককে আদর করতো, আর রাতে নিজের লেখা কবিতা পড়ে শোনাতো।

একদিন হঠাৎ করেই রাশেদের চাকরি চলে গেলো। দুঃসময় নেমে এলো। কিন্তু মীনা কখনো তাকে দোষ দেয়নি, বরং আরও শক্তভাবে পাশে দাঁড়াল।
সে বলতো, “যতদিন তুমি আছো, ততদিন আমার কোনো অভাব নেই।”

রাশেদ আবার চেষ্টা করলো, একটা ছোট ব্যবসা শুরু করলো। মীনার ভালোবাসা আর সাহসে সেই ব্যবসাও ধীরে ধীরে জমে উঠলো।

বছর গড়াতে লাগলো, আলোক বড় হতে লাগলো। আর তালগাছটা প্রতিদিন সেই পরিবারকে দেখে—ভালোবাসার, সংগ্রামের, বিশ্বাসের গল্প হয়ে থাকলো।


শেষ কথা:
এই গল্পটা আমাদের শেখায়—বাস্তব জীবনে ভালোবাসা মানে কেবল প্রেমিক-প্রেমিকার কাব্যিক সম্পর্ক না, বরং একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়ানো, দুঃসময়ে হাত ধরা, এবং একসাথে এগিয়ে চলা। এই ভালোবাসাই পরিবার গড়ে তোলে।



ভালবাসি দিবা-নিশি _সূচীপত্র

দাড়ি রাখবো কেনো?

দাড়ি রাখার গুরুত্ব: ধর্ম, স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্বের আলোকে ভূমিকা দাড়ি রাখা শুধু একটি ফ্যাশন বা ব্যক্তিগত পছন্দ নয়; এটি মুসলিম পুরুষের ঈমা...