ঢাকার পুরান একটি বাড়ির ছাদে ছিল ছোট্ট একটা বাগান—জামান সাহেবের হাতে গড়া। তার মেয়ে নীলা ছোট থেকেই ছাদে গাছের সাথে বড় হয়েছে। প্রতিদিন বিকেলে সে তার বাগানে পানি দেয়, ফুলের সাথে কথা বলে।
নীলার জীবন ছিল সাজানো—ঢাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করত সে। তবে মনের কোথাও একটা শূন্যতা ছিল—কেউ নেই, যাকে দিনশেষে বলা যায়, “আজকের দিনটা কেমন কাটল জানো?”
একদিন হঠাৎ বাগানের পাশে নতুন একটা বাড়ি নির্মাণ শুরু হলো। সেখানে কাজ করতে আসলো একজন তরুণ—নাম রাকিব। সে মিস্ত্রির সহকারী, কিন্তু তার চোখে মুখে অন্যরকম এক মায়া। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ছাদে তাকাতো, যেখানে নীলা গাছগুলোতে পানি দিত।
একদিন নীলা হঠাৎ ছাদের গেইটে একটা ছোট্ট চিরকুট পেল—“আপনার ছাদবাগানের মতো আপনিও খুব সুন্দর। - রাকিব”
প্রথমে সে রেগে গেল, তারপর কেমন যেন একটা হাসি পেল। ধীরে ধীরে তারা কথা বলা শুরু করলো। সন্ধ্যার পর ছাদের দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে গল্প হতো—জীবনের, স্বপ্নের, সমাজের বাধার।
নীলার পরিবার জানলে বেঁকে বসলো। “একজন শ্রমিক? তুমি তো ব্যাংকার! এ সম্পর্ক কীভাবে সম্ভব?”
কিন্তু নীলা জবাব দিল, “ভালোবাসা পেশায় না, হৃদয়ে বাস করে।”
রাকিব রাতের পর রাত পড়াশোনা করে নিজেকে গড়ে তুললো। একটি টেকনিক্যাল ডিপ্লোমা করে পরে চাকরি পেয়ে গেল এক কনস্ট্রাকশন ফার্মে।
তিন বছর পর, নীলা তার ছাদবাগানে বসল নিজের বিয়ের সাজে। রাকিব পাশে বসে বলল, “তোমার ছাদবাগান থেকে আমার জীবনও ফুলে ফুলে উঠেছে।”
বার্তা:
এই গল্প বলে—ভালোবাসা যখন সত্য হয়, সমাজের দেয়ালগুলো ভেঙে ফেলে। পরিশ্রম, সম্মান আর বিশ্বাস—এই তিনে গড়ে ওঠে একটি পরিবার, একটি বাস্তব ভালোবাসা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Heartfelt Thanks for your valuable comments.