“শিক্ষকদের অধিকারের জন্য তাদেরই আন্দোলন করতে হবে কেনো?” — এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে আমরা সমাজ, রাষ্ট্র ও নীতিনির্ধারকদের মনস্তত্ত্বের গভীরে পৌঁছে যাই।
🧩 ১. সমাজে শিক্ষকের অবস্থানের পরিবর্তন
আগে শিক্ষক ছিলেন সমাজের “অভিভাবক” — নৈতিক ও জ্ঞানের দিক থেকে নেতৃত্বদাতা।
কিন্তু আধুনিক সমাজে অর্থনৈতিক মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক স্বার্থ শিক্ষককে “সেবাদাতা কর্মচারী” হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।
ফলে তাঁদের ন্যায্য দাবি বা সম্মান আদায়ের জন্যও এখন নিজেদেরই আওয়াজ তুলতে হয়।
⚖️ ২. রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের উদাসীনতা
রাষ্ট্র অনেক সময় শিক্ষা খাতকে অর্থনৈতিক উৎপাদনের অংশ নয়, বরং ব্যয় হিসেবে দেখে।
এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আসে উপেক্ষা — বেতন বৈষম্য, সুবিধার ঘাটতি, চাকরি অনিশ্চয়তা ইত্যাদি।
তাই শিক্ষকরা বাধ্য হন নিজেরাই আন্দোলনে নামতে, কারণ
👉 “যে চুপ থাকে, তার অধিকারও চুপ হয়ে যায়।”
🧠 ৩. শিক্ষক সমাজের আত্মমর্যাদাবোধ
একজন শিক্ষক জ্ঞান ও নৈতিকতার বাহক।
যখন তিনি নিজের অধিকার নিয়ে দাঁড়ান, তখন তিনি আসলে একটি ন্যায় ও মর্যাদার শিক্ষা দেন সমাজকে।
তাঁদের এই আন্দোলন কেবল আর্থিক দাবি নয় —
বরং “সমাজে শিক্ষার সম্মান ফিরিয়ে আনার আহ্বান”।
📢 ৪. জনগণের নীরবতা ও সামাজিক সংহতির অভাব
বেশিরভাগ মানুষ শিক্ষককে শ্রদ্ধা করে, কিন্তু তাঁদের বাস্তব সমস্যায় পাশে দাঁড়ায় না।
এই সামাজিক উদাসীনতা শিক্ষকদের একা করে দেয়।
তাই আন্দোলন তাঁদের নিজেদেরই হাতে রাখতে হয়,
যাতে জনগণও একসময় জেগে ওঠে এবং বুঝতে পারে —
শিক্ষক শক্তিশালী না হলে জাতিও দুর্বল।
🌾 ৫. ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে
ইসলামে জ্ঞানী ব্যক্তিকে “আলিম” বলা হয়েছে এবং তাঁদের মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চ।
কিন্তু একই সঙ্গে ইসলাম বলে —
“যে নিজের অধিকার রক্ষা করে না, সে অন্যের অধিকারও রক্ষা করতে পারবে না।”
অতএব, ন্যায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ইসলামেও বৈধ ও প্রশংসনীয়।
🔖 সারসংক্ষেপ:
শিক্ষকরা আন্দোলন করেন কারণ তাঁরা জানেন —
যদি শিক্ষকের কণ্ঠ নীরব হয়, জাতির ভবিষ্যৎও নীরব হয়ে যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Heartfelt Thanks for your valuable comments.