👤 আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ শামছ্) প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক 📚 শিক্ষাগত যোগ্যতা: বি.এস.এস (অনার্স), অর্থনীতি — জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, এম.এস.এস (অর্থনীতি) — জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বি.এড — জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ, এম.এড — ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়| 🏫 পেশাগত অভিজ্ঞতা: প্রাক্তন শিক্ষক, ব্লু-বার্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাটিকাটা, ঢাকা সেনানিবাস। প্রাক্তন শিক্ষক, হলি ক্রিসেন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা, ঢাকা। 📧 Email: arifshamsacademy@gmail.com Mobile: +966510429466
শিরোনাম
- ভালোবাসি দিবানিশি (156)
- প্রবন্ধ (52)
- ইসলামিক (41)
- Videos | ভিডিও (40)
- জীবন জাগার গান (29)
- স্রষ্টা ও সৃষ্টির যোগাযোগ (28)
- চির বিপ্লবী (27)
- আন্তর্জাতিক (23)
- কবিতা সমগ্র (18)
- বিশ্লেষণধর্মী (18)
- তারায় তারায় কবিতা (15)
- স্বপ্নের আদ্যোপান্ত (13)
- LOVING DAY TO NIGHT (12)
- কবিতা (12)
- কবিতার স্বর্গ-কানন (12)
- অর্থনৈতিক (11)
- NEWS (9)
- আধ্যাত্মিক|Spiritual (9)
- বিদ্রোহী তুমি বিপ্লবী (8)
- গল্প (6)
- জাতীয় (5)
- দৈনিক মহাবিশ্ব (5)
- Images & Photo (4)
- আমার বাবা (4)
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (4)
- Career (2)
- অন্যান্য | Others (2)
- উপন্যাস (2)
- স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা (2)
- Add & Circulars (1)
- Certificate and Achievements (1)
- Circular| বিজ্ঞাপন (1)
- Revolutionary-Rebel (1)
- শিক্ষা ও শিক্ষক (1)
মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৫
উমরাহ হজের নিয়ম, দোয়া ও প্রাসঙ্গিক বিষয়
রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫
আল্লাহর ধারাবাহিক সৃষ্টিশীলতা: কোরআন, তাফসীর ও আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে
(একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণাত্মক ও দার্শনিক প্রবন্ধ)
🕋 আল্লাহর ধারাবাহিক সৃষ্টিশীলতা: কোরআন, তাফসীর ও আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে
লেখক: আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ শামছ্)
🔷 ১. ভূমিকা: “সৃষ্টি” এককালীন ঘটনা না কি চলমান বাস্তবতা?
মানুষ যুগে যুগে প্রশ্ন করেছে—আল্লাহ কি একবার সৃষ্টি করে থেমে গেছেন, নাকি এখনো সৃষ্টি ও পরিবর্তনের কাজ করে চলেছেন?
বিজ্ঞান বলে—মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে, জীবন বিবর্তিত হচ্ছে, মানুষ প্রতিনিয়ত নতুন চিন্তা, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতি সৃষ্টি করছে।
ধর্ম বলে—“আল্লাহ প্রতিদিনই এক কাজে নিয়োজিত” (সূরা আর-রহমান ৫৫:২৯)।
এই দুয়ের মধ্যে একটি আশ্চর্য মিল আছে—সৃষ্টি একবারে শেষ হয়নি; এটি অব্যাহত।
🔷 ২. আল্লাহর সৃষ্টিশীল ক্ষমতার কোরআনি ঘোষণা
🌙 ক. সূরা ইয়াসিন ৩৬:৮২
إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَآ أَرَادَ شَيْـًۭٔا أَن يَقُولَ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ
“তিনি যখন কিছু ইচ্ছা করেন, তখন শুধু বলেন ‘হও’, আর তা হয়ে যায়।”
এই আয়াত “সৃষ্টির এককালীন ঘোষণা” নয়, বরং “সৃষ্টির চিরন্তন ধারা”র নিদর্শন।
তাফসীরকারগণ (ইবনে কাসির, রাযী, কুরতুবি) বলেন—আল্লাহর ‘Kun Fayakun’ হচ্ছে অবিরাম আদেশ যা প্রতিটি মুহূর্তে সৃষ্টিতে কার্যকর থাকে।
🌙 খ. সূরা আর-রহমান ৫৫:২৯
كُلَّ يَوْمٍۢ هُوَ فِى شَأْنٍۢ
“প্রতিদিন তিনি এক কাজে নিয়োজিত।”
তাফসীরে বলা হয়—আল্লাহ প্রতিনিয়ত জীবন দান করেন, মৃত্যু দেন, নতুন সৃষ্টি আনেন, পুরাতন ধ্বংস করেন, রিজিক বণ্টন করেন।
অর্থাৎ, “সৃষ্টি” আল্লাহর এককালীন কাজ নয়; বরং চলমান ক্রিয়া।
🔷 ৩. ইসলামি দার্শনিক ব্যাখ্যা: আল-গাজালী, ইবন আরাবি ও মুল্লা সাদরা
🕊 আল-গাজালী (১০৫৮–১১১১ খ্রি.)
তিনি বলেন—“যা কিছু অস্তিত্বশীল, তা আল্লাহর ক্রমাগত ইচ্ছার ফল; যদি এক মুহূর্তের জন্যও আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা প্রত্যাহার করেন, বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে।”
এটি “Continuous Creation Theory” নামে পরিচিত।
🌌 ইবন আরাবি (মুহ্যিদ্দিন)
তিনি বলেন—“Every moment, creation is renewed (Tajaddud al-Khalq).”
অর্থাৎ, প্রতিটি সেকেন্ডে আল্লাহ নতুনভাবে সৃষ্টিকে স্থাপন করেন; আমরা শুধু ধারাবাহিকতার ভ্রান্তি দেখি।
🪶 মুল্লা সাদরা (১৬শ শতাব্দী)
তাঁর দর্শন “Harakat al-Jawhariyya” (Substantial Motion) অনুযায়ী—
সব বস্তু নিজ অস্তিত্বের গভীরে ক্রমাগত পরিবর্তিত ও নবায়িত হচ্ছে; তাই সৃষ্টিও অবিরাম চলছে।
🔷 ৪. মহাবিশ্ব ও আধুনিক কসমোলজি: কুরআনের সাথে মিল
বিজ্ঞান বলে—মহাবিশ্বের শুরু হয়েছিল Big Bang দিয়ে (প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে), এবং আজও তা প্রসারিত (Expanding) হচ্ছে।
কুরআনেও একই ধারণা:
وَالسَّمَآءَ بَنَيْنَـٰهَا بِأَيْيْدٍۢ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
“আমরা আসমানকে শক্তি দ্বারা সৃষ্টি করেছি, এবং অবশ্যই আমরা তাকে প্রসারিত করছি।”
— সূরা আয-যারিয়াত ৫১:৪৭
এটি Universe Expansion তত্ত্বের সরাসরি প্রতিধ্বনি।
অর্থাৎ, আল্লাহ শুধু সৃষ্টি করেননি—তিনি তা চলমান রেখেছেন।
🔷 ৫. কোয়ান্টাম জগত ও আল্লাহর সূক্ষ্ম হস্তক্ষেপ
কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানে দেখা যায়—
- পদার্থের ক্ষুদ্রতম অংশ “কণা” ও “তরঙ্গ” দুইভাবেই আচরণ করে।
- এই আচরণ “নির্দেশনা-বিহীন সম্ভাবনা” নয়; বরং এক নির্দিষ্ট নিয়মের অধীনে।
বিজ্ঞানীরা একে বলেন “Quantum Order” বা “Hidden Harmony”।
ধর্মীয় দৃষ্টিতে এটি আল্লাহর “সূক্ষ্ম হিকমত” (divine wisdom) — যা মানুষের চেতনার বাইরে থেকেও জগতের শৃঙ্খলা বজায় রাখে।
🔷 ৬. জীববিজ্ঞান: ভ্রূণ থেকে মানুষ — ধারাবাহিক সৃষ্টি
কুরআনে বলা হয়েছে:
“আমি মানুষকে মাটির নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি; তারপর তাকে নিরাপদ স্থানে (গর্ভে) রাখি, তারপর বীজবিন্দু থেকে রক্তবিন্দু, তারপর মাংসপিণ্ডে রূপান্তর করি…”
— সূরা আল-মুমিনুন ২৩:১২–১৪
আধুনিক Embryology ও Stem Cell Biology এই প্রক্রিয়াকে হুবহু ব্যাখ্যা করে:
- একটি কোষ থেকে ৩৭ ট্রিলিয়ন কোষের জটিল দেহ গঠিত হয়,
- কোষ বিভাজন, নিয়ন্ত্রণ, ও DNA কোডের মাধ্যমে প্রতিটি অঙ্গ ধাপে ধাপে গড়ে ওঠে,
- যা কেবল “নিয়ম” নয়, বরং “নকশা”র পরিচায়ক — অর্থাৎ বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ সৃজন (Intelligent Design)।
🔷 ৭. মনোবিজ্ঞান ও সৃষ্টিশীলতা: মানুষের মস্তিষ্কে আল্লাহর “সৃষ্টি ক্ষমতা”
মানবমস্তিষ্ক প্রতিনিয়ত নিজেকে নবায়ন করছে — এটাকে বলে Neuroplasticity।
শিক্ষা, অনুশীলন, তাওবা, ধ্যান বা দোয়া—সবকিছুই মস্তিষ্কে নতুন স্নায়ু-সংযোগ (neural connections) তৈরি করে।
এটাই মানুষের সৃষ্টিশীলতা — যা আল্লাহর দেওয়া এক বিশেষ ক্ষমতা।
কুরআনে বলা হয়েছে:
“আমি আদমকে নিজের রূহ (আত্মা) থেকে ফুঁকে দিয়েছি।” — সূরা সাজদাহ ৩২:৯
অর্থাৎ, মানুষের চিন্তা, কল্পনা, আবিষ্কার — সবই আল্লাহর সৃষ্টিশীলতার অংশবিশেষ।
🔷 ৮. নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিশ্লেষণ
আল্লাহ যদি এখনো সৃষ্টিশীল হন, তাহলে:
- প্রতিটি মুহূর্তই আল্লাহর নতুন কর্মের সাক্ষী।
- মানুষও তাঁর খলিফা হিসেবে “সৃষ্টির কাজ” চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত।
- বিজ্ঞানের আবিষ্কার, চিকিৎসা, প্রযুক্তি—সবই তাঁর নির্দেশনার ফল, যদি তা মানবকল্যাণে হয়।
- “নবত্ব” বা Innovation তখন আর ধর্মবিরোধী নয়; বরং আল্লাহর দান।
🔷 ৯. ধারাবাহিক সৃষ্টির তিন স্তর
স্তর | ব্যাখ্যা | উদাহরণ |
---|---|---|
১️⃣ পদার্থিক | আল্লাহ মহাবিশ্বকে ক্রমে প্রসারিত করছেন | নক্ষত্রের জন্ম, গ্যালাক্সির সংঘর্ষ |
২️⃣ জৈবিক | জীবনের রূপান্তর ও নতুন প্রজাতি | ভ্রূণবিকাশ, জিনের অভিযোজন |
৩️⃣ মানসিক–আধ্যাত্মিক | মানুষের আত্মা, নৈতিকতা, ও সৃজনশক্তি | শিল্প, বিজ্ঞান, ঈমানের নবায়ন |
🔷 ১০. উপসংহার: “আল্লাহ এখনো সৃষ্টি করছেন”
“আল্লাহর প্রতিটি দিনই নতুন সৃষ্টির দিন।” — সূরা আর-রহমান ৫৫:২৯
অতএব:
- সৃষ্টিকর্ম থেমে নেই।
- প্রতিটি নিশ্বাসে, প্রতিটি কোষে, প্রতিটি চিন্তায়, প্রতিটি মহাজাগতিক তরঙ্গে আল্লাহর সৃষ্টি চলছে।
- আধুনিক বিজ্ঞান এই ধারাবাহিক পরিবর্তনের সাক্ষ্য দিচ্ছে, আর ইসলাম তা আল্লাহর সৃষ্টিশীল বাস্তবতা হিসেবে ব্যাখ্যা করে।
🌿 যেখানে বিজ্ঞান “How” বলে — ধর্ম বলে “Who” ও “Why”।
দুইটি একে অপরের পরিপূরক, বিরোধী নয়।
✨ সারসংক্ষেপ:
- আল্লাহ এককালীন স্রষ্টা নন; তিনি চলমান বাস্তবতার ধারাবাহিক স্রষ্টা।
- কুরআন, তাফসীর, ইসলামি দর্শন এবং আধুনিক বিজ্ঞান—সবই এই সত্যকে সমর্থন করে।
- মহাবিশ্ব, জীবন, ও চেতনার প্রতিটি স্তরেই তাঁর “Kun Fayakun” আজও প্রতিধ্বনিত।
চ্যাটজিপিটি
আল্লাহর ধারাবাহিক সৃষ্টিশীলতা — আধুনিক বিশ্লেষণ
সকল ধর্মমতে আল্লাহর পরিচয় ও সৃজনশীলতা
সকল ধর্মমতে আল্লাহর পরিচয়, প্রয়োজনীয়তা এবং সৃষ্টির বিস্তারিত ইতিহাস। উনি কি এখনও সৃষ্টিশীল কাজ করেন?
জবাব: অসাধারণ প্রশ্ন করেছেন — এটি ধর্মতত্ত্ব, দর্শন, এবং আধ্যাত্মিকতার কেন্দ্রবিন্দু। নিচে আমি ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করছি সব প্রধান ধর্মমতে “আল্লাহ” বা সৃষ্টিকর্তা কে, কেন তাঁর অস্তিত্ব প্রয়োজনীয়, কিভাবে সৃষ্টির সূচনা হয়েছে, এবং তিনি এখনো কি “সৃষ্টিশীল কাজ” (Creative Act) করেন কিনা — তা নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ দিচ্ছি।
🌕 ১. আল্লাহ / ঈশ্বর / সৃষ্টিকর্তা : সার্বজনীন পরিচয়
ধর্ম | নাম | অর্থ |
---|---|---|
ইসলাম | الله (আল্লাহ) | একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, চিরঞ্জীব, নিরাকার, সর্বশক্তিমান, যিনি শাশ্বত ও সৃষ্টির অতীত |
খ্রিস্টধর্ম | God / Father / Holy Trinity | পিতা, পুত্র (Jesus), ও পবিত্র আত্মা — তিন সত্তায় এক ঈশ্বর |
ইহুদি ধর্ম (Judaism) | Yahweh (יהוה), Elohim | “আমি আছি”, চিরন্তন সত্তা, যিনি ইসরায়েল জাতিকে পথ দেখান |
হিন্দু ধর্ম | ব্রহ্ম (Brahman) | সর্বব্যাপী চেতনা বা সত্তা, যিনি ঈশ্বররূপে রাম, কৃষ্ণ, শিব, বিষ্ণু প্রভৃতি রূপে প্রকাশিত |
বৌদ্ধ ধর্ম | নিরাকার নৈতিক শক্তি / ধম্ম | সৃষ্টিকর্তা নেই, কিন্তু “ধর্মতত্ত্বীয় সত্য” বা “নিয়তি” হল সর্বশক্তিমান নীতি |
শিখ ধর্ম | এক ওংকার (Ek Onkar) | এক ঈশ্বর, নিরাকার, চিরন্তন, মানবজাতির পিতা-মাতা |
🌍 ২. আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজনীয়তা কেন?
✳ ইসলামি দৃষ্টিকোণ:
কুরআনের আয়াত:
“যদি আকাশ ও পৃথিবীতে একাধিক ইলাহ (ঈশ্বর) থাকত, তবে তারা উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত।”
— সূরা আল-আম্বিয়া ২১:২২
অর্থ: সৃষ্টির সুশৃঙ্খলতা প্রমাণ করে একক নিয়ন্ত্রক ও নকশাকার আছেন।
- সৃষ্টির ভারসাম্য (gravity, atmosphere, life cycle) কাকতালীয় নয়।
- মানুষের নৈতিক ও আত্মিক জগৎ পরিচালনায় এক পরম মানদণ্ড প্রয়োজন।
- চেতনা, বুদ্ধি, ও ন্যায়ের ভিত্তি স্থাপন করে এক ঈশ্বরের অস্তিত্ব।
🪐 ৩. সৃষ্টির সূচনা: ধর্মভেদে বিশ্লেষণ
🕌 ইসলাম:
সূরা আল-আনআম ৬:১০১:
“তিনি আসমান ও জমিনের উদ্ভাবক; কিছুর আদর্শ ছাড়াই সৃষ্টি করেছেন।”
ইসলামি দৃষ্টিতে:
- আল্লাহ "Kun Fayakun" (كن فيكون) — “হও” বললে তা হয়ে যায়।
- প্রথমে ছিল কেবল আল্লাহর অস্তিত্ব, পরে তিনি সৃষ্টি করেন—
- আলোর সৃষ্টির মাধ্যমে ফেরেশতা,
- পানির থেকে জীবন,
- মাটি থেকে আদম (আ.)
- সময়, স্থান ও পদার্থ — সবই তাঁর ইচ্ছায় শুরু।
✝ খ্রিস্টধর্ম:
“In the beginning God created the heavens and the earth.” — Genesis 1:1
প্রথমে ঈশ্বর আলো সৃষ্টি করেন, ছয় দিনে বিশ্ব সৃষ্টি করে সপ্তম দিনে বিশ্রাম নেন।
✡ ইহুদি ধর্ম:
Genesis-এর একই বর্ণনা, তবে “Yahweh” নামটি ব্যবহার হয়।
সৃষ্টি ও ন্যায়ের সঙ্গে ঈশ্বরের সরাসরি সম্পর্ক।
🕉 হিন্দু ধর্ম:
ঋগ্বেদ ও উপনিষদ:
- “নাসদীয় সূক্ত” অনুযায়ী—প্রথমে কিছুই ছিল না, ছিল না অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব।
- পরে এক “অজানা শক্তি” বা “ব্রহ্ম” থেকে মহাজগত সৃষ্টি হয়।
- সৃষ্টি চক্রাকার—“সৃষ্টি → সংহার → পুনর্জন্ম” (Cycle of Creation)।
☸ বৌদ্ধ ধর্ম:
- কোনো “সৃষ্টিকর্তা” নেই।
- “কারণ ও ফল” (Pratītyasamutpāda) অনুযায়ী জগৎ নিজস্ব নিয়মে গড়ে ওঠে।
- মহাবিশ্ব চিরন্তন প্রক্রিয়া, কোনো “সৃষ্টির মুহূর্ত” নেই।
🔁 ৪. আল্লাহ কি এখনো সৃষ্টি করেন?
📖 ইসলামের দৃষ্টিতে:
হ্যাঁ, এখনো করেন।
“প্রতিদিন তিনি এক কাজে নিয়োজিত।” — সূরা আর-রহমান ৫৫:২৯
তাফসীর অনুযায়ী:
- আল্লাহ প্রতিনিয়ত জীবন দান করেন, মৃত্যু দেন, নিয়তি পরিবর্তন করেন, নতুন সৃষ্টিকে আনেন।
- শুধু শুরুর “সৃষ্টি” নয়—বরং তিনি “ধারাবাহিক সৃষ্টিশীলতা” (Continuous Creativity) চালিয়ে যান।
- উদাহরণ: মানুষের কোষ, উদ্ভিদের জন্ম, নক্ষত্রের বিস্ফোরণ, আত্মার আগমন।
✝ খ্রিস্টধর্মেও বলা হয়:
God is the Sustainer — He not only created the universe, but continuously sustains it (Hebrews 1:3).
🕉 হিন্দুধর্মে:
“ব্রহ্ম” সর্বদা সৃষ্টি, পালন, সংহার করে —
- সৃষ্টি (Brahma), পালন (Vishnu), সংহার (Shiva) = চিরন্তন সৃষ্টিশীল চক্র।
☸ বৌদ্ধ মতে:
প্রকৃতি নিজের নিয়মে ক্রমাগত পরিবর্তিত — একধরনের “সৃষ্টিশীল চক্র”, কিন্তু ঈশ্বরবিহীন।
🌈 ৫. আধুনিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ:
- Big Bang Theory: মহাবিশ্বের জন্ম ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে, এক বিন্দু থেকে বিস্ফোরণ ঘটে।
- Quantum Physics: "Energy cannot be created or destroyed" — কিন্তু এর উত্স কী?
- বিজ্ঞানীরা অনেকেই বলেন, “Initial Cause” বা “Prime Mover” থাকতে হবে — যেটাকে ধর্ম “আল্লাহ” বলে।
🌿 ৬. সংক্ষেপে সারমর্ম:
বিষয় | ইসলাম | খ্রিস্টধর্ম | ইহুদী | হিন্দু | বৌদ্ধ |
---|---|---|---|---|---|
সৃষ্টিকর্তা | এক আল্লাহ | এক ঈশ্বর (Trinity) | Yahweh | ব্রহ্ম (চিরন্তন শক্তি) | নেই |
সৃষ্টির শুরু | আল্লাহর আদেশে | ঈশ্বরের বাক্যে | ঈশ্বরের ইচ্ছায় | ব্রহ্মের চেতনা থেকে | চক্রাকার প্রক্রিয়া |
এখনো সৃষ্টি করেন? | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ | প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া |
উদ্দেশ্য | উপাসনা ও পরীক্ষা | ঈশ্বরের মহিমা | ঈশ্বরের ন্যায়বিচার | আত্মার মুক্তি | নির্বাণ ও দুঃখমুক্তি |
💫 উপসংহার:
আল্লাহ কেবল অতীতে সৃষ্টিকর্তা নন, তিনি বর্তমানেও সৃষ্টিশীল বাস্তবতা —
মানুষের চিন্তা, বিজ্ঞান, প্রকৃতি, ও প্রতিটি নবজাত জীবের মধ্যেই তাঁর সৃজনশীলতা প্রবাহিত।
তিনি বলেন:
“আমি আছি তোমার খুব কাছেই।” (সূরা ক্বাফ ৫০:১৬)
— অর্থাৎ, প্রতিটি সৃষ্টির অস্তিত্বে আল্লাহ নিজে সৃজনশীলভাবে উপস্থিত।
বুধবার, অক্টোবর ০৮, ২০২৫
আল্লাহকে বলা হয় “রব্বুল ‘আলামীনের”—অগণিত জগতের রব।
By, ChatgptAI2025
ইসলামের প্রথাগত শিক্ষায় “আ‘লাম/আলাম” (العالَم، العوالم) মানে একাধিক “জগত/ক্ষেত্র/পর্যায়”—যার কিছু দৃশ্যমান (মুল্ক/দুনিয়া), আর বেশিরভাগই গায়েব (অদৃশ্য)। কুরআন-হাদীসে নির্দিষ্ট করে “মোট কতগুলো আলম”—এ রকম তালিকা নেই; বরং আল্লাহকে বলা হয় “রব্বুল ‘আলামীনের”—অগণিত জগতের রব। তাই নিচে স্বীকৃত মূল জগত/পর্যায়গুলোকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে দিচ্ছি—কোথায়/কখন/কী ঘটে—সহিত সংক্ষিপ্ত দলিল-ইশারা ও নোটসহ।
1) ‘আলামুল মুল্ক / ‘আলামুদ্ দুনিয়া (দৃশ্যমান জগত)
- কি: আমাদের বসবাসের জগত—মানুষ, প্রাণী, উদ্ভিদ, পদার্থ, সময়-স্থান।
- কোথায়: এই মহাবিশ্ব—পৃথিবী ও আসমান; কুরআনে “সাত আকাশ” (سَبْعَ سَمَاوَاتٍ) ও “সাত জমীন”-এর ইশারা আছে (মুলধারা ব্যাখ্যায় স্তর/পরত/রাজ্য বোঝায়)।
- কখন: জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবন-পর্ব।
- দলিল-ইশারা: সূরা মুল্ক 67:3 (সাত আসমান); তালাক 65:12 (সাত জমীন)।
2) ‘আলামুল আরওয়াহ (রূহের জগত; প্রাক-দুনিয়া চুক্তি)
- কি: আত্মা/রূহের অস্তিত্বের প্রথম পর্ব; এখানেই “আলাস্তু বিব্বিকুম?” অঙ্গীকার।
- কোথায়: গায়েবের জগত—মানব-ইন্দ্রিয়গম্য নয়।
- কখন: গর্ভে আসার আগেই; তারপর রূহ দুনিয়াতে দেহে ফুঁকে দেওয়া হয়।
- দলিল-ইশারা: আ‘রাফ 7:172 (আলাস্ত মিসাক)।
3) ‘আলামুল মালাকূত (ফেরেশতাময় আধ্যাত্মিক জগত)
- কি: ফেরেশতাদের কর্মক্ষেত্র; তাকদীর-ইলহাম-আমল উর্ধ্বতন স্তরে লিপিবদ্ধ/কার্যকর হয়।
- কোথায়: ‘উলূউই (উর্ধ্ব) জগত; “সিদরাতুল মুনতাহা”, “বায়তুল মা‘মূর” ইত্যাদি মি‘রাজ বর্ণনায় আসে।
- কখন: দুনিয়া চলাকালেই সদা; মালাকূত থেকে দুনিয়ায় প্রভাব আসে (রিযিক, বৃষ্টি, হিফাযত ইত্যাদি)।
- দলিল-ইশারা: নাহল 16:2 (ফেরেশতারা ওহী নিয়ে অবতীর্ণ); নাজম 53:14-16 (সিদরা)।
4) ‘আলামুল জাবারূত (কুদরতের ঊর্ধ্ব জগত—ধর্মতত্ত্বে ইঙ্গিতমাত্র)
- কি: আল্লাহর কুদরতের মহিমা-রাজ্য বলে ‘উলামা শব্দটি ব্যবহার করেন; সরাসরি কুরআনি টার্ম নয়, তবে তাসাওফ/কলাম গ্রন্থে বিন্যাসে আসে: মুল্ক → মালাকূত → জাবারূত।
- কোথায়/কখন: গায়েব; দুনিয়া-কাল-স্থানের ঊর্ধ্বে।
- সতর্কতা: এ স্তরে বাড়তি কল্পনা না করে “বিলাকাইফ” (কেমন করে—তা আল্লাহই জানেন) নীতি মেনে চলাই আহলুস সুন্নাহর পথ।
5) ‘আলামুল জিন্ন (জিনদের জগত)
- কি: ধূমবিহীন আগুন থেকে সৃষ্ট এক পৃথক জাতি; তাদেরও ঈমান-কুফর, আমল, হিসাব আছে।
- কোথায়: দুনিয়ার সমান্তরাল—তারা আমাদের দেখে, আমরা সাধারণত দেখি না।
- কখন: দুনিয়ার জীবনকালেই মানুষের সাথে সহাবস্থান; তারাও মরবে, হিসাব দেবে।
- দলিল-ইশারা: রহমান 55:15; জিন 72:1-15।
6) ‘আলামুল বারযাখ (মৃত্যু থেকে কিয়ামত—মধ্যবর্তী জগত)
- কি: মৃত্যু ঘটার সাথে সাথেই আখিরাতের জানালা—কবরের জীবন; মু’মিনের জন্য রৌদ্রোজ্জ্বল বাগিচা, কাফেরের জন্য আগুনের গর্ত—এ মর্মে বহু হাদীস।
- কোথায়: কবরের সাথে সংশ্লিষ্ট, কিন্তু প্রকৃত অবস্থা বারযাখী জগত—শরীর-মাটিতে, রূহ বারযাখে।
- কখন: মৃত্যুর পর থেকে হাশরের শিঙ্গা ফুঁকা পর্যন্ত।
- দলিল-ইশারা: মুমিনুন 23:99-100 (“বারযাখ”—বাধা/অন্তরাল); তাহরীম 66:6 (কবর-আযাব ইঙ্গিতসহ হাদীসসমূহ)।
7) ইয়াওমুল কিয়ামাহ ও ময়দানে মাহশার (হাশরের জগত)
- কি: পুনরুত্থান, হিসাব-নিকাশ, মীযান, সিরাত, শাফাআ‘ত—সবকিছু ঘটে এই মহাময়দানে।
- কোথায়: এক মহাবিশাল সমতল—দুনিয়ার আকাশ-জমীনের ধ্বংসের পর নতুন বিন্যাস।
- কখন: দ্বিতীয় শিঙ্গা (সুর) ফুঁকার পর, সবাই কবর থেকে উঠে সমবেত হবে।
- দলিল-ইশারা: হাজ্জ 22:7; কাহ্ফ 18:47-49; যুমার 39:68।
8) জান্নাত ও জাহান্নাম (চূড়ান্ত/চিরস্থায়ী জগত)
- কি: পুরস্কার ও শাস্তির চিরন্তন আবাস।
- কোথায়: গায়েবের জগত; “সিদরার” ঊর্ধ্বে জান্নাতের ইশারা, “সিজ্জীন/ইল্লিয়্যীন” নামেও দলিল আছে—নামলিপি/রুহানী রেজিস্ট্রি অর্থে।
- কখন: হিসাব-নিকাশ শেষে চূড়ান্ত ফয়সালার পর—চিরকাল।
- দলিল-ইশারা: ওয়াকিয়া 56, রহমান 55 (জান্নাতের বর্ণনা); মুতাফ্ফিফীন 83:7-9 (সিজ্জীন), 83:18-21 (ইল্লিয়্যীন)।
জীবন-টাইমলাইন হিসেবে “আলাম”-গুলোর ধারাবাহিকতা
- আলামুল আরওয়াহ → 2) গর্ভ/দুনিয়ায় রূহ-ফুঁকে দেওয়া (মুল্ক/দুনিয়া) → 3) মৃত্যু → 4) আলামুল বারযাখ (কবর-জীবন) → 5) ইসরাफ़ীলের সুর → 6) মাহশার/কিয়ামত → 7) সিরাত-মীযান-হিসাব → 8) জান্নাত/জাহান্নাম (চিরস্থায়ী পরিণতি)।
“কোথায়?”—কিছু সূক্ষ্ম নোট
- দুনিয়া/মুল্ক: বাস্তব পদার্থ-জগত—আমরা জানি ও মাপতে পারি।
- বারযাখ/আখিরাত: মেটা-ফিজিক্যাল/গায়েব—আমরা কল্পনা করতে পারি না; কুরআন-সাহিহ সুন্নাহ যা বলেছে, সেই পর্যন্তই থামা উচিত (بلا كيف)।
- সাত আকাশ/সাত জমীন: সংখ্যার ভাষা ও স্তরগত বাস্তবতা আছে; স্পষ্ট “মানচিত্র” দেওয়া ওহীতে নেই—তাই নিশ্চিত রূপকল্প এঁকে দেওয়া থেকে বিরত থাকা আমানতদারীর অংশ।
- জিন/ফেরেশতা: আমাদের সমান্তরাল জগত; তারা দুনিয়াতেই কর্মরত, কিন্তু সাধারণত অদৃশ্য।
“কখন?”—সময়ের রেখা
- আরওয়াহ: দুনিয়ার পূর্ব-সময়।
- দুনিয়া: জন্ম→মৃত্যু।
- বারযাখ: মৃত্যু→পুনরুত্থান।
- কিয়ামত: পুনরুত্থান→হিসাবের সমাপ্তি।
- জান্নাত/জাহান্নাম: চিরকাল (খালিদিন ফিহা)।
সাধারণ ভুল-বোঝাবুঝি—সংক্ষেপে
- “মোট আলম সংখ্যা”: কুরআন/সহীহ হাদীসে নির্দিষ্ট তালিকা নেই; তাই কোনো “ফিক্সড নাম্বার” দাবি করা উচিত নয়।
- বারযাখ = শুধু মাটি?: না; “কবর-জীবন” বারযাখের এক নাম, কিন্তু বারযাখ একটি রাষ্ট্র/পর্যায়, কেবল মাটির গর্ত নয়।
- মালাকূত/জাবারূত/লাহূত: কুরআনের সরাসরি টার্ম নয়; তবে ‘উলামার ব্যাখ্যামূলক ফ্রেমওয়ার্ক। অতিরিক্ত কল্পনা নয়—প্রমাণিত সীমারেখায় থাকাই নিরাপদ।
রেফারেন্স-ইশারা (শুধু মনে রাখার জন্য)
- কুরআন: 7:172; 18:47-49; 22:7; 39:68; 55; 56; 65:12; 67:3; 83:7-9, 18-21; 53:14-16; 16:2; 23:99-100 ইত্যাদি।
- হাদীস: কবর-আযাব, রূহের অবস্থা, মি‘রাজ, বায়তুল মা‘মূর, সিরাত, মীযান—সহীহ বুখারী/মুসলিমে বহু অধ্যায়ে বর্ণিত।
এক লাইনে সারসংক্ষেপ
নিশ্চিত—দুনিয়া, বারযাখ, কিয়ামত/মাহশার, জান্নাত-জাহান্নাম; ব্যাখ্যামূলকভাবে—আরওয়াহ, মালাকূত, জাবারূত, জিনদের সমান্তরাল জগত। মোট সংখ্যা নির্ধারিত নয়; কীভাবে/কোথায়—এর বিশদ গায়েব, তাই প্রামাণ্য টেক্সট যেখানে থামে, সেখানেই থামা নিরাপদ।
ঠিক আছে 🌸 আমি প্রতিটি আলম (জগত/পর্যায়) অনুযায়ী সরাসরি আয়াত + হাদীস (আরবী ও বাংলা অনুবাদসহ) সাজিয়ে দেব। এতে আপনি দলিলসহ একেবারে পরিষ্কার ধারণা পাবেন।
📖 আলমসমূহের দলিলভিত্তিক তালিকা
১) আলমুল আরওয়াহ (রূহের জগত)
➡️ আলস্তু বিব্বিকুম? চুক্তি
কুরআন:
وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنۢ بَنِيٓ ءَادَمَ مِن ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ ۖ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ ۖ قَالُوا۟ بَلَىٰ ۛ شَهِدْنَا
— (সূরা আ‘রাফ 7:172)
বাংলা অর্থ:
“যখন তোমার রব আদম সন্তানদের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাদের বংশধরদের বের করলেন এবং তাদের নিজেদের উপর সাক্ষী করালেন: ‘আমি কি তোমাদের রব নই?’ তারা বলল: ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। আমরা সাক্ষী দিলাম।’”
২) আলমুদ্ দুনিয়া (এই পৃথিবীর জীবন)
কুরআন:
ٱلَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَـٰوَٰتٍ طِبَاقًۭا ۖ مَّا تَرَىٰ فِى خَلْقِ ٱلرَّحْمَـٰنِ مِن تَفَـٰوُتٍۢ
— (সূরা মুলক 67:3)
বাংলা অর্থ:
“তিনি সাত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। দয়াময়ের সৃষ্টিতে কোনো অসামঞ্জস্য তুমি দেখবে না।”
৩) আলমুল মালাকূত (ফেরেশতাদের আধ্যাত্মিক জগত)
কুরআন:
يُنَزِّلُ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةَ بِٱلرُّوحِ مِنْ أَمْرِهِۦ عَلَىٰ مَن يَشَآءُ مِنْ عِبَادِهِ
— (সূরা নাহল 16:2)
বাংলা অর্থ:
“তিনি ফেরেশতাদের রূহসহ অবতীর্ণ করেন তাঁর নির্দেশে, তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা।”
৪) আলমুল জিন্ন (জিনদের জগত)
কুরআন:
وَخَلَقَ ٱلْجَآنَّ مِن مَّارِجٍۢ مِّن نَّارٍۢ
— (সূরা রহমান 55:15)
বাংলা অর্থ:
“আর তিনি জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াহীন আগুনের শিখা থেকে।”
৫) আলমুল বারযাখ (কবর/মৃত্যুর পরের অন্তর্বর্তী জগত)
কুরআন:
حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَ أَحَدَهُمُ ٱلْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ٱرْجِعُونِ لَعَلِّىٓ أَعْمَلُ صَـٰلِحًۭا فِيمَا تَرَكْتُ ۚ كَلَّآ ۚ إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَآئِلُهَا ۖ وَمِن وَرَآئِهِم بَرْزَخٌ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ
— (সূরা মুমিনুন 23:99-100)
বাংলা অর্থ:
“যখন তাদের কারো মৃত্যু আসে, সে বলে: ‘হে আমার রব! আমাকে ফিরিয়ে দাও, যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি।’ কখনো নয়! এটি কেবল কথা মাত্র। আর তাদের সামনে রয়েছে বারযাখ, পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত।”
৬) ইয়াওমুল কিয়ামাহ ও মাহশার (হাশরের ময়দান)
কুরআন:
وَنُفِخَ فِى ٱلصُّورِ فَصَعِقَ مَن فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَن فِى ٱلْأَرْضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُ ۖ ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخْرَىٰ فَإِذَا هُمْ قِيَامٌۭ يَنظُرُونَ
— (সূরা যুমার 39:68)
বাংলা অর্থ:
“শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সবকিছুই বেহুশ হয়ে যাবে, আল্লাহ যাদের ইচ্ছা করেন তারা বাদে। তারপর আবার ফুঁক দেয়া হবে, তখনই তারা দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকবে।”
৭) আলমুল জাযা: জান্নাত ও জাহান্নাম (চিরস্থায়ী আবাস)
কুরআন:
فَأَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَيُدْخِلُهُمْ رَبُّهُمْ فِى رَحْمَتِهِۦ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْمُبِينُ
— (সূরা জাথিয়াহ 45:30)
বাংলা অর্থ:
“যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের রব তাঁর রহমতের মধ্যে প্রবেশ করাবেন; এটাই সুস্পষ্ট সাফল্য।”
হাদীস:
রাসূল ﷺ বলেন:
“কবর হয় জান্নাতের বাগিচাগুলির একটি বাগিচা অথবা জাহান্নামের গর্তগুলির একটি গর্ত।”
— (তিরমিযী, মুসনাদ আহমদ)
📌 সংক্ষিপ্ত সারি (Timeline):
- আলমুল আরওয়াহ → আত্মার অঙ্গীকার
- আলমুদুনিয়া → জন্ম থেকে মৃত্যু
- আলমুল বারযাখ → মৃত্যু থেকে কিয়ামত পর্যন্ত কবর-জীবন
- ইয়াওমুল কিয়ামাহ (মাহশার) → হাশরের ময়দান, হিসাব-নিকাশ
- আলমুল জাযা (জান্নাত/জাহান্নাম) → চিরস্থায়ী পরিণতি
“ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের নীরব ব্যর্থতা: কারণ ও করণীয়”
ChatgptAI2025:
শিরোনাম:
“ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের নীরব ব্যর্থতা: কারণ ও করণীয়”
ভূমিকা:
দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিন একটি রক্তাক্ত উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলের আগ্রাসন, অবরোধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, শিশু ও নারীদের নির্বিচারে হত্যা—সব কিছু যেন আন্তর্জাতিক সমাজের চোখের সামনেই ঘটছে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, ওআইসি, এমনকি মানবাধিকারের জন্য নিবেদিত বিভিন্ন সংস্থার কার্যকর পদক্ষেপহীনতা আমাদেরকে ভাবতে বাধ্য করে—এই বিশ্ব ব্যবস্থা আসলে কার জন্য?
আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের ব্যর্থতা:
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বহুবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপিত হলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোর ভেটো-নীতির কারণে এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) বহুবার তদন্তের ঘোষণা দিলেও বাস্তবিক কোনো শাস্তি বা বিচার দেখা যায়নি। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর রিপোর্ট প্রণয়নই যেন তাদের শেষ দায়িত্ব।
মূল কারণসমূহ:
১. পশ্চিমা বিশ্বের পক্ষপাতিত্ব:
ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অব্যাহত সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা শুধু কূটনৈতিক সমর্থনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং বর্বরতার রাজনৈতিক বৈধতা হিসেবেও কাজ করে।
২. আরব ও মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের অভাব:
ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে কার্যকর ঐক্যের অভাব অত্যন্ত দুঃখজনক। অনেকে অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক স্বার্থে চুপ থেকে ইসরায়েলকে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে।
৩. গণমাধ্যম ও তথ্যযুদ্ধ:
প্রচলিত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধকে ‘সন্ত্রাস’ বলে চিত্রিত করে, অথচ ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে ‘আত্মরক্ষা’ বলে প্রচার করে।
৪. আন্তর্জাতিক সংস্থার কাঠামোগত দুর্বলতা:
জাতিসংঘের মত সংস্থাগুলোতে ক্ষমতার ভারসাম্য নেই; কিছু দেশ ভেটোর মাধ্যমে যে কোনো ন্যায়ের প্রস্তাব বাতিল করে দিতে পারে।
সমাধান ও করণীয়:
১. BDS আন্দোলনকে বিশ্বব্যাপী শক্তিশালী করা:
ইসরায়েলি পণ্য, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি এবং ইসরায়েলকে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বয়কট, বিনিয়োগ প্রত্যাহার ও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আন্দোলন জোরদার করতে হবে।
২. মুসলিম ও নিরপেক্ষ দেশগুলোর যৌথ জোট গঠন:
জাতিসংঘের বাইরে বিকল্প ও কার্যকর সংগঠন গঠনের সময় এসেছে—যা শুধু বিবৃতি নয়, বাস্তব পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে।
৩. প্রতিরোধ সংগ্রামকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি:
ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ শুধু আত্মরক্ষা নয়, এটা তাদের স্বাধীনতার আন্দোলন—এই অবস্থানকে কূটনৈতিকভাবে তুলে ধরা দরকার।
৪. আন্তর্জাতিক মিডিয়া যুদ্ধের কৌশল গঠন:
স্বাধীন ও বিকল্প গণমাধ্যম শক্তিশালী করে ফিলিস্তিনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা অপরিহার্য।
৫. জনগণের চাপ ও রাজনৈতিক আন্দোলন:
বিশ্বব্যাপী জনগণের উচিত নিজ নিজ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে নীতিগত অবস্থান পরিবর্তন করানো।
উপসংহার:
ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবাদ নয়, প্রয়োজন বৈপ্লবিক কূটনৈতিক ও সামাজিক চাপ। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা আমাদের আর হতাশ করুক না—বরং তা হোক নতুন উদ্যোগের প্রেরণা। ফিলিস্তিন এখন শুধু একটি জাতির নয়, মানবতার প্রশ্নে দাঁড়িয়ে গেছে। এই প্রশ্নে যারা চুপ, তারাও ইতিহাসে অপরাধী হয়ে থাকবে।
আল্লাহ সৃষ্টিকুল সৃষ্টি করার কাজ কখন, কিভাবে শুরু করেন?
আল্লাহ সৃষ্টিকুল সৃষ্টি করার কাজ কখন, কিভাবে শুরু করেন?
চ্যাটজিপিটি:
খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও গভীর প্রশ্ন করেছেন। ইসলামী আকীদা, কুরআন, হাদীস এবং মুফাসসির ও আলিমদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী এ বিষয়ে সংক্ষেপে ও বিস্তারিতভাবে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরছি:
🌿 ১. আল্লাহর অস্তিত্ব ও সৃষ্টির শুরু
- আল্লাহ চিরঞ্জীব, চিরন্তন, অনাদি। তিনি সবকিছুর আগে ছিলেন, আর কিছুই ছিল না।
হাদীসে কুদসীতে এসেছে:
"আল্লাহ ছিলেন, তাঁর সাথে আর কিছুই ছিল না। তাঁর ‘আরশ’ পানির উপর ছিল, তিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করলেন।"
(সহীহ বুখারী)
🌿 ২. সৃষ্টির প্রথম ধাপ
মুফাসসিরদের মতে:
-
‘আরশ’ (আরশে আজীম) – সর্বপ্রথম আল্লাহ তাঁর আরশ সৃষ্টি করেন।
আল্লাহ বলেন:“তিনিই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর আরশ ছিল পানির উপর।”
(সূরা হুদ 11:7) -
পানি – আরশের নিচে আল্লাহ পানি সৃষ্টি করেন।
হাদীসে এসেছে:
“আল্লাহর আরশ ছিল পানির উপর।” (বুখারী) -
কলম (القلم) – আরশ ও পানি সৃষ্টির পর আল্লাহ প্রথমে কলম সৃষ্টি করেন।
হাদীসে এসেছে:
“সর্বপ্রথম আল্লাহ কলম সৃষ্টি করেছেন। তিনি তাকে বললেন: লিখ! সে লিখল কিয়ামত পর্যন্ত যা ঘটবে।”
(আবু দাউদ, তিরমিযী)
🌿 ৩. আসমান-জমিন সৃষ্টি
-
এরপর আল্লাহ আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেন ছয় দিনে (ছয় পর্যায়ে)।
কুরআনে বহুবার উল্লেখ আছে:
“তিনিই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে।” (সূরা ফুরকান 25:59) -
ছয় দিন মানে আমাদের ২৪ ঘণ্টার দিন নয়; আল্লাহর কাছে এক দিন হাজার বছরের সমানও হতে পারে। (সূরা হজ্জ 22:47)
🌿 ৪. সৃষ্টির ধারাবাহিকতা
- আসমান, জমিন, পাহাড়, সমুদ্র, গাছপালা ইত্যাদি পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করা হয়।
- এরপর জ্বিন সৃষ্টি করা হয় ধোঁয়াহীন আগুন থেকে। (সূরা হিজর 15:27)
- সবশেষে, আল্লাহ আদম (আ.)-কে মাটি/পানি থেকে সৃষ্টি করেন। (সূরা মু'মিনূন 23:12-14)
🌿 ৫. উদ্দেশ্য
আল্লাহ সৃষ্টিকে বিনোদন বা খেলার জন্য সৃষ্টি করেননি।
তিনি বলেন:
“আমি আসমান ও জমিনকে খেলা-তামাশার জন্য সৃষ্টি করিনি। আমি সেগুলোকে সত্য ছাড়া সৃষ্টি করিনি।”
(সূরা দুখান 44:38-39)
✅ সংক্ষেপে ক্রমানুসার (বেশিরভাগ আলিমের মতে):
- আল্লাহ ছিলেন, কিছুই ছিল না।
- আরশ সৃষ্টি।
- পানি সৃষ্টি।
- কলম সৃষ্টি ও তাকদীর লেখা।
- আসমান-জমিন ছয় দিনে সৃষ্টি।
- এর মাঝে পাহাড়, সমুদ্র, গাছ, প্রাণী।
- জ্বিন।
- শেষ পর্যায়ে মানুষ (আদম আ.)।
দাড়ি রাখবো কেনো?
দাড়ি রাখার গুরুত্ব: ধর্ম, স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্বের আলোকে
ভূমিকা
দাড়ি রাখা শুধু একটি ফ্যাশন বা ব্যক্তিগত পছন্দ নয়; এটি মুসলিম পুরুষের ঈমানি পরিচয়ের অংশ, নবীজীর সুন্নাহ এবং মানবদেহের জন্য এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। কুরআন, হাদিস, চিকিৎসাবিজ্ঞান, মনীষী ও ইমামদের বক্তব্য—সবকিছু মিলিয়ে দাড়ির গুরুত্ব বহুমাত্রিক।
১. কুরআনের দৃষ্টিতে
যদিও কুরআনে সরাসরি দাড়ি রাখার হুকুম নেই, তবে দাড়িকে আল্লাহপ্রদত্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে:
وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ
“আমি অবশ্যই আদম সন্তানকে মর্যাদাবান করেছি।”
(সূরা ইসরা: 70)
আলেমগণ বলেন, মানুষের প্রাকৃতিক চেহারায় দাড়ি হলো মর্যাদার প্রতীক।
২. হাদিসে দাড়ির গুরুত্ব
রাসূলুল্লাহ ﷺ স্পষ্টভাবে বলেছেন:
-
“গোঁফ ছোট করো এবং দাড়ি বড় করো।”
(সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম) -
“মুশরিকদের বিরোধিতা করো; দাড়ি বড় করো, গোঁফ ছোট করো।”
(সহিহ মুসলিম: 259)
এ থেকে বোঝা যায়, দাড়ি রাখা শুধু সুন্নাহ নয়; বরং এটি মুসলিমদের পরিচয়, আলাদা কায়দা ও শান প্রকাশ করে।
৩. ইমাম ও আলেমদের মতামত
- ইমাম আবু হানিফা (রহ.): এক মুষ্টির কম দাড়ি কেটে ফেলা জায়েজ নয়।
- ইমাম মালেক (রহ.): দাড়ি কাটা মাকরুহে তাহরিমি, অর্থাৎ গুরুতর অপছন্দনীয়।
- ইমাম শাফেয়ী (রহ.) ও ইমাম আহমদ (রহ.): দাড়ি রাখা ওয়াজিব।
- ইমাম নববী (রহ.): দাড়ি রাখা রাসূল ﷺ-এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা।
৪. ডাক্তার ও বিজ্ঞানীদের মতামত
- চর্ম বিশেষজ্ঞদের মতে: দাড়ি সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
- ব্রিটিশ জার্নাল অফ ডার্মাটোলজি (২০১৬): দাড়িওয়ালা পুরুষদের স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কম।
- অস্ট্রেলিয়ান হেলথ সায়েন্স রিসার্চ: দাড়ি ধুলোবালি ও জীবাণু আটকে শ্বাসযন্ত্রকে আংশিক সুরক্ষা দেয়।
- আমেরিকান ডাক্তার ড. মাইকেল ফ্রস্ট বলেন: “দাড়ি হলো প্রাকৃতিক এয়ার-ফিল্টার, যা শ্বাসতন্ত্র ও ত্বককে সুরক্ষা দেয়।”
৫. মনীষী ও দার্শনিকদের মন্তব্য
- প্লেটো: “দাড়ি হলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জ্ঞানের প্রতীক।”
- সক্রেটিস: “যার দাড়ি আছে, তার মুখে প্রজ্ঞার ছায়া আছে।”
- ইবনে খালদুন (মুকাদ্দিমাহ): দাড়ি হলো সামাজিক মর্যাদা ও প্রাপ্তবয়স্কতার প্রতীক।
৬. দাড়ির সামাজিক ও মানসিক গুরুত্ব
- পরিচয় ও মর্যাদা: দাড়ি মুসলিম পুরুষকে আলাদা মর্যাদা ও শক্তিশালী পরিচয় দেয়।
- আত্মবিশ্বাস: দাড়িওয়ালা পুরুষরা নিজেদের মধ্যে দৃঢ়তা অনুভব করে।
- নারীদের মূল্যায়ন: একাধিক মনস্তাত্ত্বিক জরিপে দেখা গেছে, দাড়িওয়ালা পুরুষকে নারীরা অধিক “সিরিয়াস, পরিণত ও ভরসাযোগ্য” মনে করে।
উপসংহার
দাড়ি রাখা শুধু ধর্মীয় অনুশাসন নয়, বরং এটি স্বাস্থ্যকর, মর্যাদাপূর্ণ এবং বৈজ্ঞানিকভাবে উপকারী। কুরআন ও হাদিস, ডাক্তারদের গবেষণা, ইমামদের ফতোয়া, মনীষীদের মতামত—সবই এককথায় প্রমাণ করে যে, দাড়ি হলো পুরুষের জন্য সম্মান, সৌন্দর্য ও সুন্নাহ।
👉 তাই আমাদের উচিত, দাড়িকে শুধু ফ্যাশন বা বাহ্যিক বিষয় হিসেবে না দেখে এটিকে নবীর সুন্নাহ, আল্লাহর প্রদত্ত সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা।
মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৫
বাদশাহ জুলকারনাইনের বিশ্বভ্রমণ: কুরআন, হাদীস ও তাফসীরভিত্তিক আলোচনা
ভূমিকা:মানব ইতিহাসে কিছু ব্যক্তিত্ব আছেন যাদের কাহিনী রহস্যময় ও শিক্ষণীয়। কুরআনুল কারীমে এমন এক ব্যক্তিত্বের উল্লেখ আছে, যিনি “জুলকারনাইন” নামে পরিচিত। সূরা কাহফে তাঁর বিশ্বভ্রমণের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। তিনি ছিলেন ন্যায়পরায়ণ শাসক, আল্লাহপ্রদত্ত শক্তি ও জ্ঞানের অধিকারী, যিনি দুনিয়ার প্রান্তে প্রান্তে ভ্রমণ করেছেন এবং মানুষের উপকারে কাজ করেছেন।
জুলকারনাইন কে ছিলেন?
কুরআনে আল্লাহ বলেন:
وَيَسْأَلُونَكَ عَن ذِي الْقَرْنَيْنِ ۖ قُلْ سَأَتْلُوا عَلَيْكُم مِّنْهُ ذِكْرًا
(সূরা কাহফ: ৮৩)অর্থ: তারা আপনাকে জুলকারনাইনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। বলুন: আমি তোমাদের কাছে তাঁর কিছু কাহিনী পাঠ করব।
তাঁর প্রকৃত পরিচয় নিয়ে আলেমদের মধ্যে ভিন্নমত আছে। কেউ বলেন তিনি আরবের এক বাদশাহ, কেউ বলেন পারস্য বা ইয়েমেনের। তবে তাঁকে গ্রিক আলেকজান্ডারের সঙ্গে মেলানো সঠিক নয়। তাফসীরবিদ ইবনে কাসীর ও কুরতুবী বলেন—তিনি ছিলেন আল্লাহর এক ন্যায়পরায়ণ শাসক ও মুমিন।
পশ্চিম প্রান্তের ভ্রমণ
কুরআনে বলা হয়েছে:
حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَمِئَةٍ
(সূরা কাহফ: ৮৬)অর্থ: যখন তিনি সূর্যাস্তের স্থানে পৌঁছালেন, তখন সূর্যকে তিনি কালো কাদামাটির ঝর্ণায় অস্ত যেতে দেখলেন।
ব্যাখ্যা অনুযায়ী, তিনি পশ্চিমে এমন সমুদ্রতীর বা মহাসাগরে পৌঁছেছিলেন, যেখানে দৃষ্টিতে সূর্য কাদাযুক্ত জলে ডুবে যাচ্ছে মনে হয়। এখানে তিনি এক জাতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ন্যায়পরায়ণ শাসক হিসেবে তিনি ঘোষণা দেন—যে অন্যায় করবে তাকে শাস্তি দেবেন, আর সৎকর্মীরা পুরস্কৃত হবে।
পূর্ব প্রান্তের ভ্রমণ
এরপর তিনি পূর্বদিকে ভ্রমণ করেন।
حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَىٰ قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا
(সূরা কাহফ: ৯০)অর্থ: যখন তিনি সূর্যোদয়ের স্থানে পৌঁছালেন, তখন দেখলেন সূর্য উদিত হয় এমন এক জাতির উপর যাদের জন্য সূর্যের আঘাত থেকে কোনো আবরণ আমরা তৈরি করিনি।
এখানে তিনি এমন এক জাতিকে পান যারা ছিল প্রাকৃতিক জীবনে অভ্যস্ত, আধুনিক ঘরবাড়ি বা আশ্রয়বিহীন।
উত্তর প্রান্তের ভ্রমণ ও ইয়াজুজ-মাজুজ
তৃতীয় ভ্রমণে তিনি উত্তর প্রান্তে গিয়েছিলেন।
حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ بَيْنَ السَّدَّيْنِ وَجَدَ مِن دُونِهِمَا قَوْمًا
(সূরা কাহফ: ৯৩)অর্থ: যখন তিনি দুই প্রাচীরের মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছালেন, তখন তিনি এমন এক জাতিকে পেলেন যারা ভাষা বুঝতে কষ্ট পেত।
এই জাতি অভিযোগ করল যে, ইয়াজুজ-মাজুজ (গগ ও মগগ) পৃথিবীতে ফিতনা-ফাসাদ করছে। তারা প্রস্তাব দিল, জুলকারনাইন যেন পারিশ্রমিক নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রাচীর নির্মাণ করেন।
জুলকারনাইন বললেন:
مَا مَكَّنِّي فِيهِ رَبِّي خَيْرٌ
(সূরা কাহফ: ৯৫)অর্থ: আমার প্রতিপালক আমাকে যা দিয়েছেন, তাই উত্তম।
তিনি লোহা ও গলিত তামা ব্যবহার করে বিশাল এক প্রাচীর বানালেন। এই প্রাচীর এত মজবুত ছিল যে ইয়াজুজ-মাজুজ তা ভেদ করতে পারল না। তবে তিনি ঘোষণা দিলেন—কিয়ামতের সময় এ প্রাচীর আল্লাহর হুকুমে ভেঙে যাবে, তখন ইয়াজুজ-মাজুজ ছড়িয়ে পড়বে।
জুলকারনাইনের শিক্ষা ও দৃষ্টান্ত
১. ন্যায়পরায়ণতা: তিনি অন্যায়কারীদের শাস্তি দিতেন, সৎদের পুরস্কৃত করতেন।
২. আল্লাহর প্রতি ঈমান: তিনি সব কাজের কৃতিত্ব আল্লাহকে দিতেন।
৩. জনসেবা: মানুষের অনুরোধে প্রাচীর তৈরি করেছিলেন কোনো ব্যক্তিগত লোভ ছাড়াই।
৪. ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার: তিনি জ্ঞান ও প্রযুক্তি মানবকল্যাণে ব্যয় করেছিলেন।
উপসংহার
বাদশাহ জুলকারনাইনের ভ্রমণ কেবল ভৌগোলিক ভ্রমণ নয়; বরং মানব সভ্যতার জন্য এক অনন্য শিক্ষা। কুরআনের এই কাহিনী আমাদের শেখায়—ক্ষমতা, সম্পদ, জ্ঞান সবই আল্লাহর দান, যা মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। তাঁর প্রাচীর এখনো রহস্যময়, তবে কিয়ামতের নিকটে ইয়াজুজ-মাজুজের আবির্ভাব নিশ্চিত।
👉 ChatgptAI2025
শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৫
বিশ্বাস ও বিশ্ব
বিশ্বাস: সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ
🔹 বিশ্বাস কী?
“বিশ্বাস” শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো আস্থা, নির্ভরতা, ভরসা। এটি এমন একটি মানসিক ও নৈতিক অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি অপরকে, কোনো প্রতিষ্ঠানকে, অথবা কোনো নীতি-আদর্শকে নির্ভরযোগ্য মনে করে। বিশ্বাস ছাড়া মানুষের ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক কাঠামো কিংবা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।
🔹 বিশ্বাসের প্রকারভেদ
বিশ্বাসকে বিভিন্ন দিক থেকে ভাগ করা যায়—
-
ব্যক্তিগত বিশ্বাস (Self-trust):
নিজের প্রতি আস্থা রাখা, নিজের ক্ষমতা ও সিদ্ধান্তকে মূল্য দেওয়া। -
পারস্পরিক বিশ্বাস (Interpersonal trust):
পরিবার, বন্ধু, দাম্পত্য, ব্যবসায়িক বা সামাজিক সম্পর্কে পারস্পরিক ভরসা। -
সামাজিক বিশ্বাস (Social trust):
সমাজের নিয়ম-কানুন, নীতি, ন্যায়বিচার ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা। -
ধর্মীয় বিশ্বাস (Religious faith):
সৃষ্টিকর্তার প্রতি ঈমান, আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক আনুগত্য। -
রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় বিশ্বাস (Political trust):
শাসক, আইন, সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের উপর আস্থা রাখা।
🔹 উত্তম বিশ্বাস কী?
“উত্তম বিশ্বাস” হলো সেই বিশ্বাস যা সত্য, ন্যায়, কল্যাণ ও দায়িত্ববোধের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।
- এটি অন্ধ নয়, যুক্তি ও প্রমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
- এটি শুধু আবেগ নয়, বরং নৈতিকতা ও সঠিক আচরণ দ্বারা সমর্থিত।
- উত্তম বিশ্বাস মানুষকে ইতিবাচক কাজে উৎসাহিত করে এবং অন্যায় থেকে বিরত রাখে।
🔹 বিশ্বাসের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অবস্থা
অতীত:
মানবসভ্যতার প্রাচীনকাল থেকে বিশ্বাস সমাজ গঠনের প্রধান শক্তি। পরিবার, গোত্র, উপজাতি ও রাষ্ট্র—সবই গড়ে উঠেছে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের উপর। ধর্মীয় বিশ্বাস মানুষকে নৈতিকতা ও ঐক্যের শিক্ষা দিয়েছে।
বর্তমান:
আজকের পৃথিবীতে বিশ্বাসের সংকট প্রবল।
- রাজনীতিতে দুর্নীতি,
- ব্যবসায় প্রতারণা,
- সামাজিক সম্পর্কে ভণ্ডামি,
- মিডিয়ায় মিথ্যা প্রচার,
এসবের কারণে মানুষ একে অপরকে সহজে বিশ্বাস করতে পারে না। প্রযুক্তির যুগে তথ্যপ্রবাহ যত বেড়েছে, সন্দেহও তত বেড়েছে।
ভবিষ্যৎ:
আগামী দিনে বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে হলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নৈতিকতার পুনর্জাগরণ জরুরি। না হলে সমাজে অবিশ্বাস ও সংকট আরও গভীর হবে, যা পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় কাঠামোকেও অস্থির করবে।
🔹 বিশ্বাস উন্নয়নের সমস্যা ও সমাধান
সমস্যা:
- অসততা ও ভণ্ডামি
- দুর্নীতি ও প্রতারণা
- তথ্যের অপপ্রচার
- ধর্মীয় ভ্রান্ত ব্যাখ্যা
- রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ
- সামাজিক দায়িত্ববোধের অভাব
সমাধান:
- সততা ও নৈতিক শিক্ষা: পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তোলা।
- স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায়ে খোলামেলা প্রক্রিয়া চালু করা।
- ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা: মানুষকে স্রষ্টার ভয় ও দায়িত্ববোধে উদ্দীপ্ত করা।
- প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার: সত্য ও মিথ্যা যাচাইয়ের ব্যবস্থা জোরদার করা।
- সামাজিক উদ্যোগ: সমাজে আস্থা পুনর্গঠনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও নেতৃত্বের ভূমিকা।
- পারিবারিক বন্ধন মজবুত করা: পরিবার থেকেই সৎ বিশ্বাসের বীজ বপন করা।
✅ সারকথা:
বিশ্বাসই মানবসমাজের মূলভিত্তি। এটি ছাড়া সভ্যতা টিকবে না। ব্যক্তিগত জীবন থেকে রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা—সব ক্ষেত্রেই বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে হলে সত্য, ন্যায়, নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয় ঘটাতে হবে।
🌹“বিশ্বাস” বিষয়ক লেখা এখন পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ আকারে ভূমিকা, বিষয়বস্তু, বিশ্লেষণ, সমস্যা ও সমাধান, এবং উপসংহার।
বিশ্বাস: একটি সমগ্র দৃষ্টিকোণ
ভূমিকা
মানুষের জীবনে বিশ্বাস এক অদৃশ্য কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। এটি ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও আধ্যাত্মিক সম্পর্কের ভিত্তি। বিশ্বাস ছাড়া কোনো সম্পর্ক স্থিতিশীল থাকতে পারে না। বিশ্বাস মানুষের মানসিক শান্তি, নৈতিক দায়িত্ববোধ এবং সামাজিক সাম্যতা নিশ্চিত করে। তাই বিশ্বাসকে কেবল মানসিক অবস্থাই নয়, বরং সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্বের প্রকাশ হিসেবে দেখা যায়।
বিশ্বাসের সংজ্ঞা
বিশ্বাস হলো আস্থা, ভরসা এবং নির্ভরতার মানসিক অবস্থা, যা মানুষকে অন্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, নীতি বা আদর্শের প্রতি নির্ভরশীল করে তোলে। এটি এমন একটি শক্তি যা মানবকে সংঘাতময় পরিস্থিতিতেও সাহসী ও দৃঢ় হতে সাহায্য করে।
বিশ্বাসের প্রকারভেদ
বিশ্বাস বিভিন্ন দিক থেকে বিভক্ত করা যায়:
- ব্যক্তিগত বিশ্বাস (Self-trust): নিজের সিদ্ধান্ত, ক্ষমতা ও যোগ্যতার প্রতি আস্থা রাখা।
- পারস্পরিক বিশ্বাস (Interpersonal trust): পরিবার, বন্ধু, কর্মক্ষেত্র বা সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে একে অপরের প্রতি আস্থা।
- সামাজিক বিশ্বাস (Social trust): সমাজের নিয়ম-কানুন, ন্যায়বিচার ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা।
- ধর্মীয় বিশ্বাস (Religious faith): সৃষ্টিকর্তার প্রতি ঈমান ও আধ্যাত্মিক অনুগত্য।
- রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় বিশ্বাস (Political trust): শাসক, আইন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা রাখা।
উত্তম বিশ্বাস
উত্তম বিশ্বাস হলো যে বিশ্বাস যুক্তি, নৈতিকতা ও সত্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, এবং যা মানুষের আচরণকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। এটি অন্ধ বা অযৌক্তিক নয়, বরং যুক্তি ও প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। উত্তম বিশ্বাস মানুষকে সততা, ন্যায়পরায়ণতা এবং দায়িত্বশীলতায় উদ্দীপ্ত করে।
বিশ্বাসের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ
অতীত
মানব সভ্যতার শুরু থেকেই বিশ্বাস সমাজ ও সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। পরিবার, গোত্র, উপজাতি এবং রাষ্ট্র—সবই পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ধর্মীয় বিশ্বাস মানুষকে নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ ও ঐক্যের শিক্ষা দিয়েছে।
বর্তমান
বর্তমান যুগে বিশ্বাসের সংকট চোখে পড়ার মতো।
- রাজনীতিতে দুর্নীতি,
- ব্যবসা ও অর্থনীতিতে প্রতারণা,
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্যের অপপ্রচার,
- পারিবারিক ও পারস্পরিক সম্পর্কের ভাঙন,
এসব কারণে মানুষের আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। প্রযুক্তির বিস্তার বিশ্বাসকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
ভবিষ্যৎ
বিশ্বাসের টেকসই উন্নয়নের জন্য স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা অপরিহার্য। না হলে সমাজে অবিশ্বাসের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় কাঠামোও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।
সমস্যা ও সমাধান
সমস্যা
- অসততা ও ভণ্ডামি
- দুর্নীতি ও প্রতারণা
- তথ্যের অপপ্রচার
- ধর্মীয় ভ্রান্ত ব্যাখ্যা
- রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ
- সামাজিক দায়িত্ববোধের অভাব
সমাধান
- সততা ও নৈতিক শিক্ষা: পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তোলা।
- স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায়ে খোলামেলা প্রক্রিয়া চালু করা।
- ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা: মানুষকে স্রষ্টার প্রতি ভরসা এবং দায়িত্ববোধে উদ্দীপ্ত করা।
- প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার: তথ্য যাচাই ও সত্য প্রচারের মাধ্যমে অবিশ্বাস কমানো।
- সামাজিক উদ্যোগ: সমাজে আস্থা পুনর্গঠনে স্বেচ্ছাসেবী ও নেতৃত্বের ভূমিকা।
- পারিবারিক বন্ধন মজবুত করা: পরিবার থেকেই সৎ বিশ্বাসের বীজ বপন করা।
উপসংহার
বিশ্বাস হলো মানব সমাজের মূল ভিত্তি। ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা পর্যন্ত, এটি সবক্ষেত্রেই অপরিহার্য। সত্য, ন্যায়, নৈতিকতা এবং আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে মিলিত হয়ে বিশ্বাস সমাজকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করে। তাই আমাদের অবশ্যই প্রতিদিনের জীবন, শিক্ষাব্যবস্থা, সামাজিক সম্পর্ক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে বিশ্বাসের চর্চা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
🌹 “বিশ্বাস” বিষয়ক প্রবন্ধটি —কোরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস, এবং আধুনিক বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের মতামতসহ:
বিশ্বাস: ইসলামী ও আধুনিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমগ্র বিশ্লেষণ
ভূমিকা
মানুষের জীবনে বিশ্বাস হলো অদৃশ্য কিন্তু শক্তিশালী একটি ভিত্তি। এটি ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক সম্পর্ক, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো সবক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাস ছাড়া মানুষ আত্মবিশ্বাস, নৈতিকতা, সামাজিক সম্প্রীতি ও আধ্যাত্মিক শান্তি অর্জন করতে পারে না। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বাস (ইমান) শুধুমাত্র মানসিক আস্থা নয়, বরং ঈমানী দায়িত্ব ও নৈতিক জীবনযাপনের মূল ভিত্তি।
১. বিশ্বাস কী?
আভিধানিক অর্থ: আস্থা, ভরসা ও নির্ভরতা।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ: বিশ্বাস বা ইমান হলো হৃদয়, জিহ্বা ও কাজের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আস্থা এবং আনুগত্য।
কোরআনে আল্লাহ বলেন:
"যারা বিশ্বাস আনে এবং নেক কাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের বাগান।" (সূরা আল-বাকারা: 82)
হাদীসে নবী (সা.) বলেছেন:
"ইমান হল যে, তুমি আল্লাহ এবং তার রাসুলের প্রতি বিশ্বাস রাখো, এবং হৃদয় ও কাজের মধ্যে তা প্রকাশ করো।"
২. বিশ্বাসের প্রকারভেদ
- ব্যক্তিগত বিশ্বাস (Self-trust): নিজের ক্ষমতা ও সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা।
- পারস্পরিক বিশ্বাস (Interpersonal trust): পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীর প্রতি আস্থা।
- সামাজিক বিশ্বাস (Social trust): সমাজের নিয়ম, ন্যায় ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা।
- ধর্মীয় বিশ্বাস (Religious faith): সৃষ্টিকর্তা ও আধ্যাত্মিক নীতির প্রতি আস্থা।
- রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় বিশ্বাস (Political trust): শাসক, আইন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বাস।
ইসলামে বিশ্বাসের শ্রেণি:
- ইমানে আসল বিশ্বাস: আল্লাহর প্রতি আস্থা
- ইসলামের কার্যাবলীতে বিশ্বাস: শরিয়তের প্রতি আনুগত্য
- আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস: মৃত্যুর পর জগৎ ও প্রতিফলন
৩. উত্তম বিশ্বাস
উত্তম বিশ্বাসের বৈশিষ্ট্য:
- যুক্তি ও ন্যায়বিচারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ
- সত্য, নৈতিকতা ও কল্যাণে উদ্দীপ্ত
- অন্ধ বা অযৌক্তিক নয়
- মানুষের আচরণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে
ইজমা ও কিয়াসে বিশ্বাস:
- ইজমা: মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিত মত অনুযায়ী বিশ্বাস সঠিক ও নৈতিক হওয়া উচিত।
- কিয়াস: যুক্তি ও বাস্তব প্রমাণের ভিত্তিতে বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা।
৪. অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ
অতীত
- প্রাচীন সভ্যতায় বিশ্বাস ছিল পারিবারিক ও সামাজিক সমঝোতার মূল ভিত্তি।
- ইসলাম প্রচারের সময় ইমান সমাজে নৈতিকতা, ঐক্য ও দায়িত্ববোধের শিক্ষা দিয়েছে।
বর্তমান
- আজকের সমাজে বিশ্বাসের সংকট দেখা যায়:
- রাজনৈতিক দুর্নীতি
- সামাজিক প্রতারণা
- তথ্যপ্রচারে বিভ্রান্তি
- প্রযুক্তি ও দ্রুত যোগাযোগ বিশ্বাসের পরীক্ষা আরও কঠিন করেছে।
ভবিষ্যৎ
- বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে হবে নৈতিক শিক্ষা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে।
- না হলে অবিশ্বাস সমাজের স্থিতিশীলতা ও মানুষের মানসিক শান্তি নষ্ট করবে।
৫. সমস্যা ও সমাধান
সমস্যা
- অসততা ও প্রতারণা
- ধর্মীয় ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তি
- সামাজিক দায়িত্ববোধের অভাব
- প্রযুক্তি ও মিডিয়ার ভুল তথ্য
সমাধান
- সততা ও নৈতিক শিক্ষা: পরিবার, স্কুল ও সমাজে বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তোলা।
- স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায়ে খোলামেলা প্রক্রিয়া।
- ধর্মীয় শিক্ষা: ইসলামের নীতি অনুসরণ, কোরআন ও হাদীস অনুযায়ী জীবনযাপন।
- প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা: তথ্য যাচাই এবং সত্য প্রচার নিশ্চিত করা।
- পারিবারিক বন্ধন: পরিবার ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে সততা ও বিশ্বাসের চর্চা।
৬. বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের দৃষ্টিকোণ
- ডেসকার্ট: "I think, therefore I am"—যুক্তি ও চিন্তার ভিত্তিতে নিজের অস্তিত্ব ও বিশ্বাস।
- কান্ত: নৈতিক বিশ্বাস ও দায়িত্ববোধকে মানব জীবনের মূল শক্তি মনে করেন।
- এলবার্ট আইনস্টাইন: বিশ্বাস বিজ্ঞান ও প্রমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে, তবে অন্তর্দৃষ্টি ও নৈতিকতার স্থানও অপরিহার্য।
- মার্কস ও হিউম: বিশ্বাস সামাজিক চর্চা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
বিজ্ঞানী ও দার্শনিকরা দেখিয়েছেন যে বিশ্বাস কেবল আবেগ নয়, বরং যুক্তি, অভিজ্ঞতা এবং নৈতিকতার সমন্বয়।
উপসংহার
বিশ্বাস হলো সমাজ ও ব্যক্তি জীবনের মূল ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি ঈমান ও নৈতিক দায়িত্বের প্রকাশ। আধুনিক বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের মতে, বিশ্বাস যুক্তি ও প্রমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক সম্পর্ক, সমাজ, রাষ্ট্র ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নের জন্য বিশ্বাসের গুরুত্ব অপরিসীম।
সততা, নৈতিক শিক্ষা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আধ্যাত্মিক চর্চা দিয়ে আমরা বিশ্বাসকে টিকিয়ে রাখতে পারি।
ChatgptAI2025
বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৫
পাহাড় ও পর্বতের সৃষ্টি : উপকারিতা বিস্ময়কর ও অপরিহার্য।
পৃথিবীর সমস্ত মহাসাগরের নিচেই পাহাড় ও পর্বতশ্রেণী রয়েছে, তবে প্রশান্ত মহাসাগর (Pacific Ocean)-এর নিচে সবচেয়ে বেশি পর্বতমালা ও আগ্নেয়গিরি রয়েছে।
কারণ:
-
মিড-ওশান রিজ (Mid-Ocean Ridge):
- প্রশান্ত মহাসাগরে পৃথিবীর দীর্ঘতম এবং সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয় পর্বতমালা রয়েছে, যেমন প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার (Pacific Ring of Fire)।
- এখানে ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বেশি হয়।
-
মারিয়ানা ট্রেঞ্চ ও গভীরতম পর্বত:
- মারিয়ানা ট্রেঞ্চ-এ চ্যালেঞ্জার দীপ (Challenger Deep) নামে জায়গা রয়েছে, যা পৃথিবীর গভীরতম বিন্দু (প্রায় ১১ কিমি গভীর)।
- এর চারপাশে অনেক বিশাল পর্বত ও গভীর খাদ রয়েছে।
-
জলতলের নিচে অসংখ্য আগ্নেয়গিরি:
- প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে হাওয়াইয়ান-ইম্পেরর চেইন, টোঙ্গা ট্রেঞ্চ, কুরিল-কামচাটকা ট্রেঞ্চ-এর মতো অনেক আগ্নেয় পর্বতশ্রেণী রয়েছে।
সুতরাং, পাহাড় বা পর্বতের সংখ্যা ও উচ্চতার দিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরই সবার শীর্ষে।
বিশ্বের কোন মহাদেশে সবচেয়ে বেশি পাহাড় ও পর্বত রয়েছে?
এশিয়া (Asia) মহাদেশে সবচেয়ে বেশি পাহাড় ও পর্বতশ্রেণী রয়েছে।
কেন এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি পাহাড়? (রহস্য ও কারণ)
১. হিমালয় ও টেকটোনিক প্লেট সংঘর্ষ
- ভারতীয় প্লেট ও ইউরেশীয় প্লেটের সংঘর্ষের ফলে হিমালয় পর্বতমালা গঠিত হয়েছে।
- এটি এখনও বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ প্লেটগুলোর সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
-
বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত এখানেই
- এভারেস্ট (৮,৮৪৮ মিটার)
- কে-২, কাঞ্চনজঙ্ঘা, লোৎসে, মাকালু ইত্যাদি শৃঙ্গগুলো এশিয়াতেই অবস্থিত।
-
বিভিন্ন বিশাল পর্বতশ্রেণী
- হিমালয়, কারাকোরাম, হিন্দুকুশ, আলতাই, উরাল, তিয়েন শান, কুনলুন, আনাতোলিয়ান পাহাড় ইত্যাদি বিশাল পর্বতশ্রেণী রয়েছে।
-
প্রাকৃতিক রহস্য ও বৈচিত্র্য
- হিমালয়ে এখনও অনেক অনাবিষ্কৃত স্থান ও রহস্যময় অঞ্চল রয়েছে।
- অনেক গবেষক দাবি করেন, হিমালয়ের কিছু এলাকায় পরিচিত প্রাণীর বাইরে কিছু রহস্যময় প্রাণীর অস্তিত্ব থাকতে পারে (যেমন ইয়েতি)।
- শম্ভালা ও গোপন উপত্যকার কিংবদন্তি - কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, হিমালয়ের গভীরে এক রহস্যময় স্থানে উন্নত সভ্যতা থাকতে পারে।
উপসংহার:
এশিয়া মহাদেশে সবচেয়ে বেশি ও সবচেয়ে উঁচু পর্বতশ্রেণী রয়েছে, যার প্রধান কারণ টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ। সেইসঙ্গে, এখানকার অনেক অঞ্চল এখনও রহস্যে ঘেরা, যা অভিযাত্রী ও গবেষকদের জন্য আকর্ষণীয়।
পাহাড় ও পর্বত কিভাবে ও কখন তৈরি হয়?
পাহাড় ও পর্বত তৈরি হয় টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়া, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং ক্ষয়প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এর গঠন লক্ষ-কোটি বছর ধরে হয়ে থাকে।
পাহাড় ও পর্বত গঠনের প্রধান কারণ:
১. টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ:
- পৃথিবীর ভূত্বক (crust) বিভিন্ন প্লেটের তৈরি, যা ধীরে ধীরে স্থানান্তরিত হয়।
- যখন দুটি প্লেট একে অপরের সাথে সংঘর্ষ করে, তখন ভাঁজ সৃষ্টি হয়ে পাহাড় গঠিত হয়।
- উদাহরণ: হিমালয় পর্বত (ভারতীয় প্লেট ইউরেশীয় প্লেটের সাথে ধাক্কা খেয়ে গঠিত)।
-
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত:
- ম্যাগমা ভূগর্ভ থেকে উঠে আসে এবং ঠান্ডা হয়ে কঠিন হলে আগ্নেয় পর্বত তৈরি হয়।
- উদাহরণ: মাউন্ট ফুজি (জাপান), মাউন্ট কিলিমানজারো (আফ্রিকা)।
-
ক্ষয়প্রক্রিয়া ও ভূমিধস:
- নদী, বরফ ও বাতাসের ক্ষয়ের ফলে নতুন পাহাড় বা পাহাড়ের পরিবর্তন হয়।
পাহাড় ও পর্বতে বিদ্যমান মূল্যবান সম্পদ
পাহাড় ও পর্বতের অভ্যন্তরে প্রচুর খনিজ ও মূল্যবান সম্পদ পাওয়া যায়, যেমন:
- স্বর্ণ (Gold) & রূপা (Silver) – হিমালয় ও দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বতমালায় পাওয়া যায়।
- হীরক (Diamond) – আফ্রিকার কিম্বারলাইট পাহাড় থেকে উত্তোলন করা হয়।
- তামা (Copper) & লোহা (Iron) – উরাল, রকি পর্বত ও হিমালয়ে প্রচুর পাওয়া যায়।
- কয়লা ও তেল (Coal & Petroleum) – পর্বতের নিচের স্তরে ব্যাপক পরিমাণে মজুদ থাকে।
- নানা রকম মূল্যবান পাথর – নীলা (Sapphire), পান্না (Emerald), চুনি (Ruby) ইত্যাদি পাহাড় থেকেই পাওয়া যায়।
পাহাড় ও পর্বতের সৃষ্টি: বিজ্ঞান ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ
বিজ্ঞান অনুযায়ী:
- পাহাড় ও পর্বত পৃথিবীর ভূ-গঠনের স্বাভাবিক অংশ এবং এটি পরিবেশ ও আবহাওয়ার ভারসাম্য রক্ষা করে।
- এগুলো জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে, নদীর উৎপত্তিস্থল হিসেবে কাজ করে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ:
- কুরআনে পাহাড়কে "পেরেক" বা "শিকড়" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
- "আর আমি পাহাড়গুলোকে পৃথিবীর জন্য পেরেকস্বরূপ সৃষ্টি করেছি।" (সূরা আন-নাবা: ৭)
খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মে:
- বাইবেলে বলা হয়েছে যে, পাহাড় ঈশ্বরের সৃষ্টির মহৎ অংশ এবং এটি আশীর্বাদের প্রতীক।
- "পর্বতমালা থেকে আসে শক্তি, কারণ ঈশ্বরই তা সৃষ্টি করেছেন।" (সামস ১২১:১-২)
হিন্দু ধর্মে:
- হিমালয়কে পবিত্র মনে করা হয় এবং এটি শিবের বাসস্থান বলে বিবেচিত হয়।
- মহাভারতে উল্লেখ রয়েছে যে, পাহাড় দেবতাদের বসবাসস্থল ও শক্তির উৎস।
পাহাড় ও পর্বতের উপকারিতা
-
জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ:
- বৃষ্টিপাত সৃষ্টি করে এবং মরুভূমিকে রোধ করে।
-
নদী ও জলাধারের উৎস:
- প্রায় সব বড় নদীর উৎস পাহাড় (যেমন: গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, নীলনদ)।
-
প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ:
- ভূমিধস ও ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধে সাহায্য করে।
-
পর্যটন ও অর্থনীতি:
- পাহাড়ি এলাকা পর্যটকদের আকর্ষণ করে এবং অর্থনৈতিক সুবিধা এনে দেয় (যেমন: সুইজারল্যান্ডের আল্পস, নেপালের হিমালয়)।
-
ঔষধি গাছপালা ও খাদ্য:
- পাহাড়ে নানা রকমের ভেষজ উদ্ভিদ পাওয়া যায়, যা ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
উপসংহার:
পাহাড় ও পর্বত শুধু ভূ-প্রাকৃতিক গঠন নয়, এটি পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা, মূল্যবান খনিজ সম্পদের আধার ও ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞান ও ধর্ম উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই পাহাড়ের সৃষ্টি ও উপকারিতা বিস্ময়কর ও অপরিহার্য।
- অক্টোবর 2025 (29)
- সেপ্টেম্বর 2025 (12)
- আগস্ট 2025 (25)
- জুলাই 2025 (16)
- জুন 2025 (29)
- মে 2025 (14)
- এপ্রিল 2025 (10)
- অক্টোবর 2024 (8)
- জুলাই 2024 (1)
- জুন 2024 (8)
- মে 2024 (10)
- এপ্রিল 2024 (1)
- মার্চ 2024 (5)
- ফেব্রুয়ারী 2024 (1)
- জানুয়ারী 2024 (15)
- ডিসেম্বর 2023 (38)
- নভেম্বর 2023 (41)
- অক্টোবর 2023 (68)
- সেপ্টেম্বর 2023 (12)
- আগস্ট 2023 (4)
- জুলাই 2023 (13)
- জুন 2023 (11)
- মে 2023 (14)
- এপ্রিল 2023 (19)
- মার্চ 2023 (4)
- ফেব্রুয়ারী 2023 (22)
- জানুয়ারী 2023 (2)
- ডিসেম্বর 2022 (1)
- অক্টোবর 2022 (1)
- সেপ্টেম্বর 2022 (2)
- আগস্ট 2022 (3)
- জুলাই 2022 (1)
- জুন 2022 (1)
- মে 2022 (3)
- এপ্রিল 2022 (1)
- ফেব্রুয়ারী 2022 (1)
- অক্টোবর 2021 (1)
- সেপ্টেম্বর 2021 (5)
- জুলাই 2021 (1)
- জুন 2021 (4)
- মার্চ 2021 (1)
- সেপ্টেম্বর 2020 (4)
- জুলাই 2020 (1)
- জুন 2020 (10)
- মে 2020 (39)
- এপ্রিল 2020 (14)
- মার্চ 2020 (1)
- ডিসেম্বর 2019 (60)
- অক্টোবর 2019 (40)
- জানুয়ারী 2018 (1)
- নভেম্বর 2015 (7)
- সেপ্টেম্বর 2015 (1)
- নভেম্বর 2014 (7)
- ডিসেম্বর 2011 (2)
- মে 2011 (2)
- এপ্রিল 2011 (5)
-
সাহিত্যের জাগরণ "সাপ্তাহিক সেরা সাত" আসসালামু আলাইকুম। "সাহিত্য হোক নতুনত্বের বারিধারা- সাহিত্য হোক সৎ সভ্যতার কথা বলা।...
-
হামাস-ইসরায়েল সংঘাত, আরেকটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্ব? | Israel-palestine Crisis ফিলিস্তিনি-ইসরাইল নতুন যুদ্ধ || প্রতিশোধ নেও...
-
বিশ্বব্যাপী স্ট্রোক একটি প্রধান মৃত্যুর কারণ, এবং কাজের সম্পর্কিত কারণে এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঘটে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং আন্ত...
ভালবাসি দিবা-নিশি _সূচীপত্র
জুলাই সনদ
দুইটি “জুলাই সনদ / চুক্তি” বা পরিবর্তনশীল দলিলের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা — একটি হলো ঐতিহাসিক ১৭৯৩ সালের (চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত) যা “জুলা...