মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯

৯৪। লজ্জাবতী



লজ্জাবতীর সবুজ গায়ে,
           স্পর্শ করেছ কভু?
লজ্জায় নুয়ে পড়ে ফের,
            প্রতীক্ষায় থাকে তবু।
কেমনে লুকানো আছে,
            গোপন ইতিহাস,
এতো লজ্জা! বুকে রেখেছে,
             জমা করে কত্তোকাল।

লজ্জা কারো অলংকার,
               কারো বর্ম,
কারো অহংকার,
                 কিংবা গর্ব।
কেউবা লজ্জায় নুঁয়ে পড়ে,
                লতার মতো,
আবার সযতনে কেহ,
                 ধারণ করে যতো।

ফুলকুঁড়িতে লজ্জায় যেন,
                    লুকিয়ে থাকে ফুল,
লজ্জাতে কেউ প্রকাশ করেনা,
                     হরেক রকম ভুল।
দেখে নিও লজ্জা কতো,
                    বর্ষাকালের মেঘে,
সবুজ শ্যামল বন বনানী,
                    লজ্জায় থাকে নুঁয়ে।

লজ্জা যদি যায় হারিয়ে,
                 এই ধরনী থেকে,
যায়বা যদি, কমে আবার,
                দেখতে কেমন হবে!
রূপের রানী লজ্জাবতী,
                 আগের মতো নেই!
লজ্জাহীনা মেঘ বালিকা,
                  ঝরছে অঝোরেই।

২৯/০৪/২০১১ ঈসায়ী সাল।
           শুক্রবার
ফখরে বাঙ্গাল নিবাস,
ভাদুঘর, সদর, বি-বাড়ীয়া-৩৪০০। 

৯৩। ভালবাসি দিবা-নিশি বন্ধু আমার


নিরাকপরা ভর দুপুরে,
                  বসে আছি আনমনে,
সুখের বেলা যায় চলে যায়,
                   কতো দ্রুত আপন মনে।

ভাবছি কতো জীবন নিয়ে,
                   পাইনা ভেবে কূল,
অলস দেহে দেখছি তারে,
                   নেইকো কোন ভূল।

হাজির হলো কলম-খাতা,
                   কোমল হাতের স্পর্শে,
মনের কথা ঝরবে কবে,
                   ইতিহাসের গর্ভে।

ভালবাসি, কতো তারে,
                   বলবো কেমন করে,
মনের কথা মনে ওঠে,
                    মনেই ঝরে পড়ে।

নাইবা কোন ভূল আমারি,
                    নেইকো ছিলো তার,
ভালবাসি দিবা-নিশি,
                      ভালবাসে অপার।

সুবাস সেতো ফুলের মতো,
                       অতুল মৃগনাভীর,
সোনারোদের নরম বিকেল,
                     দেখি রঙ্গিন আবীর।

ভাসছে কভু সাঁঝের ভেলা,
                      বেলা অবেলায়,
স্বপ্ন ডিঙ্গি তীরে ভীরে,
                       যখন মনে চায়।

ভালবাসার তারা কতো,
                দেখি তা'রই আকাশে,
প্রেমের সুবাস পাই খুঁজে পাই,
                  মৃদুমন্দ বাতাসে।

বাঁধ মানেনা মনের কথা,
                  কলম দিয়ে ঝরে,
প্রাণের প্রিয়া, যাই বলে সব,
                    ভালোবাসার তরে।

সকাল ১১:৩০ মিনিট,
০২/১১/২০১০ ঈসায়ী সাল।
ফখরে বাঙ্গাল নিবাস,
ভাদুঘর, সদর, বি-বাড়ীয়া-৩৪০০। 

২৪১১০২    ৭:৩০  

           "আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ"

মরুভূমির শুভাশিত বাতাসের শুভেচ্ছা রইলো। আশা করি গতকালের মতো আজ ও ভালো আছো। গত কালের কথা এজন্য বললাম যে, কোন দিনই তোমাকে কেমন আছো প্রশ্নটা করে ভালো আছি উত্তরটা পাইনি ,গতকাল ছাড়া। ১০ ই রমজানে চিঠি পাওয়ার পর চিঠি মোতাবেক তাসনীমের কাজটা করলাম। 

কিভাবে তোমার সাথে কথা বলতে হবে বলত, খুব কর্কশভাবে বুঝি তাইনা। অন্যরা আমাকে বলে আপনার মত অভিনয় করতে আমি পারিনা। তাদের বেলায় আমি বলব তারা আমাকে চেনেনা জানেনা তাই এ ধরনের কথা বলতে পারে। কিন্তু তুমি কি করে বল যে আমি তোমার সাথে অভিনয় করি। তোমার প্রতিটা প্রশ্নের উত্তরেই আমাকে নাবোধক উত্তর দিতে হয়। আর তাতে তোমার চোখ লাল হয়ে পানি জমে যায়। তাই সহজে কোনো কথার উত্তর না দিয়ে আমি চুপ থাকতে চাই। কারণ কি করে তোমাকে এত কষ্ট দিব, যে তুমি এত ভালোবাসো। কিন্তু তুমি তাতে নাকি আরো বেশি কষ্ট পাও। 

ভালবেসে কি পেলে জানতে চেয়েছিলে, ব্যাথা ছাড়া আর কিছুই বোধ হয় পাওনি। ক্ষমা চাইছি তার জন্য। কেন যে তুমি আমাকে ভালোবাসতে গেলে। কি দেখেছিলে শূণ্যের মাঝে, কিছুই দিতে পারিনি। দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিও। নতুবা অভিশাপ দিও আশীর্বাদ হিসাবেই মেনে নিব। ভালোবাসি কিনা জানতে চাও? এটা আমিও জানিনা। তবে তোমার কথা খুব মনে পড়ে , আর কষ্ট পাই।  জানিনা এটাকে ভালবাসা বলে কিনা। 

বিয়ের ব্যাপারে আর প্রশ্ন করোনা। এটা আমার পক্ষে কখনো সম্ভব হবেনা। এর একমাত্র কারণ আব্বার আদেশ, নির্দেশ ও আদর্শ। তোমার কাছে আব্বা মৃত হতে পারে। কিন্তু বিশ্বাস করো আব্বা আগের চেয়ে আরো বেশী আমাদের শাসন করেন , বেশী কাছে থাকেন। মুহূর্তের জন্য ও দূরে যাননা। কাজেই অনুরোধ করবো তুমি কখনো আমাকে আব্বার অবাধ্য হতে বলবেনা। এমন কোনো কাজ করতে কখনো বলবেনা যা আব্বা চাইতেননা। আর আমার পক্ষে ও সম্ভব হবেনা। বিয়ে ভাগ্যে থেকে থাকলে বংশের অন্যান্য মেয়েদের যেভাবে হয় তাদের মতোই হবে। তুমি জানোনা আমাদের বাড়ির কয়েকটি মেয়ের জীবনে ও প্রেম এসেছিলো এবং গভীর ও হয়েছিলো। কিন্তু তাদের সফল হতে দেয়া হয়নি। কাজেই জোড় অনুরোধ থাকবে কখনো আর এ ব্যাপারে প্রশ্ন করবেনা।

বন্ধু আমার ,
কোন শর্ত দিয়ে আমাদের বন্ধুত্ব হয়নি। কাজেই এই মধুর সম্পর্কটা ভেঙে দিওনা। বন্ধুত্বের হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাও। যেখানে বিন্দুমাত্র দুঃখ থাকবেনা। সুখ দুঃখের অংশীদার হতে পারবে। 

লিখতে অনেক সময় লেগেছে, হৃদয় ভেংগেছে। অনেক কষ্ট দিয়েছি, হৃদয় ভেংগেছি। আবার ও ক্ষমা চাইছি। মোবারক হউক তোমার জীবনে এই মাহে রমজান। ভাল থেকো, তোমার পাশের অটোটাকে সালাম দিও। দোয়া রইলো।

৯২। বর না সেজে বিয়ে


আমি বর না সেজে বিয়ে করেছি,
               পেয়েছি কনে সংসার,
শান্তির নীড় পেয়েছি উপহার,
                 নেই কোন দুঃখ আমার।

জীবনের দিগন্ত, উন্মোচিত হলো,
                অপরুপ গুলবাগ,
সুবাসিত সমীরণ,  তারাময় আকাশ,
                 পূর্ণিমায় পূর্ণ রাত।

অসীম স্বপ্ন দৃষ্টি জুড়ে,
                  স্বপ্নের পথে হাঁটি
বাস্তবতার রৌদ্র খর তাপে,
                স্বপ্নীল পৃথিবী খাঁটি।

বন্ধুর পথ, আর দিকপালহীন,
                 জীবনের সব মোহনায়,
পলে পলে সাথে রবে,
                  শংকিত পথ চলায়।

২৬/১০/২০১০ ঈসায়ী সাল।
ফখরে বাঙ্গাল নিবাস,
ভাদুঘর, সদর, বি-বাড়ীয়া-৩৪০০। 

৯১। জীবন সাথী


আমার জীবন সাথী,
              ভালবাসার উৎস,
পরম স্বার্থকতা,
               স্বপ্নীল আশার জন্ম।

জীবন তরনীর সফল নোঙ্গর,
               প্রান্তিক মাইল ফলক,
জীবন থেকে জীবনে,
                সফলতার নিয়ামক।

আমার উৎসাহ, প্রেরণা,
                 স্বার্থক অনির্বাণ,
অপরিসীম স্বপ্নের নীলিমা,
                ডাকে স্বপ্নের বান।

শয়নে স্বপনে, আশা বাস্তবে,
                হৃদয় হতে হৃদয়ে,
প্রেম ও ভালবাসার ফল্গুধারা,
                অমীয় সুধা অন্তরে।


১৭/০৬/২০১০ ঈসায়ী সাল।
অর্ধাঙ্গিনী খালেদা ইসলাম ভূঁইয়া - কে
ফখরে বাঙ্গাল নিবাস,
ভাদুঘর, সদর, বি-বাড়ীয়া-৩৪০০।

৯০। অনুশোচনা

           
আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
২৪/১২/২০১৭ ঈসায়ী সাল।

("বিজয়ের উল্লাস" যৌথ কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।)

পদে পদে, প্রতি পদে, জড়ায়ে পাপে,
মুক্ত না হতে পারি,
আশা নিরাশার দোলাচলে চলি,
দিবা-নিশি এমনি করি।
কখনো শয়তান, নিজের নাফস,
দুনিয়ার মন্দ সব,
হৃদয় গহীনে বাসা বেঁধে চলে,
চালায় যতো তান্ডব।

সহজ সরল পথের সন্ধানে ছুটি
দিনমান কেন বিপথে চলি!
ঘুমের জোয়ারে ক্লান্ত দু'চোখে,
আপনারে লয়ে,ব্যস্ত নিশিতে।

কোথায় মাগিব দু'দন্ড শান্তি,
কেমনে ভূলিব জমানো ক্লান্তি,
কাঁদিব কোথায় পথযে হারায়,
আপনার ভূলে, পথ ভূলে যায়।

ভূল করে করে, নিঃস্ব আজি,
কোথাও কি কিছু আছে বাকি!
চারিদিকে দেখি মরু মরিচীকা,
আশার দোয়ার হারালো কোথা!

ভাঙ্গিতে ভাঙ্গিতে ক্ষীণ মনোবল,
অনুশোচনার অস্থির মরুঝড়।
আশার দীপালী নিভু নিভু কভু,
তবু স্বস্থি, জাগে তাওহীদ, মনে প্রভু!

আশ্রয়হীনের সেরা আশ্রয়,
সর্বোত্তম করুণার আলয়,
নিরাশার মাঝে আশার আলো,
বাঁচিবার তরে পিদিম জ্বালো।

নূতন আশার ঝলকানিতে,
জীবন পথের বাঁকে বাঁকে,
অসীম শান্তি-স্বস্থি মিলে,
তোমার অশেষ রহমতে।

করুণাধারা চায় অবিরাম,
দেশ ও জাতির তরে অফুরান।
পাপ ও তাপের পথ হারাবে,
লক্ষ্য-পথের যোজন দূরে।

রাত ১১ টা,
২৩/১২/২০১৭।
মধুবাগ, বড়মগবাজার,
রমনা , ঢাকা।

৮৯। পরোয়ানা


- আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
   ২২/১২/২০১৭ ঈসায়ী সাল।

ভালবাসা ভরে থাক,
প্রতিটি অন্তর;
ভালবেসে বেঁচে থাকা,
হউক মূল মন্তর।
পথে ঘাটে জোড়া জোড়া,
বসে থাকে নীরবে;
সহাস্যে হেলে দুলে,
কেউ চলে সরবে।

আকাশের তারা সম,
যুগলেরা জ্বলে নিভে,
কত কথা বিনিময়,
চলে মান অভিমানে।
সত্যি হয়ে থাক,
সব সুখ স্বপ্ন,
স্বপ্নের বলাকারা,
হয়ে যাক ধন্য।

থেকো সবে চিরদিন,
পাপ তাপ মুক্ত,
দিন দিন বাড়ে যেন,
পূণ্যের প্রস্থ।
ভালবাসি ভালবাস,
দিবা নিশি সত্য,
স্বর্গ হবে দেখো,
ধূলীর এই মর্ত্য।

ভালবাসার অভিনয়ে,
কেঁড়ে নিবে যতো সব,
জিম্মী করে কভু,
জুলুমের উৎসব।
সঙ্গ দিবে ঠিক,
যবে তার প্রয়োজন,
ফিরে আর পাবেনা,
হবে শেষ আয়োজন।

নেশা করে প্রেম করে,
সুস্থতা বিনাশে,
উপকরন সহজেই,
রবে আশে পাশে।
মিলবে সব তার,
যতো চাওয়া ফন্দী,
মৃত্যুর পরোয়ানা,
কভু পাপে বন্দী।

চায় সৎ সঙ্গ, 
সুখ ভোগ, শান্তি,
প্রেম আর ভালবাসা, 
চায় সব শ্রান্তি।
প্রতারক, লোভী সব, 
একা থেকে মুক্তি,
চাই পাশে,সৎ জন, 
এই হোক চুক্তি।

২১/১২/২০১৭ ঈসায়ী সাল।
গুলশান-০১,
ঢাকা।

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯

৮৮। প্রাণের চেয়ে প্রিয় কুদস


ওরা মার খাচ্ছে, খাক, জ্বলে পোঁড়ে
 ছারখার হয়ে যাক,
পুরো ভিটে মাটি, সাজানো সংসার,
কারো দখলে এমনি থাক।
আমার আসন ঠিক আছে তো!
বিশ্ব তাহার সবি হারাক।
মানব-দানব ধ্বংস চালায়,
কার কী আসে যায়!

তোমার আঙ্গিনায় ফোটে,
রং বেরঙের, নানা জাতের ফুল,
আমার আঙ্গিনা ক্ষত বিক্ষত,
জাজরা বুলেটে, বংশ নির্মূল!
তোমার সুখে ও দুঃখে সবাই
প্রাণাধিক সুখী ব্যাথাতুর,
আমার জীবন যৌবন, সন্তান,
প্রিয়তমা হারায়, নিত্য কূল।

বসত ভিটা, জমি-জমা, স্বপ্ন কাঁড়ে,
 পাষাণ অরি,
সকাল-সাঁঝে, হর হামেশা, ঝাঁপিয়ে
 পড়ে প্রাণ হরি।
যাক চলে যাক সহায় সন্তান 
দুঃখ নাই মোর অন্তরে,
প্রাণের চেয়ে প্রিয় কুদস 
কার দখলে, কোন কারণে?

শান্তি নিয়ে জুয়া খেলা, 
খেলছে কারা দিবালোকে,
দাবা খেলার গুটি নিয়ে, 
হন্যে হয়ে চলছে ছুটে।
শান্তি-চাবি গুটি কয়েক 
বোকা রাজার হাতেই রবে?
বিশ্ব মাঝে ঝাঁকিয়ে তোলা, 
অশান্তির সেই শেষ কবে?

যতো আছে পথের কাঁটা, 
সরায় সবে  শক্ত হাতে,
অত্যাচারীর বুকে মাটি, 
দাফন করি সবাই মিলে।
চিরতরে স্তব্ধ করি, 
ঝগড়া বিবাদ  মারামারি,
কারণে আর অকারণে 
করে যারা হানাহানি।

বিশ্বটাকে এমনি করে তুলে দিবে!
পাগল, ছাগল, পামর করে,
ভয় কি তোমার, ভীত কেন?
শক্তি তোমার কম কি কীসে??
মানবতার ধারক বাহক 
কোটিকোটি জীবন পাবে,
অস্ত্র তোমার ঈমান আমল,
শক্তির  আধার আল্লাহ পাশে।

আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
সকাল ০৭ টা ৩৩ মিনিট।
১৪/১২/২০১৭ ঈসায়ী সাল।
মধুবাগ, বড়মগবাজার,
রমনা, ঢাকা-১০০০।

ভালবাসি দিবা-নিশি _সূচীপত্র

ভালোবাসার শ্বেতপত্র

⭐ ১. ভূমিকাবার্তা (Prefatory Note) “ভালোবাসার শ্বেতপত্র” কবিতাটি ভালোবাসার এক নির্মল, নিরাভরণ ও নিষ্পাপ আত্মসমর্পণের দলিল। এখানে প্রেম কোন...