বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯

অস্তিত্বের ভিত্তিমূলে শিক্ষক

৭৫।  
 

সাধারণ লেখাসব, অসাধারণ হয়ে ওঠে,
আপনাদের আশীর্বাদে।
আমার অস্তিত্বের সব ভিত্তিমূলে,
নিরলস, নির্মোহ, পরিশ্রম জ্বলজ্বলে।

শীতের সকালে, শিশির মাড়িয়ে,
আঁকা-বাঁকা, উচু-নীচু পথ বেয়ে,
কিছুটা উৎকন্ঠা, চিরচেনা ভয়ে,
শেখার আগ্রহ সাথে করে দ্বারে।

দক্ষিনের ঘরে, লম্বা টোলে 
একাকি বসে ধারে,
নিরলস ভাবে, কত সহজে,
বুঝাতেন গণিত শেষে।
শ্রদ্ধেয় নিখিল স্যার!
আরামের ঘর, বিছানা ছাড়িয়া,
বলিতে "আরিফ বসো"!
দিল খোলা সে, আদরে ভরা,
আর কি শুনিব কভু।

বাংলায় ভাল নাম্বার পেতে লাগবে 
ভালো হাতের নোট,
কোথায় পাব, দিশেহারা হয়ে,
ভেবে নাহি পায় কূল।
ক্লাশের ফাঁকে, অনুরোধ মোর,
শোনেন প্রিয় স্যার নজরুল,
কচি হৃদয় মোর নাচিয়া উঠিল,
পেয়ে নোট সব অতুল।

আজো ভাসে মোর নয়ন জুড়িয়া,
সুন্দর লেখাগুলো,
কত কষ্ট, ত্যাগের মহিমায়,
স্নেহাদরে সব সাজালো।
পল্লী সাহিত্য, প্রত্যুপকার, পল্লী জননী,
আরো কতো কবিতা-প্রবন্ধ,
সব প্রশ্নের জবাব সাজালেন,
দেহ-মন মন্ত্রমুগ্ধ।

"নেই ভাবনা, লিখে দিব সব, ক্লাশের অবসরে,
ভাল করে, নিও পড়ে, বানান সমেত,
যখন হাতে পাবে"।
বাংলায় নম্বর, লেটারের ঘর ছুঁই ছুঁই,
কীযে ভাল লাগা!
কেমন করিয়া, জানাব সালাম,
বিনম্র শ্রদ্ধামালা।

ভূগোলে লেটার পেতে হলে সবে,
গনিত, চিত্র ভাল পারা চায়,
শতভাগের বেশি যত্ন করে,
শিখালেন প্রিয় আবু জাহের স্যার।

গ্রামারের মারপ্যাঁচ,  ছোট্ট্র মনে,
ঘুরিয়া ফিরিত সব সময়,
কতবার সাদরে, বুঝিয়ে দিতেন,
বার বার ফিরিত সে অজানা ভয়।

ঢাকা থেকে আগত, গ্রামের ছেলে,
সুপ্রিয় ইংরেজী স্যার।
কতনা সহজ করিয়া বুঝাতেন,
ইংরেজির ভয় কাটিল সবার।

সুপ্রিয় ইংরেজি স্যার, মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ,
চিনিত সবাই, সৈয়দ স্যার, এ নামে,
ভয়ে মরিত, নাজানি কখন,"
কোন্ সন্ধ্যারাতে হাজির হয়ে,
চলবে জনে জনে কৈফিয়ত।

"ধর্মতে ভাল নাম্বার পেতে ,
সুন্দর করে সব লিখিবে,
সব ধরনের প্রশ্ন থাকুক,
আসবে লিখে সবই শেষে"।

সহজ, সরল, বিশাল মনের,
সুপ্রিয় আব্দুল মতিন স্যার,
সলাজ হাসি, আদরে মাখা,
ভূলিতে না পারি কথামালা।

মায়ের আদরে, বোনের ছায়ায়,
পড়েছি কতো, বেলা অবেলায়,
পরমা শ্রদ্ধেয়া বীথি ম্যাডাম,
সকল আপুমণি?
আদরে শাসনে করিয়াছে বড়,
আজো নয়নমণি।

সুপ্রিয় শ্রদ্ধাভাজন হেড স্যার,
মোহাম্মদ ফরিদুর রহমান।
ভিতরে বাহিরে শত বেড়াজালে, নানাবিধ জঞ্জালে,
যুদিষ্ঠীর, বীর, মহাবীর যেমনি রণাঙ্গনে।

সফলতার চেরাগসম জ্বলছে বাতিঘর,
সেই আলোতে আঁধার সরে, আলোর আগমন,
মুঠি মুঠি আলোর রেণু, জীবন হবে পূর্ণ,
অজ্ঞতা আর অহংকার সবি হবে চূর্ণ ।
         

বাঙ্গালীর স্বাধীনতা

৭৪।       
("বিজয়ের উল্লাস" যৌথ কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।)

প্রাণের চাওয়া, বাংলাদেশী নয়, বাঙ্গালীর স্বাধীণতা,
খুঁজেফিরি কোথায় আছে, মোদের হৃদয়- ত্রাতা!
কেড়ে নিয়ে প্রাণ লুটিল বৃটিশ বেনিয়া,
পরাধীনতার মোড়কে পেলাম কেমন স্বাধীনতা!

বঙ্গবঙ্গ নাটক করে পায়নি কোন কূল,
বঙ্গবীরের সিংহ নাদে, হেয় হারালো ভূল।
বঙ্গভঙ্গ রদ হলযে, ফিরল শান্তি নিয়ে,
সুখের আসর ভেঙ্গে দিতে, লাগলো আবার পিছে।

ভাষা দিয়ে ভাঙতে তারা পারেনি মহাভারত,
ভাঙলো শেষে, ধর্ম দিয়ে পাকিস্তান ও ভারত।
সফল হলো চিরশত্রু বৃটিশ গড়া নকশা,
ভাঙলো আশার তরী সবার, সকল স্বপ্ন-খাসা।

পূর্ব পশ্চিম পাকিস্থানে, আবার এলো ভাষা,
ভাষার দোহায়,  দানা বাঁধে, নতুন করে বাঁচা।
পুরনো চালে, নতুন ফাঁদে, পড়লো পুরো জাতি,
মুখের ভাষা, রক্ষা করে, আনলো বিজয় সবি।

ভাষার স্বাধীনতার পরে জাগে বাঁচার স্বাধীণতা,
আনলো করে সবাই মিলে, দেশের স্বাধীনতা।
রয়লো পড়ে দূর নিকটে জাতির স্বাধীনতা,
পথ হারিয়ে পথ ভূলে ফের, হারায় একতা।

বলতে পারো, প্রাণের দেশে নেইকি ধর্ম,ভাষা, বর্ণ!
শাসক শ্রেণী গায়ের জোড়ে, করবে কি সব ছিন্ন -ভিন্ন!
হাজার জনের দেশ গড়িয়ে, গড়বে অনেক দেশ,
প্রাচীন ভারত দেখবে সবে, মারামারি বেশ।

রাখো সবার ঊর্ধে আজি প্রিয় জন্মভূমি,
বাঁচার তরে, শিখবে ভাষা দেশী বিদেশী।
শত্রু যেনো পায়না সুযোগ, ভাঙতে প্রিয় বাংলাদেশ,
জাতি ধর্ম সব ভেদাভেদ ভূলে গড়ি সোনার দেশ।


 আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
 ১৮/১১/২০১৭ ঈসায়ী সাল।
 মধুবাগ, বড়মগবাজার,
রমনা, ঢাকা।

[স্বাধীনতার বিপক্ষে নয়, বরং শাসক শ্রেণীর স্বেচ্ছারিতা, অদূরদর্শিতা এবং গোয়ার্তুমির যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে।]

আবে হায়াত

৭৩।  


দেখছো খোকা, আকাশ পরে,
জ্বলছে রবি কেমন করে।
বিলায় আলো ধরাধামে,
সবার উঠান, ফসল-ভূমে।

চাঁদ জাগে তার নিয়ম মেনে,
লক্ষ্য তারার মেলা করে,
ঘন কালো আঁধার পালায়,
আলোর ধারা বয়ছে ধরায়।

রূপের বাহার দেখতে পাবে,
হরেক ফুলে, ফুল বাগানে,
সুবাস বিলায় উজাড় করে,
প্রাণ মাতিয়ে, নয়ন জুড়ে।

তাকাও সবুজ বৃক্ষদলে,
ফল ও ছায়া, ফুলের মাঝে।
রাখছে কেমন আপন করে,
শ্রান্তি-ক্লান্তি, দুঃখ -সুখে।

তোমরা সবাই রবির মতো,
বিলিয়ে দিবে জ্ঞানের আলো,
চাঁদের মতো আঁধার রাতে,
পথ হারাদের পথ দেখাবে।

বাগান সবুজ বৃক্ষ তরু,
ফুল, ফসলের মতো,
অবাক সবাক সকল প্রাণে,
আবে হায়াত রেখো।


আরিফ ইবনে শামছ্
১৪/১১/২০১৭ ঈসায়ী সাল।
মধুবাগ, বড় মগবাজার,
রমনা, ঢাকা।

বিশ্বাসের হারজিত

৭২।  


ভালবাসা অভিনয়, ভালবাসা ভাল নয়,
ভালবাসা জীবনে ক্ষত হয়ে গেঁথে রয়।
নেই কোন দন্ড, মেপে নিব অন্ত,
ভালবাসে ভালবাসি, তন্ত্র-মন্ত্র।

ভাল লাগে রুপ সুধা, করি পান অফুরান,
স্নিগ্ধতা চাহনীর, খুন করে কাঁড়ে প্রাণ।
ভাষাহারা নির্বাক, নিশ্চুপ চুপ চুপ,
গোলাপী গন্ড,  পাঁপড়ি ছোপ ছোপ।

কাল কেশ, লাগে বেশ, উড়ছে তো উড়ছে,
চাঁদমুখে বাতাসে, দোল খেয়ে খেলছে।
সচেতন আঙ্গুল সযতনে সরিয়ে,
মুগ্ধতা বাড়িয়ে, কাছে টানে সহজে।

শিশিরে স্নাত হওয়া, ফোটা ফুল সদ্য,
সোনালী কিরণে, অপরূপ পদ্ম,
নিষ্পাপ নিশ্চিত, পাপ নেই কিঞ্চিৎ,
ভালবাসে-ভালবাসি, বিশ্বাস- হারজিত।

রচনাকালঃ
আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া।
১২/১১/২০১৭ ঈসায়ী সাল।
১৪/ডি, মধুবাগ,
বড়মগবাজার, রমনা,
ঢাকা।

অব্যক্ত নিঃশ্বাস

৭১।  


শরতের আকাশে ভেসে চলে মেঘেরা,
কোথাকার কোন ডাকে, তারা আজ থামেনা।
চলছে নেচে নেচে, নীচে ঝরে পড়েনা,
বুক ফাঁটা মেঠোপথ, অভিমানে চাহেনা।

তারাদের আলো সব বাধা পায় নামতে,
পরীরা ঘুরে ফিরে, পারে নাক নাচতে।
জীবনের খেঁয়া ঘাটে,  নেই কোন লোকজন,
চঞ্চল মন নিয়ে, ছুটে কেউ প্রাণপন।

অলীরা ঘুরেফিরে, নির্মল বাতাসে,
বসেনা ফুলেতে, অজানা অভিমানে।
পাখিদের ভীঁড়ে খুঁজে, চাতকী প্রিয়কে,
কোকিলের গান সব, ফিরে আসে পাহাড়ে।

পাহাড়ের মৌনতা,  কত বড় অভিমান,
পুকুরের নীরবতায়, প্রাণ করে আনচান।
জীবনের পুরোটাই, থাক সুখ শান্তি,
সফলতা উন্নতি আর যত প্রশান্তি।

ছুটে চলা অবেলায়, বিনীত চাপা শ্বাস,
প্রাণপন ছুটে চলে, আজ যেন নাভিশ্বাস।
পথহারা দেউলিয়া, পায়না আশ্বাস,
কোথা গেলে মুছে যাবে, অব্যক্ত নিঃশ্বাস।

আরিফ ইবনে শামছ্
রাত ২২:১৫ মিনিট,
০২/১১/২০১০ ঈসায়ী সাল।
ফখরে বাঙ্গাল নিবাস,
সদর, বি.বাড়ীয়া।

বুধবার, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯

কবিতা চোর

৭০।  


কবিতা চোরে, নিল কেঁড়ে,
সব কবিতার প্রাণটা,
কপি করে, বাহবা নিতে,
বাদ দিয়ে মোর নামটা!

কেমন হায়া, লজ্জা ছাড়া,
সাধুবেশে চুরি,
সব কবি আর কাব্য প্রেমী,
চল চোর ধরি।

চুরি করা ভুলিয়ে দিয়ে,
শাস্তি কঠিন দিব,
প্রয়োজনে ব্লক করিব,
রিপোর্ট লিখে দিব।

সাজতে কবি, নামীদামী,
দিন দুপুরে,কবিতা চুরি,
ভেঙ্গে দিব হাঁটে হাঁড়ি,
সকল জনে ডাকি।

নামগুলি সব এঁটে দিব,
খোলা তালিকায়,
এক নজরে, দেখে নিয়ে,
বুঝে নেবে সবাই।

আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
২৩/১০/২০১৭ ঈসায়ী সাল।
মধুবাগ, বড়মগবাজার,
রমনা, ঢাকা।

শ্বাশ্বত আহ্বান

৬৯।     


("ঝরা ফুলের গন্ধ" যৌথ কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।)

বেলা বেলা করে কত বেলা যায়,
ডাকিনি প্রভু কখনো তোমায়!
তাই বলে তো বন্ধ রাখনি,
সকল বাঁচার উপায়।

ফজর পড়িনি গভীর ঘুমে,
আরামে অলসে শোয়ে,
সূর্য জাগিল পূর্ব গগনে,
তোমার বন্দনা গেয়ে।

যোহরের আজান সুমধুর সুরে,
আকাশে বাতাসে ভাসে,
কর্নকুহরে ধ্বনি প্রতিধ্বনি সাজে,
হৃদয়ে ভীষণ বাজে।

যৌবন বেলা পার করে রবি
পশ্চিমে যায় হেলে,
আসরের আজান পড়লো ছড়িয়ে,
জামাতে শামিল হতে।

জ্বলিতে জ্বলিতে অস্তাচলে,
রবি বলে জনে জনে।
সময়ের কাজ সময়ে করো,
বেলা ফুড়ানোর আগে।

দিনের আলোর পর্দা সরায়ে,
নীরবে সন্ধ্যা নামে।
মাগরিবের আজান মিনার হতে,
চির শ্বাশ্বত আহ্বানে।

পশু, পাখি, প্রাণী, ফিরছে নীড়ে,
মানুষেরা সব আবাসভূমে,
রক্তিমাভ ঢেউ খেলে যায়,
পশ্চিম আকাশ পরে।

স্তব্ধ নিঝুম ভেঙ্গে আসে
এশার আজান শুনি,
মনের মাঝে কত ঝড় চলে,
নামাজ পড়িতে না পারি!

তোমার স্তুতি করিতে আমার
নেই ক্ষমতা কোন,
দয়া করে যদি পথ দেখাতে,
হিম্মত  পেতাম শত।

তোমার ক্ষমা যাচে সদা,
মোর তনু আর প্রাণ,
তোমার রাজী, রহম, করম,
আমার অহংকার।

আরিফ ইবনে শামছ্
২২.১০.২০১৭ ঈসায়ী সাল।
ভোর ০৪:৩০ মিনিট,
মধুবাগ, বড় মগবাজার, ঢাকা।

ভালবাসি দিবা-নিশি _সূচীপত্র

কারবালার ইতিহাস

কারবালার ইতিহাস ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও হৃদয়বিদারক অধ্যায়। এটি কেবল একটি যুদ্ধ বা হত্যাকাণ্ড নয়; বরং এটি হক ও বাতিলের মাঝে এক সুস্পষ্ট...