লেখক পরিচিতি:
নাম: আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ শামছ্)
শিক্ষাগত যোগ্যতা: অনার্স ও মাস্টার্স ইন ইকোনমিক্স, বি.এড ও এম.এড
ভূমিকা: বর্তমান বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থার দ্রুত রূপান্তরের ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গঠনের ধরনও বদলে যাচ্ছে। তাই বর্তমান প্রজন্মের জন্য সময়োপযোগী শিক্ষা গ্রহণ এবং দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে স্বল্প সময়ে সাফল্য অর্জনের পথ রচনা করা জরুরি।
১. লক্ষ্য নির্ধারণ ও পরিকল্পনা: শিক্ষার্থীদের প্রথম ধাপ হওয়া উচিত জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ। তারা কোন পেশায় যেতে চায়, কী করতে ভালোবাসে—এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। লক্ষ্য ছাড়া শিক্ষা জীবন দিশাহীন হয়ে পড়ে। পরিকল্পিত পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার রোডম্যাপ তৈরি করলে দ্রুত সফলতা অর্জন সম্ভব।
২. পাঠ্যসূচির বাইরের জ্ঞান অর্জন: শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তব জীবনের জ্ঞান অর্জনের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। ইতিহাস, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সাহিত্যসহ নানাবিধ বিষয় সম্পর্কে জানাশোনা একজন শিক্ষার্থীকে বহুমাত্রিক করে তোলে।
৩. দক্ষতা (Skill) অর্জন: বর্তমানে চাকরির বাজারে শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে সফলতা পাওয়া যায় না। কম্পিউটার স্কিল, প্রেজেন্টেশন স্কিল, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা, গণিত-যুক্তির জ্ঞান, যোগাযোগ দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা—এসব স্কিল অনুশীলনের মাধ্যমে আয়ত্ত করতে হবে।
৪. প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা: শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে। ইন্টারনেট, গুগল, ইউটিউব, অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্ম (যেমন Coursera, Udemy, Khan Academy) ব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন সহজ হয়েছে। নিজেকে আপডেট রাখতে প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার জরুরি।
৫. নতুন ধারার ক্যারিয়ার সম্পর্কে ধারণা রাখা: বর্তমানে শুধু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা শিক্ষক নয়—ডেটা সায়েন্টিস্ট, ইউএক্স ডিজাইনার, এআই স্পেশালিস্ট, ডিজিটাল মার্কেটার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি নতুন পেশার চাহিদা বাড়ছে। এসব পেশা সম্পর্কে জানলে আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
৬. ভাষা দক্ষতা উন্নয়ন: ইংরেজির পাশাপাশি অন্য একটি আন্তর্জাতিক ভাষা (যেমন চাইনিজ, স্প্যানিশ, ফরাসি) শেখা বাড়তি সুবিধা দেয়। ভাষা জানলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়।
৭. ইন্টার্নশিপ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন: বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াকালীন সময়েই ইন্টার্নশিপ বা খণ্ডকালীন কাজের অভিজ্ঞতা নিতে হবে। এটি চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দেয়।
৮. আত্মউন্নয়ন ও সময় ব্যবস্থাপনা: প্রতিদিনের একটি নির্দিষ্ট সময় আত্মউন্নয়নের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। ভালো বই পড়া, লেখালেখি, আলোচনা, নতুন কিছু শেখা ইত্যাদি একজন শিক্ষার্থীকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। পাশাপাশি সময় ব্যবস্থাপনা শেখা সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি।
৯. ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং ও পরামর্শ গ্রহণ: বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা স্কুলে ক্যারিয়ার গাইডেন্স ও অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মানুষদের জীবন থেকে শেখা সবচেয়ে কার্যকরী দিকনির্দেশনা দিতে পারে।
উপসংহার:
আধুনিক প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, কঠোর পরিশ্রম, নিরবিচার অধ্যবসায় ও দক্ষতা অর্জনের একনিষ্ঠ প্রয়াস। বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা যদি এই পথ অনুসরণ করে, তাহলে তারা স্বল্প সময়ে নিজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে এবং হয়ে উঠবে আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।
সৌজন্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: চ্যাটজিপিটি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Heartfelt Thanks for your valuable comments.